দেশের পুঁজিবাজারে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে তালিকাভুক্ত খুলনা পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (কেপিসিএল) এক সময়ে রমরমা অবস্থায় ছিল। এখন বেশ নাজুক। সরকারের সঙ্গে দু’টি প্ল্যান্টের বিদ্যুৎ বিক্রির চুক্তির (পিপিএ) মেয়াদ শেষ হচ্ছে চলতি বছরের মে মাসে। এই দুটি প্ল্যান্টের চুক্তি নবায়নের বিষয়ে এখন পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া নেই।
এমন অবস্থায় কোম্পানিটির বিনিয়োগকারীরা রয়েছে বড় আতেঙ্কে। কোম্পানিটির শেয়ার প্রতিদিনই ক্রেতা সংকটে থাকছে। এমন অবস্থায়, বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার উদ্দেশ্যে খুলনা পাওয়ারসহ জ্বালানি খাতের অন্যান্য কোম্পানির পিপিএ নবায়নের জন্য সরকারকে অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
গত ১৫ এপ্রিল এ সংক্রান্ত একটি চিঠি বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব হাবিবুর রহমানের কাছে পাঠিয়েছে বিএসইসি।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয় এ বিষয়টি নিয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি বলে জানা গেছে।
বিএসইসি’র চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে মহাপরিকল্পনার অংশ হিসেবে বিভিন্ন ধরনের পাওয়ার কোম্পানিসমূহ পুঁজিবাজার থেকে বিভিন্ন সময় মূলধন সংগ্রহের মাধ্যমে তাদের ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। এ সব কোম্পানির বাংলাদেশের প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীসহ সাধারণ বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ রয়েছে। এর মধ্যে খুলনা পাওয়ার কোম্পানির মালিকানাধীন দু’টি কোম্পানি খুলনা পাওয়ার কোম্পানি ইউনিট-২ ও খানজাহান আলী পাওয়ার কোম্পানির সঙ্গে সরকার বা বিউবোর পিপিএ বাড়ানোর মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে। যার মেয়াদ পর্যায়ক্রমে চলতি বছরের ৩১ মে এবং ২৮ মে তারিখে শেষ হবে।
এ পরিস্থিতিতে খুলনা পাওয়ার কোম্পানিতে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের অর্থ ডিভিডেন্ড থেকে এখন পর্যন্ত সম্পূর্ণ ফেরত আসেনি। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় এ কোম্পানির ভবিষ্যৎ সম্পর্কে কমিশন উদ্বিগ্ন। তাই কেপিসিএলসহ অন্যান্য তালিকাভুক্ত কোম্পানির পিপিএ চুক্তি বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে নবায়নের সুযোগ রয়েছে কি না, তা জানানোর জন্য অনুরোধ করেছে কমিশন।
বিএসইসি’র নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম এ বিষয়ে গণমাধ্যমকে বলেন, ‘পুঁজিবাজারের জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর পিপিএ নবায়নের বিষয়ে বিএসইসি সরকারের উচ্চ পর্যায়ে যোগাযোগ করেছে। কোম্পানিগুলোর পিপিএ নবায়ন করা সম্ভব হলে বিনিয়োগকারীরা ক্ষতির মুখ থেকে রক্ষা পাবে। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার্থে কমিশন সব সময় কাজ করে যাচ্ছে।’
এদিকে, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিউবো) সদস্য (কোম্পানি অ্যাফেয়ার্স) মো. মাহবুবুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘বর্তমানে গ্রীষ্মকাল, রমজান ও সেচ কাজের কারণে বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে। ওই চাহিদার আলোকে নতুন পাওয়ার প্ল্যান্ট আসা ও পুরনোগুলো চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়া বা রিটায়ার্ডমেন্ট যাওয়া এসব কিছুই সার্বিক ভাবে সরকারের একটি সিদ্ধান্ত। যেসব কোম্পানির পিপিএ’র মেয়াদ শেষ হচ্ছে, সরকার সে বিষয়ে অবগত। এ বিষয়ে সরকারের পরিকল্পনা রয়েছে। তবে পিপিএ নবায়নের বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি।’