সূচকের ইতিবাচক ধারায় মার্চ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ পার করল দেশের পুঁজিবাজার। গত সপ্তাহে (৭-১১ মার্চ) দুই বাজারে মোট পাঁচ কার্যদিবস লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে তিনদিন সূচক বেড়েছে, আর দুদিন সূচক কমেছে।
আলোচ্য সপ্তাহে লেনদেন, সূচক ও বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে। তাতে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বিনিয়োগকারীদের মূলধন অর্থাৎ পুঁজি বেড়েছে সাড়ে ৯ হাজার কোটি টাকার বেশি। এই নিয়ে টানা তিন সপ্তাহ পুঁজিবাজারে মূলধন বেড়েছে। তবে তার আগে টানা পাঁচ সপ্তাহ মূলধন কমেছিল।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বহুজাতিক কোম্পানিগুলো নগদ লভ্যাংশের পরিবর্তে বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ দেবে। এই বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ দেওয়াকে কেন্দ্র করে বহুজাতিক কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে।
অপরদিকে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের কোম্পানিগুলো ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত বছরের জন্য লভ্যাংশ ঘোষণা করবে। এই বছর আগের বছরের চেয়ে আরও ভালো লভ্যাংশ দেবে। এই দুটি ইস্যুতে শেয়ারের দাম বেড়েছে। আর শেয়ারের দাম বাড়ায় বিনিয়োগকারীদের মূলধনও বেড়েছে।
ডিএসইর তথ্য মতে, তিন কার্যদিবসে উত্থান ও দুই কার্যদিবসে সূচক পতনের সপ্তাহে ৩৭২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ১১৩টির, কমেছে ১৬৬টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৮৯টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের। আগের সপ্তাহে বেড়েছিল ১৯৯টির, কমেছিল ১০০টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ৬৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম।
গত সপ্তাহে ডিএসইর প্রধান সূচক আগের সপ্তাহের চেয়ে ৫৩ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৫৬৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএস-৩০ সূচক ৪১ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ১৫৪ পয়েন্ট এবং ডিএসইএস সূচক ২৭ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ২৬৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
গত সপ্তাহে বিনিয়োগকারীরা ৪ হাজার ৩৩০ কোটি ৮৯ লাখ ৮ হাজার ৪০০ টাকার শেয়ার কেনাবেচা করেছেন। এর আগের সপ্তাহে তারা ৩ হাজার ৫৯৫ কোটি ৯৭ লাখ ৭৯ হাজার ২৪৬ টাকার শেয়ার কেনাবেচা করেছেন। তাতে ডিএসইতে বাজার মূলধন ৯ হাজার ৭৫৮ কোটি ৬৪ লাখ ৪৬ হাজার ১১০ টাকা বা ২ দশমিক ৬ শতাংশ বেড়ে ৪ লাখ ৮২ হাজার ৮৫৪ কোটি ৩০ লাখ ৮৩ হাজার ৬৪৭ টাকায় দাঁড়িয়েছে।
গত সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেন করা কোম্পানিগুলোর মধ্যে দাম বাড়ার শীর্ষে ছিল- বার্জার পেইন্টস, রহিমা ফুড করপোরেশন, শাহজিবাজার পাওয়ার, লাফার্জ হোলসিম, সামিট পাওয়ার, আনলিমা ইয়ান, সালভো কেমিক্যাল, এসএস স্টিল লিমিটেড, বাংলাদেশ ফাইন্যান্স ইনভেস্টমেন্টস করপোরশেন এবং বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড।
লেনদেনের শীর্ষে ছিল বেক্সিমকো, রবি আজিয়াটা, লাফার্জ হোলসিম, সামিট পাওয়ার, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ, লঙ্কা-বাংলা ফাইন্যান্স, বেক্সিমকো ফার্মা, জিবিবি পাওয়ার, লুব-রেফ বিডি এবং অরিয়ন ফার্মাসিটিউক্যালস লিমিটেড।
এদিকে, দেশের আরেক পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে ২৫৪ কোটি ৬২ লাখ ৬৫ হাজার ৭৩৫ টাকা। এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ২০৬ কোটি ২২ লাখ ৩৩ হাজার ৭৪৫ টাকা।
বাজারটিতে লেনদেন হওয়া ২৯৯টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১০২টির, কমেছে ১২৬টির ও অপরিবর্তিত রয়েছে ৭১টির। এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছিল ১৬৮টির, কমেছিল ৬২টির ও অপরিবর্তিত ছিল ৭৪ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম। সপ্তাহ শেষে এ বাজারের প্রধান সূচক ১৮৮ পয়েন্ট বেড়ে ১৬ হাজার ১৬৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
আরও পড়ুন…
ডিসেম্বর ক্লোজিং ১১২ কোম্পানির লভ্যাংশ ঘোষণার অপেক্ষায় বিনিয়োগকারীরা
বড় অঙ্কের বোনাস ঘোষণার পরও দাম ধরে রাখতে পেরেছে
চার কোম্পানি নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা ১৬৪ কোটি টাকা
মুনাফায় বড় ঊর্ধ্বগতি থাকলেও লভ্যাংশে প্রভাব নেই
বেশি বোনাসে ব্যাপক লোকসান যেসব কোম্পানিতে
জেমিনি সি ফুডে বিনিয়োগ করে কপালে হাত
বেশি বোনাসের করুণ ফল