মুনাফা তুলে নিতে হুমড়ি খেয়ে পড়া বিনিয়োগকারীদের শেয়ার ছেড়ে দেওয়ার প্রভাবে পুঁজিবাজারে সূচকের বড় দরপতন হয়েছে। দেশের পুঁজিবাজারে চলমান সূচক ও শেয়ারের দরপতন আরো দীর্ঘায়িত হতে পারে, এমন আশঙ্কায় বিনিয়োগকারীরা তাদের পোর্টফোলিওতে থাকা শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছেন। ফলে একদিন উত্থানের পরই রোববার দেশের পুঁজিবাজারে বড় ধরনের দরপতন হয়েছে।মুলত বর্তমান কমিশনের আমলে এটাই সূচকের বড় দরপতন। দুপুর ২ টা ২১ মিনিটে ১৪৫ পয়েন্ট সূচকের দরপতন হয়। বড় ধরনের দরপতনে আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা। সূচকের এত বড় দরপতন নিয়ন্ত্রক সংস্থার এখনই খতিয়ে দেখা উচিত বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচকের পতনে লেনদেন চলছে। এদিন লেনদেন শুরু থেকেই সূচকের পাশাপাশি কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দর।ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বিনিয়োগকারীদের বক্তব্য, বিএসইসি বাজার উন্নয়নে নানা উদ্যোগ নিলেও প্রকৃত পক্ষে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা বাজারে যথাযথভাবে শেয়ার কেনা বেচা করছেন না। ফলে বাজারের তারল্য সমস্যা দেখা দিয়েছে। টানা পুঁজিবাজারের সার্বিক লেনদেন হাজার কোটি টাকা থেকে নেমে এসেছে সাতশ কোটি টাকায়। গত বছরের ডিসেম্বর থেকে বাড়তে থাকে পুঁজিবাজারের লেনদেন। ডিসেম্বরের শেষ দিকে লেনদেন উঠে আসে হাজার কোটি টাকায়। আর ২০১০ সালের মহাধসের পর প্রথমবারের মতো গত মাসে লেনদেন পৌঁছায় আড়াই হাজার কোটি টাকায়। আর সূচক পৌঁছে প্রায় ছয় হাজার পয়েন্টের কাছে।
পুঁজিবাজারের এমন উত্থানে নতুন করে আশান্বিত হয় সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। বিএসইসির নানা উদ্যোগে বিনিয়োগ বাড়তে থাকে পুঁজিবাজারে। কিন্তু হঠাৎ গত ২৬ জানুয়ারি থেকে কমতে থাকে সূচক ও লেনদেন। নতুন কোম্পানি রবি তালিকাভুক্ত হওয়ার পর সেখানেও আগ্রহ তৈরি হয় বিনিয়োগকারীদের। একের পর এক নতুন আইপিও আবেদন আর তালিকাভুক্তির মাধ্যমে পুঁজিবাজারে সম্ভাবনাকে অনেকটা আতঙ্কের পর্যায়ে নিয়ে এসেছে ক্রমাগত সূচক ও লেনদেনের পতন।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষক আবু আহমেদ বলেন, যেহেতু ক্রমাগত শেয়ারের দর কমেছে আর লেনদেনও কমে আসছে সেহেতু নিয়ন্ত্রক সংস্থার বিষয়টি খতিয়ে দেখা উচিত। পুঁজিবাজারে এখনও ভালো আছে। কারণ গত ছয় মাস আগেও পুঁজিবাজারে লেনদেন হয়েছে তিনশ থেকে চারশ কোটি টাকা। এখন সেটি সাতশ কোটি টাকায় আছে। একই সঙ্গে সূচকও সাড়ে পাঁচ হাজারে পয়েন্ট ধরে রেখেছে। ফলে বিনিয়োগকারীদের আতঙ্কিত না হয়ে যেসব কোম্পানির শেয়ারের দর কমেছে সেগুলোতে বিনিয়োগের চিন্তা করা উচিত।
পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী বশির উদ্দিন বলেন, ‘আইপিও বা প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের কারণে নতুন বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে এটা ঠিক না। কারণ, যারা আইপিও আবেদন করেন তাদের বিনিয়োগ আলাদা। আর যারা ডে ট্রেডিং করেন তাদের বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত আলাদা। তিনি বলেন, মূলত যখন শেয়ারের দর বেড়েছিল তখন সাধারণ ও প্রাতিষ্ঠানিক সব শ্রেণির বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করে মুনাফা উত্তলন করেছে। পরবর্তীতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা শেয়ার ক্রয় না করায় দামে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। আর কমেছে লেনদেন।