ভাষা সৈনিক, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠম ও নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান (৮০) ইন্তেকাল করেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
শনিবার (১৫ জুন) দিবাগত রাত ১১টার দিকে নারায়ণগঞ্জ শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি মারা যান তিনি।
রোববার (১৬ জুন) বাদ জোহর নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন জামে মসজিদে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। পরে ফতুল্লার কাশিপুর ছোট কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন করা হবে।
মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে রাত সোয়া বারোটার দিকে আব্দুর রহমানের বড় ছেলে আহমেদুর রহমান তনু তার ফেসবুকে নিজের ব্যক্তিগত আইডিতে বাবার ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, ‘আব্বু চলে গেলো। এত বড় একটা জীবনের বিদায়।
জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে আব্দুর রহমান ক্যান্সার, কিডনি ও ডায়বেটিকসহ নানা রোগে ভুগছিলেন। গত ৩০ মে থেকে শহরের চাষাঢ়া বালুরমাঠ এলাকায় হেলথ রিসোর্ট হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসাধিন ছিলেন তিনি।
তার সংগ্রামী ছাত্রজীবন, রাজনৈতিক জীবন ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে নানা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা বিশ্লেষণ করে জানা যায়, স্বধীনতার পূর্বে তিনি ছিলেন পাকিস্তান সরকার বিরোধী আন্দোলনে প্রথম সারির তুখোর ছাত্রনেতা। ভাষা আন্দোলন, মহান স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম সংগঠক, অবিভক্ত ঢাকা জেলা ছাত্রলীগ, বাকশাল ও নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক, স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের নেতা ছিলেন তিনি। এছাড়া পাট শ্রমিক লীগ, সুন্নীয় ঐক্য পরিষদ ও শ্রুতি সাংস্কৃতিক একাডেমির সাবেক সভাপতি, সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের অন্যতম নেতা, নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের উপদেষ্টা পদে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেছেন।
রাজপথে বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামের নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। কখনও অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। ১৯৮৭-৮৮ সালে স্বৈরাচার সরকার বিরোধী আন্দোলনে অংশ নিয়ে দীর্ঘ ১৩ মাস কারাবন্দি ছিলেন এ গণমানুষের নেতা।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচরও ছিলেন আব্দুর রহমান। পারিবারিক জীবনে স্ত্রী, ২ ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন তিনি। তার স্ত্রীও ছিলেন ভাষা সৈনিক এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম নারী সংগঠক।
আব্দুর রহমানের বড় ছেলে আহমেদুর রহমান তনু সুজনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, ছোট ছেলে আরিফুর রহমান তপু জাতীয় পর্যায়ের চিত্রশিল্পী এবং একমাত্র মেয়ে তানহা রহমান পেশায় আইনজীবী।