টানা চতুর্থ দিনের মতো বেড়েছে শেয়ারদর ও সূচক। গতকাল বৃহস্পতিবার প্রধান শেয়ারবাজার ডিএসইতে সাড়ে ৭২ শতাংশ শেয়ারের দর বেড়েছে। প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৮২ পয়েন্ট, যা গত ২৮ এপ্রিলের পর এক দিনে সর্বোচ্চ বৃদ্ধি। সূচকের এ বৃদ্ধিতে অপেক্ষাকৃত ভালো মৌলভিত্তির শেয়ারগুলোর দরবৃদ্ধির ভূমিকা ছিল সর্বাধিক। এ নিয়ে টানা চতুর্থ দিনে বাড়ল সূচকটি।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ডিএসইতে তালিকাভুক্ত ৩৯৬ কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ৩৯০টির কম-বেশি কেনাবেচা হয়েছে। এর মধ্যে ২৮৭টির দর বেড়েছে, কমেছে ৫৪টির এবং অপরিবর্তিত ছিল বাকি ৪৯টির দর। খাতওয়ারি লেনদেন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, সব খাতের অধিকাংশ শেয়ারের দর বেড়েছে।
তুলনামূলক বেশি বেড়েছে প্রকৌশল, ওষুধ ও রসায়ন, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ, খাদ্য ও আনুষঙ্গিক, সিমেন্ট, সিরামিক, পাট, কাগজ ও ছাপাখানা খাতের শেয়ার। গড়ে এসব খাতের শেয়ারদর ৩ থেকে পৌনে ৪ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। এ ছাড়া ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও টেলিযোগাযোগ খাতের শেয়ারগুলোর গড় দর বেড়েছে আড়াই শতাংশ হারে।
একক কোম্পানি হিসেবে সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে লিনডে বিডির। কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি দর এক দিনেই ৪২৪ টাকা বা ৪৩ শতাংশ বেড়ে ১ হাজার ৪০৯ টাকা ছাড়িয়েছে। ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের শেয়ারপ্রতি নগদ ১৫৪ টাকা বা ১ হাজার ৫৪০ শতাংশ অন্তর্বর্তীকালীন লভ্যাংশ ঘোষণার পর শেয়ারদরে সার্কিট ব্রেকার মুক্ত থাকার সুযোগে শেয়ারটির দর এক দিনেই এতটা বাড়ল।
গতকালের ডিএসইএক্সের ৮২ পয়েন্ট বৃদ্ধির মধ্যে শুধু লিনডে বিডির শেয়ারদর বৃদ্ধির অবদান ছিল প্রায় ১৩ পয়েন্ট। এটিসহ রেনাটা, স্কয়ার ফার্মা, কহিনূর কেমিক্যাল, ওরিয়ন ইনফিউশনস, বিএটি বাংলাদেশ, রবি, বেক্সিমকো ফার্মা, সিটি ব্যাংক ও অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ সাকল্যে সূচকে ৪৪ পয়েন্ট যোগ করে। এ ছাড়া ইউনিলিভার কনজ্যুমার কেয়ার, গ্রামীণফোন, ব্র্যাক ব্যাংক, শাহজালাল ব্যাংক, মবিল যমুনা, হেইডেলবার্গ এবং লাফার্জ-হোলসিমের শেয়ারদর বৃদ্ধিও সূচকে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
শেয়ারবাজারসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, অপেক্ষাকৃত ভালো কোম্পানির শেয়ারে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বিনিয়োগ সংস্থা আইসিবি বিনিয়োগ করছে। এ বিনিয়োগের প্রভাবে গত দুই দিন সূচক ঊর্ধ্বমুখী হয়। সূচকের বৃদ্ধি দেখে অন্য বিনিয়োগকারীরাও আশাবাদী হয়ে শেয়ার কিনেছে। এতে সার্বিকভাবে শেয়ারবাজারে ইতিবাচক ধারা সৃষ্টি হয়েছে।
পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ঈদের ছুটির আগের দুই দিন ও পরের দুই দিন মিলে গত চার কার্যদিবসে ডিএসইএক্স সূচক বেড়েছে ১৭৪ পয়েন্ট। এ বৃদ্ধির আগে থেমে থেমে বড় দরপতন চলছিল শেয়ারবাজারে। বাজেটে মূলধনি মুনাফায় প্রথমবারের মতো করারোপের প্রস্তাব ছাড়াও সামষ্টিক অর্থনীতির সংকট, রিজার্ভ ঘাটতিসহ নানা ইস্যু ছিল এ দরপতনের কারণ। তবে গত চার দিনের দরবৃদ্ধিতে আশাবাদী বিনিয়োগকারীরা।
গতকাল ডিএসইতে প্রায় ৪৫৩ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে, যা বুধবারের তুলনায় ২০৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা বেশি।