পুঁজিবাজারে আসছে ব্লকচেইন প্রযুক্তি। উভয় স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেনের সুরক্ষার জন্য ব্লকচেইন প্রযুক্তির ব্যবহার করা হবে। ওয়ার্ল্ড ইনভেস্টর উইক-২০২১ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেছেন, বাজার ধীরে ধীরে বাড়ছে, প্রয়োজনে সংশোধন হচ্ছে। অথচ কেউ কেউ বলে থাকেন, বর্তমান বাজার অতিমূল্যায়িত। কিন্তু আমি এই কথার সাথে একমত নই। বাজারের লেনদেনের সুরক্ষার জন্য শীঘ্রই ব্লকচেইন পদ্ধতির ব্যবহার করা হবে।
গত সোমবার বিশ্ব বিনিয়োগ সপ্তাহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ব্লকচেইন পদ্ধতির প্রয়োগ করার জন্য পরামর্শক নিয়োগের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ইতিমধ্যেই আমরা পরামর্শক নিয়োগ দিয়েছি।
ব্লকচেইন প্রযুক্তি কী?
ব্লকচেইন (Blockchain) একটি ইংরেজী শব্দ যার বাংলা আভিধানিক অর্থ হয় ‘ব্লকের তৈরি শিকল’। এই পদ্ধতি/প্রযুক্তি মূলত একটি লেনদেনের প্রযুক্তি যেখানে এক ব্যক্তি হতে অন্য ব্যক্তির কাছে অর্থ সরাসরি স্থানান্তর করা যায়। এই ব্লকচেইন প্রযুক্তি সবচাইতে গতিশীল এবং সুরক্ষিত একটি প্রযুক্তি, যেখানে কেউ চাইলে লেনদেনে কোনো গড়মিল তৈরি করতে পারবে না।
ব্লকচেইন প্রযুক্তি নিরাপত্তা কেমন?
এই প্রযুক্তি একেবারেই অপরিবর্তনীয়। এই প্রযুক্তিতের একটি লেনদেন হলে ব্লকচেইনে একটা ব্লক যোগ হয় এবং সেটা আর পরিবর্তন করা যায় না। ব্লকগুলো পাশাপাশি তাদের সৃষ্টির ক্রমানুসারে বসে। প্রত্যেকটা ব্লক তার আগে কোন ব্লক আছে সেটা জানে। এভাবে একটা ব্লকের সঙ্গে আরেকটা কানেক্টেড। কাজেই একটা বা শ-খানেক সার্ভার বা কম্পিউটার একসঙ্গে নষ্ট হয়ে গেলেও ব্লকচেইনের কিছুই হবে না।
ব্লকচেইন কে নিয়ন্ত্রণ করে?
কোনো একক ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ব্লকচেইন প্রযুক্তি নিয়ন্ত্রণ করে না। ব্লকচেইন প্রযুক্তি সম্পূর্ণ ডিসেন্ট্রালাইজড সিস্টেম, এককভাবে কেউ নিয়ন্ত্রণ করে না, এই চেইনের মধ্যে সকলে মিলে এর নিয়ন্ত্রক।
ব্লকচেইন (Blockchain) প্রযুক্তি হচ্ছে তথ্য সংরক্ষণ করার একটি নিরাপদ এবং উন্মুক্ত পদ্ধতি। এ প্রযুক্তিতে তথ্য বিভিন্ন ব্লকে একটির পর একটি চেইন আকারে সংরক্ষণ করা হয়। এটি একটি অপরিবর্তনযোগ্য ডিজিটাল লেনদেন যা শুধুমাত্র অর্থনৈতিক লেনদেনের জন্যই প্রযোজ্য নয়, এ প্রযুক্তি ব্যবহার করে যেকোনো কার্য-পরিচালনা রেকর্ড করা যেতে পারে। ব্লকচেইন (Blockchain) এমন একটি বন্টনযোগ্য ডাটাবেজ যাতে অংশগ্রহণকারী পক্ষগুলোর মধ্যকার সব লেনদেনের নথিবদ্ধ করে রাখা যায়। প্রতিটি লেনদেন আবার সিস্টেমের সংখ্যাগরিষ্ঠতা দ্বারা যাচাই করা হয়। একবার লেজারে কোনো তথ্য প্রবেশ করলে স্থায়ীভাবে তা থেকে যায় এবং কখনো মুছে ফেলা যায় না। ব্লকচেইন প্রতিটি একক লেনদেনের যাচাইযোগ্য রেকর্ড নিয়ে গঠিত হয়। এই অন্তর্নিহিত প্রযুক্তি নির্ভুলভাবে কাজ করে এবং বিভিন্ন কাজে এটির প্রয়োগ করা যেতে পারে।