লতি জুলাই মাসের প্রথম কর্মদিবস থেকে বিনিয়োগকারীদের মুখে হাসি ফুটতে শুরু করেছে। জুলাই মাসের প্রথম কর্মদিবস মঙ্গলবার (০২ জুলাই) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) উদ্বোধনী সূচক ছিল ৫ হাজার ৩২৮ পয়েন্ট। আজ মঙ্গলবার ৬ কর্মদিবস পর সূচক ২৬৬ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৫৯৪ পয়েন্টে। এই সময়ে বিনিয়োগকারীরা মূলধন ফিরে পেয়েছেন ১১ হাজার ৭০৮ কোটি টাকা।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত ৬ কর্মদিবস যাবত শেয়ারবাজার ধারাবাহিকভাবে ইতিবাচক রয়েছে। এরমধ্যে গত বৃহস্পতিবার ডিএসইতে উত্থানের বড় সেঞ্চুরীও দেখা গেছে। ওইদিন ডিএসইর সূচক বেড়েছিল ১২৫ পয়েন্টের বেশি। এতে দেখা যাচ্ছে, প্রতিদিনই সূচক বাড়ছে, লেনদেন বাড়ছে এবং বাড়ছে কোম্পানিগুলোর শেয়ার দামও।
আজ সপ্তাহের তৃতীয় কর্মদিবস মঙ্গলবার ডিএসইতে গত পাঁচ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে। আজ লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ১৯ কোটি টাকা। লেনদেন হওয়া ৩৯৩টি কোম্পানির মধ্যে আজ ২৩৭টি বা ৬০ শতাংশের বেশি কোম্পানির শেয়ার দাম বেড়েছে। আজ ডিএসইর সূচক বেড়েছে ৩০ পয়েন্টের বেশি।
ডিএসইতে আজ লেনদেনের শীর্ষে ছিল সী বিচ রিসোর্ট। কোম্পানিটির শেয়ার আজ লেনদেন হয়েছে ৫৯ কোটি ৪২ লাখ টাকার বেশি। অর্থাৎ ডিএসইর মোট লেনদেনের ৫.৮৩ শতাংশই লেনদেন ছিল কোম্পানিটির দখলে। কিন্তু মজার বিষয় হলো, এতো বড় লেনদেনের পরও কোম্পানিটির শেয়ার আজ শেষ বেলায় ক্রেতা সংকটের কবলে পড়ে যায়। শেষ বেলায় শেয়ারটির বিক্রেতাদের ছোটপাট থাকলেও ক্রেতাদের খোঁজ মিলছিল না।
বিনিয়োগকারীরা বিস্ময় প্রকাশ করে বলেছেন, চাঙ্গাবাজারে কারা এতো শেয়ার বিক্রি করলো? যেখানে অনেক কোম্পানির শেয়ার আজ বিক্রেতা সংকটে ছিল, সেখানে বিশাল লেনদেন করেও এই শেয়ারটি ক্রেতা সংকটের অপবাদে পড়ে গেল? কারা এতো শেয়ার বিক্রি করলো? কেন তারা শেয়ারটি উঠতে দিলো না? বিষয়টি বিএসইসি ও ডিএসইর খতিয়ে দেখা উচিত বলে তারা মনে করছেন।
তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, দুই বছর আগে সী পার্ল রিসোর্টের শেয়ার ২৪০ টাকার ওপরে লেনদেন হয়েছে। তারপর থেকে শেয়ারটি পতন প্রবণতায় রয়েছে। গত এক মাসে শেয়ারবাজারে নাজুক অবস্থার মধ্যেও শেয়ারটি ৯২ টাকার ওপরে লেনদেন হয়েছে। গত সপ্তাহের শুরুতে শেয়ারটি লেনদেন হয়েছে ১০০ টাকার কাছাকাছি। এখন চাঙ্গা বাজারেও শেয়ারটি সেল প্রেসার দিয়ে নাজুক অবস্থায় ফেলে রেখেছে।
উপরে সী পার্ল রিসোর্টের গত এক মাসের লেনদেন চিত্র
বাজারে গুঞ্জন রয়েছে, ২০১০ সালে শেয়ার কারসাজি মামলার অভিযুক্ত এক বড় বিনিয়োগকারী শেয়ারটির পেছনে রয়েছেন। তিনি কম দামে শেয়ারটি হাতিয়ে নিতে গত কয়েকদিন যাবত শেয়ারটির লেনদেনে অস্থিরতা তৈরি করছেন। যার কারণে প্রতিদিনই শেয়ারটির বিশাল লেনদেন হচ্ছে। দাম বাড়লেই বড় বড় সেল প্রেসার দিয়ে অস্থিরতা তৈরি করছেন। যাতে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা হতাশ হয়ে কম দামে শেয়ারটি ছেড়ে দেন।
বাজারে আরও গুঞ্জন রয়েছে, এই শেয়ারটির দাম আবারও বড় প্রাইস হবে। কোম্পানিটির মালিকপক্ষও শেয়ারটির ভালো প্রাইস করার পক্ষে অবস্থান নিচ্ছেন। যে কারণে বড় ওই বিনিয়োগকারীকে শেয়ারটির পেছনে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। এমন অবস্থায়, বাজার সংশ্লিষ্টরা লোকসানে শেয়ারটি বিক্রি না করার পরামর্শ দিয়েছেন।