1. [email protected] : শেয়ার সংবাদ প্রতিবেদক : শেয়ার সংবাদ প্রতিবেদক
  2. [email protected] : শেয়ারসংবাদ.কম : শেয়ারসংবাদ.কম
  3. [email protected] : Zahir Islam : Zahir Islam
  4. [email protected] : muzahid : muzahid
  5. [email protected] : nayan : nayan
  6. [email protected] : khadija : khadija khadija
বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:৪৩ অপরাহ্ন

বেশি দামে শেয়ার বেচে উধাও মালিকরা

  • আপডেট সময় : বুধবার, ১০ মার্চ, ২০২১

২০১৩ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার আগের তিন বছর ক্রমাগত বেড়েছে আয়। তালিকাভুক্তির বছরে ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত অর্থবছরের জন্য ১০০ শতাংশ বোনাস শেয়ার দেয়ার পর দাম অভিহিত মূল্যের সাড়ে সাত গুণ হয়ে যায়। পরে ক্রমাগত লোকসান দিতে দিতে একপর্যায়ে দাম কমে ১ টাকা ৬০ পয়সায় নামে।

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির বছরে ১০০ শতাংশ অর্থাৎ একটি শেয়ারের বিপরীতে একটি শেয়ার বোনাস ঘোষণা করে হুলুস্থুল ফেলে দেয়া ফ্যামিলি টেক্সটাইল ডুবে গেলেও ব্যাপক মুনাফা করেছে মালিকপক্ষ।

উদ্যোক্তা পরিচালকরা ঘোষণা না দিয়ে বেআইনিভাবে তাদের হাতে থাকা প্রায় সব শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছেন। আর ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের শেয়ারের দাম এখন পড়তে পড়তে তলানিতে এসে ঠেকেছে।

গত বছর শেয়ারের দাম একপর্যায়ে কমে এক টাকা ৬০ পয়সায় নেমে আসে। সম্প্রতি পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠনের খবরে টানা কয়েক দিন দাম বেড়েছে। তাও তা তিন টাকার আশপাশে বিক্রি হচ্ছে।

অর্থাৎ মালিকপক্ষ যে টাকায় শেয়ার বিক্রি করেছে, এখন সব শেয়ার কিনতে পারবে তার ভগ্নাংশ দিয়ে।

চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চলের (ইপিজেড) একটি প্রতিষ্ঠান ফ্যামিলিটেক্স লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটি ২০০৬ সালে বাণিজ্যিক উৎপাদনে আসে।

২০১৩ সালে তালিকাভুক্তির পর ২০১২ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত অর্থবছরের আর্থিক হিসাব পর্যালোচনা করে কোনো লভ্যাংশ দেয়নি। তবে ২০১৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত অর্থবছরের জন্য ১০০ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণা করে কোম্পানির উদ্যোক্তা-পরিচালকরা।

ওই বছর কোম্পানির শেয়ারপ্রতি আয় দেখানো হয় ৭ টাকা ২৬ পয়সা আর শেয়ারপ্রতি সম্পদ মূল্য হয় ২১ টাকা ৭২ পয়সা। এই লভ্যাংশ ঘোষণার পর দিন ১ এপ্রিল কোম্পানিটির শেয়ার দর দাঁড়ায় ৬২ টাকা, যদিও একপর্যায়ে দাম ৭৪ টাকা ৮০ পয়সায় দাঁড়িয়েছিল।

বিপুল পরিমাণ বোনাস শেয়ার দেয়ার পর থেকেই ফ্যামিলিটেক্সের আয় কমতে থাকে। ২০১৫ থেকে ২০১৬ সালের জুন পর্যন্ত সমাপ্ত অর্থবছরে তারা সব শেষ মুনাফা করেছিল। তখন শেয়ারপ্রতি আয় হয় ৮২ পয়সা। এর পরের চার বছর ধরে লোকসান দিচ্ছে তারা।

২০১৭ সালে শেয়ারপ্রতি লোকসান হয় সাড়ে ৪ পয়সার মতো। পরের বছর লোকসান হয় ৭ পয়সা, ২০১৯ সালে লোকসান হয় ৮ পয়সা। আর ২০২০ সালে লোকসান হয় ১৫ পয়সা।

চলতি অর্থছরের প্রথম ছয় মাসে লোকসান হয়েছে ১৩ পয়সা। মঙ্গলবার সবশেষ লেনদেনে ফ্যামিলিটেক্সের শেয়ারের দাম ছিল ২ টাকা ৯০ পয়সা।

