সোমবার কোম্পানিটির শেয়ার দর ১ হাজার ৫৪৬ টাকায় ক্লোজ হয়েছে। মঙ্গলবার যদি একই দাম থাকে, তাহলে বৃহস্পতিবার শেয়ারটির লেনদেন শুরু হবে ৫১৫ টাকায়। এটিই হবে নতুন ফ্লোর প্রাইস।
২০০ শতাংশ অর্থাৎ একটির বিপরীতে দুটি বোনাস শেয়ার দেয়ার প্রস্তাব করার পরও কোম্পানিটির নতুন ফ্লোর প্রাইস আগের ফ্লোরের এক-তৃতীয়াংশ হচ্ছে না।
কোম্পানিটির ফ্লোর প্রাইস এখন ৯০৭ টাকা ৬০ পয়সা। ২০০ শতাংশ বোনাস যোগ হলেও সেই দাম ৩০২ টাকা ৫০ পয়সা হবে না।
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি জানিয়েছে, মঙ্গলবার স্পট মার্কেটে যে দামে ক্লোজ হবে, সে দামের সঙ্গে ২০০ শতাংশ বোনাস শেয়ার হিসাব করে সমন্বয় হবে ফ্লোর প্রাইস।
বুধবার রেকর্ড ডেটে বন্ধ থাকবে লেনদেন। পরদিন লেনদেন চালু হবে রেকর্ড ডেটের আগের দামের সঙ্গে সমন্বয় করে।
সোমবার কোম্পানিটির শেয়ার দর ১ হাজার ৫৪৬ টাকায় ক্লোজ হয়েছে। মঙ্গলবার যদি একই দাম থাকে, তাহলে বৃহস্পতিবার শেয়ারটির লেনদেন শুরু হবে ৫১৫ টাকায়। এটিই হবে নতুন ফ্লোর প্রাইস।
রেকর্ড ডেটের পর কোনো কোম্পানির শেয়ার দর সার্কিট ব্রেকার অনুযায়ী বাড়তেও পারে, কমতেও পারে। তবে বিএটিবিসির ক্ষেত্রে কেবল বাড়তেই পারবে, কমতে আর পারবে না।
সার্কিট ব্রেকার অনুযায়ী দেড় হাজার টাকার ওপরে লেনদেন হতে থাকায় কোম্পানিটি এখন দিনে ৬ দশমিক ২৫ শতাংশ বাড়তে বা কমতে পারে।
তবে নতুন ফ্লোরে দাম ৫০০ টাকার আশপাশে হওয়ায় তখন তা ৮ দশমিক ৫ শতাংশ বাড়তে বা কমতে পারবে।
তবে যেহেতু ফ্লোরে লেনদেন শুরু হবে, সেহেতু সেটি কেবল সর্বোচ্চ কত পরিমাণ বাড়বে, সেদিকেই থাকবে দৃষ্টি। কমার আর সুযোগ নেই।
অবশ্য রেকর্ড ডেটের আগের দিন কোম্পানিটির শেয়ারমূল্য ওঠানামা করতে পারবে সর্বোচ্চ ৬.২৫ শতাংশ। এই হিসাবে সর্বোচ্চ দাম উঠতে পারবে ১ হাজার ৬৪১ টাকা ৯০ পয়সা। আর সর্বনিম্ন দর হতে পারবে ১ হাজার ৪৪৮ টাকা ৪০ পয়সা।
সোমবার সংস্থার চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়ত-উল-ইসলাম স্বাক্ষরিত নির্দেশনায় বলা হয়েছে, মঙ্গলবার যে দামই হোক না কেন, সেই দামের তিন ভাগের এক ভাগ হবে ফ্লোর প্রাইস।
এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ-ডিএসই ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জকে-সিএসইকে নির্দেশও দেয়া হয়েছে।
বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র রেজাউল করিম বলেন, ‘নির্দেশনার পর যেসব কোম্পানির বোনাস লভ্যাংশ বা রাইট ইস্যু করবে তাদের ক্ষেত্রেই এ নিয়ম কার্যকর হবে। আগের যেসব কোম্পানির সংশোধন হয়নি সেগুলো যখন আবার লভ্যাংশ দেবে তখন সংশোধিত ফ্লোর প্রাইস নির্ধারণ হবে।’
গত মার্চে করোনার সংক্রমণ ধরা পড়ার পর পুঁজিবাজারে যে ধস নামে, তখন মূল্য পতন ঠেকাতে সব শেয়ারের সর্বনিম্ন দাম বেঁধে দেয়া হয়, যাকে বলা হচ্ছে ফ্লোর প্রাইস।
এই নীতিমালা গ্রহণের পর মুন্নু অ্যাগ্রো লভ্যাংশ হিসেবে ১০ শতাংশ বোনাস শেয়ার এবং ন্যাশনাল পলিমার ১০০ শতাংশ অর্থাৎ একটি শেয়ারের বিপরীতে আরেকটি রাইট শেয়ার দেয়ার পরও ফ্লোর প্রাইস সমন্বয় হয়নি। ফলে কোম্পানি দুটির শেয়ারধারীরা স্বয়ংক্রিয়ভাবে মুনাফা পেয়ে গেছেন।
বিএটিবিসির ফ্লোর প্রাইস সে সময় ঠিক হয়েছিল ৯০৭ টাকা ৬০ পয়সা। আগের দুই কোম্পানির মতো যদি এটির ফ্লোরও একই দামে থাকত, তাহলে বিনিয়োগকারীরা স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিপুল পরিমাণ মুনাফা পেয়ে যেতেন।
যদি ফ্লোর না কমানো হতো, তাহলে এই একটি শেয়ারের বিপরীতে যখন তিনটি শেয়ার হতো, তখন বিনিয়োগকারীদের টাকা হতো ২ হাজার ৭২২ টাকা ৬০ পয়সা।
কেন স্বয়ংক্রিয়ভাবে শেয়ারধারীরা এই বিপুল পরিমাণ মুনাফা পেয়ে যাবেন, এ নিয়ে প্রশ্ন ওঠার পর বিএসইসি গত ১৫ ফেব্রুয়ারি জানায়, কোম্পানির রাইট ও বোনাস শেয়ারের সঙ্গে সমন্বয় হবে ফ্লোর প্রাইসও।
তবে এই নীতিমালা গ্রহণের আগে যে দুটি কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস সমন্বয় হয়নি, সেগুলোর আর নতুন করে সমন্বয় হবে না। ১০ শতাংশ বোনাস দেয়ার পরও মুন্নু অ্যাগ্রোর ফ্লোর প্রাইস ৭৯৪ টাকা ৮০ পয়সাই থাকছে। যদিও নতুন নীতিমালা অনুযায়ী সেটা হতে পারত ৭২০ টাকা।
গত ৬ জানুয়ারি রাইট শেয়ারের জন্য ক্লোজিং ডেতে ন্যাশনাল পলিমারের দাম ছিল ৭১ টাকা ৬০ পয়সা। প্রতি ১০ শেয়ারে ৫ টাকা প্রিমিয়াম নেয়া হয়েছে। এই হিসাবে কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস হতে পারত ৪৩ টাকা ৩০ পয়সা, যদিও সেটি আগের নিয়মে ৫৬ টাকা ৬০ পয়সা নির্ধারিত আছে। এই হিসাবে শেয়ারপ্রতি ১৩ টাকা অতিরিক্ত মুনাফা পেয়েছেন বিনিয়োগকারীরা।