1. [email protected] : শেয়ার সংবাদ প্রতিবেদক : শেয়ার সংবাদ প্রতিবেদক
  2. [email protected] : শেয়ারসংবাদ.কম : শেয়ারসংবাদ.কম
  3. [email protected] : Zahir Islam : Zahir Islam
  4. [email protected] : muzahid : muzahid
  5. [email protected] : nayan : nayan
  6. [email protected] : khadija : khadija khadija
সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:০২ পূর্বাহ্ন

পুঁজিবাজারে রবির আধিপত্য

  • আপডেট সময় : সোমবার, ১১ জানুয়ারী, ২০২১

বিদায়ী বছরের ২৪ ডিসেম্বর পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির মধ্য দিয়ে লেনদেন শুরু করেছে বহুজাতিক কোম্পানি রবি আজিয়াটা। তালিকাভুক্ত হয়েই কোম্পানিটি ‘টক অব দ্য মার্কেট’-এ পরিণত হয়েছে। কোম্পানিটির তালিকাভুক্ত হওয়ার পর লেনদেন হয়েছে ১১ কার্যদিবস। প্রতি কার্যদিবসে দর বাড়তে দেখা গেছে এই কোম্পানির শেয়ারের। পাশাপাশি প্রতিদিনই দেখা গেছে এ শেয়ারের বিক্রেতার আকাল।

লটারি বিজয়ীরা মনে করছেন, এ শেয়ারের ভবিষ্যৎ আরও ভালো হবে। এরকম ভাবনা থেকে ক্রেতারাও এ শেয়ার ক্রয় করার জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন। তবে বিষয়টিতে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে পুঁজিবাজার-সংশ্লিষ্টদের মধ্যে। বহুজাতিক কোম্পানি হিসেবে এ শেয়ার চাহিদা তুঙ্গে রয়েছে। কেউ কেউ এমন কথা বললেও অনেকেই মনে করছেন বাজারে নতুন আসা এ প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারদর অতিমূল্যায়িত হয়ে যাচ্ছে।

২৪ ডিসেম্বর লেনদেন শুরু করে রবি আজিয়াটা। টানা ১১ কার্যদিবস দর বৃদ্ধি পেয়ে গতকাল তা স্থির হয়েছে ৫২ টাকা ৩০ পয়সায়। অন্যদিকে গতকাল এ শেয়ারের বিক্রেতা ছিল আগের চেয়ে অনেক কম। এ কোম্পানির শেয়ার লেনদেন চিত্রে দেখা যায়, লেনদেন শুরু হওয়ার অষ্টম কার্যদিবসে রবির রেকর্ড সংখ্যক শেয়ার বিক্রয় হয়। এদিন প্রতিষ্ঠানটির মোট ছয় কোটি ৫৪ লাখ ৯৮ হাজার ৭৬৪টি শেয়ার লেনদেন হতে দেখা যায়। এদিন বাজারে গুজব ছিল আগামীতে দর কমতে পারে।

অন্যদিকে লটারি বিজয়ী অনেকেই তাদের কাক্সিক্ষত দর পেয়ে শেয়ার ছেড়ে দেন। কিন্তু পরের কার্যদিবসেই লেনদেন শুরুর প্রথমেই এ শেয়ারের প্রচুর চাহিদা দেখা যায়। যার যের ধরে আবারও বিক্রেতার খরা দেখা যায়। ফলে শেয়ার লেনদেনও কমে যায়। পরের দিন তা দুই কোটিতে নেমে আসে। এভাবে টানা তিন কার্যদিবস ক্রমাগত রবির শেয়ার বিক্রি কমে যায়। সর্বশেষ গতকাল তা নেমে আসে ৩৬ লাখ ২৬ হাজার ৪৮৯টিতে।

বিষয়টি নিয়ে আলাপ করলে পুঁজিবাজার বিশ্লেষক আবু আহমেদ বলেন, প্রতিষ্ঠানটির আর্র্থিক অবস্থা সবারই জানা আছে। ফলে তারাই বলতে পারবেন কেন এ শেয়ারদর বাড়ছে। আমার মনে হয় বহুজাতিক কোম্পানি হিসেবে এর প্রতি বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা থাকতে পারে। কারণ এ ধরনের কোম্পানির কাছ থেকে সবাই ভালো কিছু প্রত্যাশা করে। সে কারণে হয়তো দাম বাড়তে পারে।

