বাংলাদেশের শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীরা মূলত অধৈর্য্যশীল। তারা দ্রুত ক্যাপিটাল গেইন করতে চায়। যে কারনে শেয়ার নিয়ে গেম্বলিং হয় বেশি। আর তাতে ঝুঁকে পড়েন বিনিয়োগকারীরা। কিন্তু গেম্বলিং শেয়ার থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় বুঝতে না পারার কারনে লোকসানের কবলে পড়েন তারা। যে কারনে গেম্বলিং আইটেম থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময়টা বুঝতে পারাটা জরুরী।
যেকোন শেয়ার নিয়ে গেম্বলিং করার জন্য গেম্বলাররা প্রথমে চুপেচাপে কিনে নেন। পরে ধীরে ধীরে বাজারে ওই শেয়ারের দর নিয়ে গুজব ছড়ান। কত পর্যন্ত যাবে, তা ছড়ানো হয়। এই সময় গেম্বলাররা কেনা কমিয়ে দিলেও সাধারনরা বিনিয়োগে নামে।
এরপরে শুরু হয় আসল খেলা। গেম্বলাররা কোম্পানির সঙ্গে যোগসাজোশ করে মূল্য সংবেদনশীল তথ্য (পিএসই) প্রকাশ করেন। এতে কোম্পানির বিভিন্ন ধরনের ইতিবাচক খবর প্রকাশ করা হয়। এর মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদেরকে আরও আকৃষ্ট করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু ওই ইতিবাচক খবর আসলে ইতিবাচক না, ওগুলো সাধারন বিনিয়োগকারীদের জন্য তৈরী ফাদঁ।
ঠিক এই সময় গেম্বলাররা বেরিয়ে যেতে শুরু করেন। তারা পিএসআই প্রকাশের মাধ্যমে সাধারন বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগে আনতে থাকে এবং নিজেরা বের হয়ে যায়।
যা গত বছরের শেষ দিকে বীমা কোম্পানিগুলোর শেয়ারেও দেখা গেছে। ওই সময় শেয়ার দর আকাশচুম্বি করার পরে বিভিন্নভাবে বীমা খাত নিয়ে ইতিবাচক খবর আসতে থাকে। এজেন্টদের কমিশন, পরিশোধিত মূলধন, এই খাত ভালো করবে, মুনাফা বৃদ্ধি ইত্যাদি ইতিবাচক খবর প্রকাশ করা হয়। এরসঙ্গে রাঘব বোয়াল অনেকেই জড়িত ছিল।
কিন্তু ওই ধাক্কায় গেম্বলাররা সুবিধা করতে পারেননি। ইতিবাচক খবর আশার সঙ্গে সঙ্গে সাধারন বিনিয়োগকারীরাও বেরিয়ে যেতে শুরু করেন। ওই ক্ষেত্রে সাধারন বিনিয়োগকারীরা বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দেয়। এতে করে আটকে যায় গেম্বলাররা।
যে কারনে নিজেদের বিনিয়োগ তুলে নেওয়ার জন্য আবারও বীমা কোম্পানি নিয়ে কারসাজি শুরু হয়েছে। কয়েকদিন যাবৎ এই খাতের শেয়ারের দর বাড়ছে। একইসঙ্গে বীমা কোম্পানি নিয়ে ছড়ানো হচ্ছে বিভিন্ন ইতিবাচক খবর।
কিন্তু এ যাত্রায় সাধারন বিনিয়োগকারীরা আবারও বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দেবে, নাকি গেম্বলারদের পাতানো খেলায় সর্বোস্ব হারাবে- তা দেখার বিষয়।