এক মাসের কম সময়ে আবার হাজার কোটি টাকা লেনদেন দেখল পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারীরা। চলতি সপ্তাহের শুরু থেকে সোমবার পর্যন্ত পুঁজিবাজারের টানা সূচক বেড়েছে। তবে লেনদেনে স্থিতাবস্থা ছিল সাতশ থেকে আটশ কোটি টাকায়।
মঙ্গলবার সেই সে ধারা ভেঙে হাজার কোটি টাকা লেনদেন সামনে আসলো বিনিয়োগকারীদের।
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, সপ্তাহের ব্যবধানে অনেক কোম্পানির শেয়ার দর তলানিতে নেমে এসেছিল। একই সঙ্গে লেনদেনের শীর্ষে থাকা অনেক কোম্পানির শেয়ার দর কমে আসায় এখন আবার নতুন করে সেগুলোতে বিনিয়োগ হচ্ছে। ফলে বাড়ছে লেনদেন।
চলতি সপ্তাহের শুরুতে লেনদেনে গতি হারিয়ে ফেলে বেক্সিমকো লিমিটেড ও রবি আজিয়াটা। মঙ্গলবার আবারও এ দুই কোম্পানিগুলো স্বপদে ফিরে আসে।
একই সঙ্গে দামি শেয়ারের দাপট মঙ্গলবারও অব্যাহত ছিল। সদ্য লেনদেন শুরু হওয়া লুব রেফ (বাংলাদেশ) লিমিটেডের শেয়ার দরও আগের নতুন কোম্পানিগুলোর মতো দিনের সর্বোচ্চ বেড়েছে।
লেনদেন
মঙ্গলবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৪৩ কোটি টাকা। এর আগে ১৫ ফেব্রুয়ারি লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ৮২ কোটি টাকা।
লেনদেনে হঠাৎ এমন গতি নতুন করে আস্থায় ফিরেছে বিনিয়োগকারীরা। সোমবার বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) পুঁজিবাজারের ইস্যু ব্যবস্থাপকদের নিয়ে আয়োজিত এক সেমিনারে কমিশনার শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ কড়া ভাষা জেড ক্যাটাগরিতে থাকা কোম্পানিগুলোকে সতর্ক করেন। বলেন, জেড ক্যাটাগরিতে পড়ে থেকে ফায়দা লোটার দিন নেই।
যে কোম্পানি পুঁজিবাজার তালিকাভুক্ত হবে সে কোম্পানিকে অবশ্যই সকল আইন কানুন মেনে পুঁজিবাজারে থাকতে হবে।
সেমিনারে মার্চেন্ট ব্যাংকের সংগঠন বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট ছাইদুর রহমানও পুঁজিবাজারে কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগসহ ইস্যু ব্যবস্থাপকদের আরও দায়িত্বশীল হয়ে কার্যক্রম চালানোর পরমার্শ দেন।
এছাড়া ডিসেম্বর অর্থ বছর শেষ হওয়া কোম্পানিগুলো এখন লভ্যাংশ ঘোষণা করবে। ফলে পুঁজিবাজারের প্রতি এ সময়টিতে বেশি আগ্রহ থাকে বিনিয়োগাকরীদের।
বাজারে গুজবও আছে এ বছর ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বিমা কোম্পানিগুলো করোনা সময় ব্যয় কম হওয়ায় তাদের আয় বেশি হবে। তাই লভ্যাংশও বেশি পাওয়া যাবে।
ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক লভ্যাংশ প্রদানের ক্ষেত্রে সীমা বেধে দিলেও বর্তমানে ব্যাংকের শেয়ারের যে দর আছে তাতে সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ নগদ আর ১৫ শতাংশ বোনাসেও ভালো রিটার্ন পাবে বিনিয়োগকারীরা এমন মন্তব্যও করেছেন বাজার বিশ্লেষকরা।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষক আবু আহমেদ বলেন, লেনদেন হঠাৎ বাড়ার পেছনে কারণ হচ্ছে এখন আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো লভ্যাংশ দেবে। বিমা কোম্পানিগুলোও লভ্যাংশ দেবার দ্বার প্রান্তে। এর কারণেই মূলত বিনিয়োগকারীরা এখন নতুন বিনিয়োগে আগ্রহী হয়েছেন।
তিনি বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে লেনদেন কম হওয়ায় অনেক কোম্পানির শেয়ার দর কমেছিল। এখন সেগুলোতেও নতুন বিনিয়োগ উপযোগী হয়েছে।