পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আলিফ গ্রুপের ২ কোম্পানির আর্থিক হিসাবে অনিয়ম পাওয়া গেছে। কোম্পানিগুলো হলো- আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ ও আলিফ ম্যানুফ্যাকচারিং। এ কোম্পানির আর্থিক হিসাবে বিভিন্ন অনিয়মের মধ্যে শ্রম আইনের ব্যত্যয়, অতিরঞ্জিত মুনাফা, হিসাব মান লঙ্ঘনের মতো অনিয়ম পেয়েছে নিরীক্ষক। সংশ্লিষ্ট থেকে এ তথ্য জানা যায় ।
প্রাপ্ত তথ্য মতে , আলিফ ম্যানুফ্যাকচারিংয়ের কর্তৃপক্ষ ২০২০ সালের ৩০ জনু মজুদ পণ্য হিসেবে ২২ কোটি ৭৬ লাখ টাকার সম্পদ দেখিয়েছে। যা তারা তৃতীয় পক্ষ দিয়ে গণনা করেনি। এছাড়া করোনার কারনে নিরীক্ষক নিজেও পরীক্ষামূলক গণনা করতে পারেননি। যে কারনে ওই পরিমাণ মজুদ পণ্য ছিল কিনা, নিরীক্ষক তা নিশ্চিত না বলে জানিয়েছে। এছাড়া, স্থায়ী সম্পদের উপর অবচয় কম চার্জ করে মুনাফা বেশি বা অতিরঞ্জিত করে দেখিছে। একই সঙ্গে তারা প্রপার্টি প্লান্ট অ্যান্ড ইক্যুপমেন্ট নগদ ভিত্তিতে দেখিয়ে এই অনিয়ম করেছে বলে জানিয়েছেন নিরীক্ষক।
কোম্পানি কর্তৃপক্ষ ওয়ার্কার্স প্রফিট পার্টিসিপেশন ফান্ড (ডব্লিউপিপিএফ) হিসেবে ৭১ লাখ টাকা দেখায়। কিন্তু শ্রম আইন ২০০৬ এর ২৩৪ অনুযায়ি তারা পার্টিসিপেশন ফান্ড ও ওয়েলফেয়ার ফান্ড গঠন করেনি।
এই কোম্পানিটির ২০২০-২১ অর্থবছরের আর্থিক হিসাবেও আপত্তি জানিয়েছেন নিরীক্ষক। তিনি জানিয়েছেন, আলিফ ম্যানুফ্যাকচারিং কর্তৃপক্ষ ২০২১ সালের ৩০ জনু মজুদ পণ্য হিসেবে ২৪ কোটি ৩৫ লাখ টাকার সম্পদ দেখিয়েছে। যা তারা তৃতীয় পক্ষ দিয়ে গণনা করেনি। এছাড়া করোনার কারনে নিরীক্ষক নিজেও পরীক্ষামূলক গণনা করতে পারেননি। যে কারনে ওই পরিমাণ মজুদ পণ্য ছিল কিনা, নিরীক্ষক তা নিশ্চিত না।
আগের বছরের ন্যায় ২০২০-২১ অর্থবছরেও অবচয় কম চার্জ করে মুনাফা বেশি করে দেখিয়েছে আলিফ ম্যানুফ্যাকচারিং। এছাড়া ডব্লিউপিপিএফ হিসেবে ৮১ লাখ টাকা দেখালেও শ্রম আইন ২০০৬ এর ২৩৪ অনুযায়ি তারা পার্টিসিপেশন ফান্ড ও ওয়েলফেয়ার ফান্ড গঠন করেনি।
অপরদিকে, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজের কর্তৃপক্ষ মজুদ পণ্য কারসাজিতে ২০১৯-২০ অর্থবছরে মুনাফা বেশি করে দেখিয়েছে বলে জানিয়েছেন নিরীক্ষক। কোম্পানি কর্তৃপক্ষ আন্তর্জাতিক হিসাব মান (আইএএস)-২ অনুযায়ি খড়বিৎ ঙভ পড়ংঃ এবং হবঃ ৎবধষরুধনষব পদ্ধতিতে মজুদ পণ্য দেখায়নি। তারা যদি হবঃ ৎবধষরুধনষব পদ্ধতিতে মজুদ পণ্য হিসাব করত, তাহলে ৩৩ লাখ টাকার কমে আসত। এতে করে একই পরিমাণ বিক্রিত পণ্যের ব্যয় বেড়ে যেত। ফলে নিট ইনকাম, কর ও শেয়ারহোল্ডারস ইক্যুইটি কমে আসত।
এই কোম্পানি কর্তৃপক্ষ ডব্লিউপিপিএফ ফান্ডের জন্য সঠিকভাবে শ্রম আইন পালন করে না। তারা এই ফান্ডের জন্য পৃথক ব্যাংক হিসাব গঠন করেনি এবং ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে যথাসময়ে শ্রমিকদের মধ্যে ফান্ড হস্তান্তর করে না।
কোম্পানি কর্তৃপক্ষ ডেফার্ড ট্যাক্স গণনায় স্থায়ী সম্পদের পূণ:মূল্যায়নজনিত অংশ অন্তর্ভূক্ত করেছে বলে জানিয়েছে নিরীক্ষক। যা হিসাব মানের লঙ্ঘন। এতে করে করে ডেফার্ড ট্যাক্স দায় বেশি দেখানো হয়েছে। যে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ আইএফআরএস-৯ অনুযায়ি পর্যাপ্ত ডিসক্লোজারস দেয়নি।