শেয়ারবাজারে স্থিতিশীলতা ফেরাতে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মধ্যে বহুল আলোচিত মতপার্থক্য নিরসনসহ ৬ নির্দেশনা জারি করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
গত ১৩ ডিসেম্বর বিএসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলি রুবায়াত-উল-ইসলামের কাছে ছয় নির্দেশনাসহ একটি চিঠি পাঠিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। চিঠির অনুলিপি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ণর এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানকেও দেওয়া হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়, অসাধু কোনো সিন্ডিকেট যেন শেয়ারবাজারকে কারসাজির মাধ্যমে প্রভাবিত না করতে পারে, সেজন্য বিএসইসিকে বিশেষ নজরদারী বাড়াতে হবে।
চিঠিতে শেয়ারবাজারে সন্দেহজনক লেনদেনের বিরুদ্ধে নজরদারি ও মনিটরিং জোরদার করতে বিএসইসিকে নির্দেশ দিয়েছে এবং সিন্ডিকেশনের মাধ্যমে শেয়ার দরে যেন কারসাজি করতে না পারে সেই বিষয়েও মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করতে বলেছে।
আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের উপসচিব গোলাম মোস্তফার সই করা চিঠিতে বলা হয়, শেয়ারবাজারের সার্বিক কার্যক্রম তত্ত্বাবধানের জন্য ছয়টি বিষয়ের ওপর আরও গুরুত্বারোপের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো-
অবৈধ বা নিয়ম বহির্ভূতভাবে কোনো কোম্পানি, স্টেকহোল্ডার বা প্রতিষ্ঠান যেন শেয়ারবাজারে প্রবেশ বা বের হতে না পারে সে দিকে নজরদারি করতে হবে।
যে সব কোম্পানি, স্টেকহোল্ডার বা প্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে, তাদের শেয়ারবাজারে শেয়ার লেনদেনের ওপর নজরদারি রাখতে হবে।
সন্দেহজনক লেনদেনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বিশেষ নজরদারির আওতায় আনা এবং প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
অসাধু কোনো সিন্ডিকেট যেন শেয়ারবাজারকে কারসাজির মাধ্যমে প্রভাবিত করতে না পারে সেদিকে বিশেষ নজর রাখতে হবে।
শেয়ারবাজারের সঙ্গে সম্পৃক্ত সব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমন্বয় জোরদার করতে হবে।
সচেতনতা বাড়ানোর জন্য শেয়ারবাজারসংক্রান্ত ফিন্যান্সিয়াল লিটারেসি কার্যক্রম আরও জোরদারএবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে শেয়ারবাজার বিষয়ে ধারণা তুলে ধরতে হবে।
চিঠিতে প্রাসঙ্গিক পক্ষগুলির মধ্যে সমন্বয়ের সমস্যাগুলিকেও সম্বোধন করা হয়েছে কারণ বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বিএসইসির মধ্যে দ্বন্দ্ব এখন শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বহুল আলোচিত বিষয়।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই নির্দেশনা এমন এক সময়ে এসেছে যখন শেয়ারবাজারের মূল্য সূচকগুলি গত দুই সপ্তাহ ধরে নিম্নমুখী রয়েছে। বিএসইসি এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে মতবিরোধের বৃদ্ধির কারণে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে শঙ্কা বাড়িয়ে তুলেছে। এমন অবস্থায়, দুই সংস্থার মধ্যে বিশেষ করে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের মধ্যে শেয়ারবাজারের প্রতি সুনজর বাড়াতে সাহায্য করবে।