২০১৩ সালে ১০০ শতাংশ বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ হিসেবে দেয়ার পরের বছর তারা দেয় আরও ১০ শতাংশ বোনাস। এর পরের তিন বছর দেয় ৫ শতাংশ করে। কিন্তু গত দুই বছর কোনো লভ্যাংশই দেয়া হয়নি।

অথচ পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার আগে কোম্পানির আয় ক্রমেই বাড়ছিল। তালিকাভুক্তির আগে তিন বছরের আর্থিক প্রতিবেদন জমা দিতে হয় বিএসইসিতে।

সেখানে দেখা গিয়েছিল ২০১১ ও ২০১২ সালে কোম্পানিটির মুনাফা বেড়েছিল চার গুণের বেশি। আর তালিকাভুক্ত হওয়ার বছরে মুনাফা বাড়ে আরও ৭৬ শতাংশ।

মাত্রাতিরিক্ত বোনাস শেয়ার দেয়ার পর শেয়ার কিনে বিনিয়োগকারীরা ঠকেছে মুন্না এগ্রো (আগে নাম ছিল মুন্নু স্টাফলার), স্টাইলক্রাফট, জেমিনি সি ফুড, ডাচবাংলা ব্যাংক, ডেল্টা লাইফের শেয়ার কিনে।

বহুজাতিক কোম্পানি ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো ও বার্জার পেইন্টসের শেয়ারে লোকসান না হলেও দুই বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে বিনিয়োগকারীদের।

আর ওষুধ খাতের ফার্মা এইড ২০১০ সালে একটি শেয়ারের বিপরীতে পাঁচটি বোনাস শেয়ার দেয়ার পর বিনিয়োগকারীরা মুনাফা পেয়েছে।

বেআইনিভাবে শেয়ার বেচলেও সাজা হয়নি

৩৫৪ কোটি ১০ লাখ টাকা পরিশোধিত মূলধনের কোম্পানিটির ৪.০২ শতাংশ শেয়ারের মালিক এর উদ্যোক্তা পরিচালকরা। যদিও আইন অনুযায়ী ৩০ শতাংশ শেয়ার থাকতে হবে তাদের হাতে।

প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে ১৮ দশমিক ৪১ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে ৭৭ দশমিক ৫৭ শতাংশ শেয়ার আছে।

সিকিউরিটিজ আইন অনুযায়ী কোম্পানির উদ্যোক্তা পরিচালকদের শেয়ার বিক্রি করতে হলে পুঁজিবাজারে ঘোষণা দিতে হয়। কিন্তু এই প্রতিষ্ঠানের উদ্যোক্তা-পরিচালকরা তাও করেননি।

বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি গত ডিসেম্বরের শেষে বিষয়টি নিয়ে তদন্তে একটি কমিটি গঠন করে দেয়।

এখন পর্যন্ত যতটুকু জানা গেছে তাতে দেখা যায়, কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মেরাজ-ই-মোস্তফা ২০১৮ সালের অক্টোবরে তার নিজ নামের ১ কোটি ৬৯ লাখ ২৬ হাজার শেয়ার বিনা ঘোষণায় বিক্রি করেছেন, যা ওই দিনে ডিএসইতে কোম্পানিটির বিক্রি হওয়া শেয়ারের প্রায় ৯৩ শতাংশ।

প্রায় একই সময়ে প্রতিষ্ঠানটির আরেক পরিচালক রোকসানা মোরশেদ ৯২ লাখ ৪০ হাজার শেয়ার সাড়ে ৭ কোটি টাকায় বিক্রি করেছেন।

তিনি ২০১৭ সালের বিভিন্ন সময়ে চার দফায় ৫ কোটি ১৮ লাখ শেয়ার প্রায় ৫৬ কোটি টাকায় বিক্রি করেন। তার সাবেক স্বামী ও ফ্যামিলিটেক্সের উদ্যোক্তা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মোরশেদও একই সময়ে সোয়া ২৩ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করে দেশের বাইরে চলে যান।

উদ্যোক্তা পরিচালকদের শেয়ার বিক্রি তদন্তে কমিটি

গত ২৮ ডিসেম্বর ফ্যামিলিটেক্সের পরিচালকদের বিএসইসিকে না জানিয়ে শেয়ার বিক্রির তথ্য অনুসন্ধানে তদন্ত কমিটি গঠন করে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

কমিটির সদস্যরা ছিলেন উপপরিচালক রাকিবুর রহমান ও সহকারী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম। কমিটিকে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছিল।

এ বিষয়ে বিএসইসি নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র রেজাউল করিম বলেন, ‘তদন্ত ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। কোম্পানিটির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ইনফোর্সমেন্ট বিভাগে পাঠানো হচ্ছে।’

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