পুঁজিবাজারের উন্নয়ন ও তারল্য সংকট নিরসনে বিশেষ তহবিল গঠন করেছে সরকারি-বেসরকারি ২৫টি বাণিজ্যিক ব্যাংক। যার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ৬৭৩ কোটি টাকা। এর ৩৮ শতাংশ অর্থাৎ এক হাজার ৩৩ কোটি টাকা ইতোমধ্যেই পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করেছে ব্যাংকগুলো।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, চলতি বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য এ তহবিল গঠন করে ব্যাংকগুলো। তহবিল থেকে ইতোমধ্যে ৩৮ শতাংশ বিনিয়োগ করা হয়েছে। তহবিল গঠনে আগের ব্যাংকগুলোর সঙ্গে নতুন করে তালিকায় যুক্ত হয়েছে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক (এমটিবি), ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড (ইবিএল) ও সাউথইস্ট ব্যাংক লিমিটেড।
পুঁজিবাজারকে স্থিতিশীল করা ও বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়াতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক বাংলাদেশ ব্যাংক দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে বিশেষ সুবিধায় এ তহবিল গঠনের নির্দেশনা দেয়। সে নির্দেশনার ধারাবাহিকতায় গত বছর দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃপক্ষ ব্যাংকগুলোর শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে। এরপর ব্যাংকগুলোর এ তহবিল গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়।
বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সভাপতি ছায়েদুর রহমান জানান, পর্যায়ক্রমে বাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ বাড়ছে। তহবিল বাজারে বিনিয়োগ আরও বাড়বে। এতে পুঁজিবাজারে লেনদেনের গতি বাড়বে, যা বাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়নো ও বাজার স্থিতিশীল রাখতে সহায়ক হবে।
এর আগে পুঁজিবাজারে তারল্য সংকট কাটাতে বিশেষ তহবিল গঠনের জন্য গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে এক নির্দেশনা জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। তাতে বলা হয়, এখন থেকে যেকোনো ব্যাংক তার নির্ধারিত সীমার বাইরেও পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য ২০০ কোটি টাকার ‘বিশেষ তহবিল’ গঠন করতে পারবে। অর্থাৎ, একটি ব্যাংক তাদের মোট মূলধনের ২৫ শতাংশের বেশি শেয়ার ধারণ করতে পারবে না। আর এ ২০০ কোটি টাকা ওই ২৫ শতাংশের আওতামুক্ত থাকবে। ব্যাংকগুলো চাইলে তাদের নিজস্ব উৎস থেকে তহবিল গঠন করতে পারবে। আবার তাদের হাতে থাকা ট্রেজারি বিল ও বন্ড বন্ধক রেখে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে কম সুদে ঋণও নিতে পারবে। পাঁচ বছরমেয়াদি এ তহবিলের সুদ হার নির্ধারিত ছিল পাঁচ শতাংশ। তবে পরে বাজারের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সুদ হার দশমিক ২৫ শতাংশ কমানো হয়। বর্তমানে এ তহবিলের সুদহার চার দশমকি ৭৫ শতাংশ।
পুঁজিবাজারের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২০ সালের ১৬ জানুয়ারি যে ছয় দফা নির্দেশনা দিয়েছিলেন, তাতে পুঁজিবাজারে ব্যাংক ও ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণ বাড়ানো এবং মার্চেন্ট ব্যাংক ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের সহজ শর্তে ঋণ দেয়ার কথা উল্লেখ ছিল। তারই ধারাবাহিকতায় ব্যাংকগুলোকে বিশেষ তহবিল গঠনের সুযোগ দেয়া হয়।