দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত টেলিকম খাতের কোম্পানি রবি আজিয়াটা লিমিটেডের শেয়ারের দাম কমে-ই চলেছে। টানা দর বৃদ্ধির পর একইভাবে শেয়ারের দর হারাচ্ছে কোম্পানিটি। গত সোয়া এক মাসে রবির শেয়ারের দাম কমতে কমতে অর্ধেকে নেমেছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) থেকে প্রাপ্ত তথ্য পর্যালোচনা করে এই তথ্য পাওয়া গেছে।
গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর তালিকাভুক্ত হয় ফিক্সড প্রাইস পদ্ধতির প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে বাজারে আসা রবি আজিয়াটা। লেনদেনের প্রথম দিনে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ৫০ শতাংশ বেড়ে ১৫ টাকায় উঠে। এরপর থেকে টানা দাম বাড়তে থাকে শেয়ারটির। লেনদেন শুরুর মাত্র ২০ দিনের মাথায় (১৪ জানুয়ারি) ৪ পয়সা ইপিএস (শেয়ার প্রতি আয়) নিয়ে বাজারে আসা এই রবির শেয়ারের দাম দাঁড়ায় ৭০ টাকা ১০ পয়সায়। এটি এখন পর্যন্ত কোম্পানিটির শেয়ারের সর্বোচ্চ মূল্য। তারপর থেকে কোম্পানিটির শেয়ারের মূল্য সংশোধন শুরু হয়। যা এখনো চলছে। ইতোমধ্যে এই শেয়ারের দাম তার সর্বোচ্চ দামের প্রায় অর্ধেকে নেমেছে।
আজ সোমবার (২২ জানুয়ারি) ডিএসইতে রবির শেয়ারের ক্লোজিং মূল্য (শেষ আধা ঘন্টার ভারিত গড় মূল্য) দাঁড়ায় ৩৬ টাকা ৮০ পয়সা। ডিএসইতে এদিন শেয়ারটির দাম কমেছে প্রায় ৬ শতাংশ।
এদিকে সর্বশেষ বছরে কোম্পানিটির ইপিএস কিছুটা বেড়ে ৩৩ পয়সা হয়েছে।
সর্বশেষ ইপিএস বিবেচনায় নিলে রবির শেয়ারের মূল্য-আয় অনুপাত (Price Earnings Ratio-PE Ratio) দাঁড়ায় ১১১। এটি বাজারের বর্তমান গড় পিই-রেশিওর প্রায় পাঁচ গুণ। সাধারণত ২০ পর্যন্ত পিই রেশিওকে বিনিয়োগের জন্য তুলনামূলক নিরাপদ মনে করা হয়। বর্ধিষ্ণু কোম্পানি হলে ৩০/৩৫ পিই রেশিওকে নিরাপদ ভাবা যেতে পারে। পিই রেশিও তারচেয়ে যত বেশি হবে, বিনিয়োগের ঝুঁকিও তত বাড়বে।
বিশ্লেষকদের মতে, রবির শেয়ারের মূল্য বৃদ্ধির ধারাটি ছিল বেশ অস্বাভাবিক। সম্প্রতি তালিকাভুক্ত আরও কয়েকটি কোম্পানির শেয়ারের মতো রবির শেয়ারের দামও অযৌক্তিক হারে বেড়েছে। বিনিয়োগকারীদের একটি বড় অংশ হুজুগে পড়ে এবং গুজবে বিশ্বাস করে উচ্চ দামে শেয়ার কিনেছেন। কোম্পানিটির মৌলভিত্তি ওই মূল্যের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ না হওয়ায় মূল্য সশোধনের বিষয়টি ছিল অনিবার্য। এখন সেটিই ঘটছে।
তাদের মতে, রবির শেয়ারের বড় ধরনের উঠা-নামা সামগ্রিক বাজারকে যথেষ্ট প্রভাবিত করছে। বাজারে ৬০ থেকে ৭০ টাকা দরের মধ্যে রবির বিপুল পরিমাণ শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে। পরে রাতারাতি দাম অনেক কমে যাওয়ায় এসব বিনিয়োগ আটকে গেছে। ডিএসইর লেনদেন কমে যাওয়ার পেছনে এটিও কিছুটা ভূমিকা রেখেছে।