একই প্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি ব্রোকারেজ হাউসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, বহুজাতিক কোম্পানি হলেও এর আর্থিক অবস্থা ভালো নয়। কোম্পানি বহুজাতিক হলেই যে তাদের শেয়ারদর বেশি হবে কিংবা ভালো লভ্যাংশ দিতে পারবে এর কোনো ভিত্তি নেই। তাই বিনিয়োগের বেলায় কোম্পানির আর্থিক অবস্থার দিকে নজর দেয়া উচিত। এটা বিবেচনায় না নিলে একসময় বিনিয়োগকারীকে এর মাশুল দিতে হতে পারে।

এদিকে বাজার মূলধন এবং সূচক বৃদ্ধিতেও বড় ধরনের ভূমিকা রাখছে বহুজাতিক এ কোম্পানিটি। বর্তমানে কোম্পানিটির পুঁজিবাজারের তৃতীয় সর্বোচ্চ বাজার মূলধনধারী কোম্পানি। কোম্পানিটির তালিভুক্ত হওয়ার পর থেকে প্রতিদিনই বাজার মূলধন বৃদ্ধি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে। গতকাল দিন শেষে এ প্রতিষ্ঠানের বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকা।

অন্যদিকে কোম্পানিটির বর্তমান পরিস্থিতি জানতে যোগাযোগ করা হলে সেখানকার একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, শেয়ারদর কেন বাড়ছে তা আমাদের জানা নেই। আর এটা আমাদের জানারও কথা নয়। সেকেন্ডারি মার্কেটে শেয়ার কেনাবেচা করেন বিনিয়োগকারীরা। তারাই এটা ভালো বলতে পারবেন। কোম্পানি সম্পর্কে কোনো ধরনের সংবেদনশীল তথ্য থাকলে আমরা তা জানিয়ে দেব।

গত বছর পুঁজিবাজার থেকে সম্প্রতি অর্থ সংগ্রহ করার অনুমোদন পায় বহুজাতিক কোম্পানি রবি আজিয়াটা। পুঁজিবাজার থেকে ৫২৩ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছে। এর মধ্য দিয়ে প্রায় ১০ বছর পর বহুজাতিক কোম্পানিটি পুঁজিবাজারে এলো।

রবি আজিয়াটার আর্থিক বিবরণীতে দেখা যায়, সর্বশেষ পাঁচ বছরের মধ্যে দুই বছর লোকসানে ছিল কোম্পানিটি। এর মধ্যে ২০১৬ ও ২০১৭ সালে লোকসানে ছিল। ২০১৬ সালে এ প্রতিষ্ঠানটি লোকসান করে ৬৯৩ কোটি ১০ লাখ টাকা। পরের বছর লোকসান কমে দাঁড়ায় ১০ কোটি ৪৬ লাখ টাকায়। পরে ব্যবসায়িকভাবে কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়ে লাভে ফিরে আসে কোম্পানিটি।

সর্বশেষ ২০১৯ সালে কোম্পানিটি মুনাফা করে ১৬ কোটি ৯১ লাখ টাকা। এর আগের বছর (২০১৮ সালে) মুনাফা ছিল ২১৪ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। অর্থাৎ ২০১৯ সালে আগের চেয়ে মুনাফা অস্বাভাবিকহারে কমে গেছে। যদিও ২০১৯ সালে প্রতিষ্ঠানটির আয় বেড়েছে। এ সময় কোম্পানিটির রাজস্ব আয় দাঁড়ায় সাত হাজার ৪৮১ কোটি ১৭ লাখ টাকা। আগের বছর এর পরিমাণ ছিল ছয় হাজার ৭৯৮ কোটি ২৩ লাখ টাকা। তবে ২০১৮ সালে রবির আয় কমে যায়। ২০১৭ সালে কোম্পানিটির আয় ছিল ছয় হাজার ৮২৫ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। এর আগে ২০১৬ সালেও কোম্পানিটির আয় কমে।

৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত ২০১৯ হিসাববছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, হিসাব বছর শেষে পুনর্মূল্যায়ন ছাড়া রবির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ১২ টাকা ৬৪ পয়সা। উল্লেখ্য, আলোচ্য সময়ের জন্য কোনো সম্পদ পুনর্মূল্যায়ন করেনি কোম্পানিটি। সমাপ্ত হিসাববছরে রবির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে মাত্র চার পয়সা। আর গত পাঁচ হিসাব বছরের গড় হারে শেয়ারপ্রতি লোকসান দাঁড়িয়েছে ১৩ পয়সা।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