পুঁজিবাজারে কোনো কোম্পানিকেই জেড ক্যাটাগরিতে বসে থাকতে দেয়া হবে না বলে সতর্ক করে দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিএসইসি ভবনে ‘আইপিও আবেদনে ইস্যু ম্যানেজারদের ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনারে এ সতর্কবার্তা দেন কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ।
সেমিনারে ইস্যু ব্যবস্থাপকদেরকে আইনের মধ্যে থেকে শুধু নতুন কোম্পানি নিয়ে আসা নয়, কোম্পানির প্রতি বিনিয়োগকারীদের যেন আস্থা সৃষ্টি হয় সে ভূমিকাও রাখার আহ্বান জানান তিনি।
সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএসইসি কমিশনার অধ্যাপক শেখ শামসুদ্দিন বলেন, ‘ওভার দ্য কাউন্টার মার্কেটের (ওটিসি) কোম্পানিগুলোকে পুনর্গঠন করার চেষ্টা করছি। কোনো কোম্পানিকে জেড ক্যাটাগরিতে বসে থাকতে দেয়া হবে না। পুঁজিবাজারে যে কোম্পানি আসবে তাদের আইন-কানুন মেনে থাকতে হবে। এবং যে কারণে পুঁজিবাজারে এসেছে তা বাস্তবায়ন করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘তালিকাভুক্ত হয়ে বিনিয়োগকারীদের প্রলোভন দেখাবেন আর বছর শেষে লভ্যাংশ দেবেন না- তা হবে না। বিনিয়োগাকারীরা যে উদ্দেশ্যে কোম্পানিতে বিনিয়োগ করেছে লভ্যাংশ প্রদানের মাধ্যমে তা নিশ্চিত করতে হবে।’
দীর্ঘ দিন লভ্যাংশ না দেয়া ও আর্থিক প্রতিবেদনসহ বার্ষিক সাধারণ সভা না করায় গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ইউনাইটেড এয়ার, ফ্যামিলি টেক্স, সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইল ও এমারেল্ড অয়েলের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে সেগুলোয় নতুন স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দেয় বিএসইসি। একই কারণে রিং সাইন কোম্পানিরও পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দিয়েছে কমিশন।
বিএসইসি কমিশনার শেখ শামসুদ্দিন বলেন, ‘পুঁজিবাজারকে শক্তিশালী করার জন্য ভালো মৌলভিত্তির কোম্পানির বিকল্প নেই। পুঁজিবাজারে এসব কোম্পানি অন্তর্ভুক্ত করতে ইস্যু ব্যবস্থাপকদের অন্যতম ভূমিকা পালন করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আপনারা (ইস্যু ব্যবস্থাপক) যা কিছু বলেন সে কথাটা আমরা (বিএসইসি) দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। আপনাদের কথায় বিশ্বাস করেই আমরা নতুন কোম্পানির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকি। এরপর যদি সেই কোম্পানির মাধ্যমে বিনিয়োগাকরীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাহলে এ দায় কে নেবে? এ দায় আমি বিনিয়োগকারীদের দিতে চাই না।’
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) প্রেসিডেন্ট সাইদুর রহমান। তিনি বলেন, এ ধরনের সেমিনার পরবর্তী সময়ে ইস্যু ব্যবস্থাপকদের আরও সুনিপুণভাবে কাজ করতে সহায়ক হবে।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কমিশনের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র রেজাউল করিম।
তিনি বলেন, ‘নিরীক্ষকের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনের ওপর নির্ভর না করে আইন অনুযায়ী ইস্যু ব্যবস্থাপককে ইস্যুয়ারের আর্থিক প্রতিবেদনের সত্যতা ও যর্থাথতা যাচাই করতে হবে। ফিজিক্যাল ভেরিফিকেশন রিপোর্টের সঙ্গে আর্থিক প্রতিবেদন, ব্যাংক স্টেটমন্টে, বিল ও অন্যান্য প্রতিবেদনের অসঙ্গতি আছে কি না তাও তাদের দেখতে হবে। সব ঠিক থাকলেই সম্মতি দেবেন।’
ইস্যু ব্যবস্থাপকদের উদ্দেশে বিএসইসির মুখপাত্র রেজাউল আরও বলেন, ‘আপনাদের যাচাই-বাছাইয়ের ওপর নির্ভর করেই নতুন কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। তাই বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার বিষয়টি আপনাদের ওপরই নির্ভর করে।’