কয়েক মাস ধরে অস্বাভাবিক দর বৃদ্ধি নিয়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে বীমা খাত। তবে এই সময়ে অন্যান্য খাতের শেয়ার দরও বেড়েছে। যেখানে ব্লু-চিপস কোম্পানিগুলোও রয়েছে। যার উপর ভিত্তি করে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মূল্যসূচক এখন ৬ হাজারের উপরে। যেটা শুধু বীমা কোম্পানির দর বৃদ্ধি দিয়ে সম্ভব ছিল না।
দেখা গেছে, ২ মাস আগে গত ১১ এপ্রিল ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ছিল ৫১৬৪.৭০ পয়েন্ট। যে সূচকটি ১২ জুন দাড়িঁয়েছে ৬০৬৬.৬৪ পয়েন্টে। অর্থাৎ ২ মাসে সূচক বেড়েছে ৯০১.৯৪ পয়েন্ট বা ১৭.৪৬ শতাংশ।
এই মূল্যসূচক বৃদ্ধির সময় সবচেয়ে বেশি সমালোচনার মধ্যে রয়েছে বীমা খাতের অস্বাভাবিক উত্থান। কিন্তু বাজার মূলধনে এই খাতের অংশগ্রহন কম হওয়ায় মূল্যসূচক বৃদ্ধিতে এর প্রভাবও কম। কারন মূল্যসূচকে সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলে বড় মূলধনী কোম্পানিগুলো। যেগুলোর ফ্রি ফ্লোট (উদ্যোক্তা/পরিচালক ব্যতিত ও লক ফ্রি) শেয়ার বেশি।
একইসময়ে ডিএসইর অন্যান্য খাতের শেয়ার দরও বেড়েছে। তবে সেটা বীমা খাতের মতো একচেটিয়া ও অস্বাভাবিক না। সেগুলোর দর বৃদ্ধির পেছনে মৌলভিত্তি আছে। এ তালিকায় ডিএসইর পছন্দের শীর্ষ ৩০ বা ব্লু-চিপস কোম্পানিগুলোও রয়েছে। যেগুলোর দখলে ডিএসইর মোট বাজার মূলধনের ৩৫.৭৮ শতাংশ।
এই বিশাল বাজার মূলধনের ব্লু-চিপস কোম্পানিগুলোর দর বৃদ্ধিতে মূল্যসূচকে যে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়বে, তা বলার কোন অবকাশ নেই। গত ২ মাসে মূলসূচকে উত্থানেও ব্লু-চিপস কোম্পানিগুলোই সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলেছে।
শেয়ারবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, গত ২ মাসে প্রায় সব কোম্পানিরই দর বেড়েছে। যার উপর ভিত্তি করে সূচকে বড় উত্থান হয়েছে। তবে এই সময় কারন ছাড়াই অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে বীমা খাতের শেয়ার। যা স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় সম্ভব না। যে কারনে এই খাতের দর বৃদ্ধি সবার দৃষ্টিগোচরে এসেছে।
দেখা গেছে, গত ২ মাসে ডিএসইএক্স ১৭ শতাংশ বাড়লেও তার চেয়ে বেশি হারে বেড়েছে ৯টি ব্লু-চিপস কোম্পানির দর। এক্ষেত্রে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে ৫৩৯ কোটি টাকা পরিশোধিত মূলধনের লংকাবাংলা ফাইন্যান্স। এ কোম্পানিটির দর বেড়েছে ৪৮.০৩ শতাংশ।
এরপরের অবস্থানে থাকা বিএসআরএম লিমিটেডের দর বেড়েছে ৪৪.১০ শতাংশ। আর ৪০.৩৭ শতাংশ দর বেড়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে জিপিএইচ ইস্পাত।
ব্লু-চিপস কোম্পানিগুলোর মধ্যে গত ২ মাসে ২৯টি কোম্পানির দর বেড়েছে। শুধুমাত্র ইস্টার্ন ব্যাংকের শেয়ার দর কমেছে। তবে এর পেছনে কারন হিসেবে রয়েছে ব্যাংকটির ১৭.৫০ শতাংশ বোনাস শেয়ারের কারনে রেকর্ড ডেট পরবর্তী সমন্বয়। যে কারনে শেয়ারটি এখন ২ মাস আগের তুলনায় ৭.৭১ শতাংশ কমে অবস্থান করছে।