1. [email protected] : শেয়ার সংবাদ প্রতিবেদক : শেয়ার সংবাদ প্রতিবেদক
  2. [email protected] : শেয়ারসংবাদ.কম : শেয়ারসংবাদ.কম
  3. [email protected] : Zahir Islam : Zahir Islam
  4. [email protected] : muzahid : muzahid
  5. [email protected] : nayan : nayan
  6. [email protected] : khadija : khadija khadija
শনিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ১০:০০ অপরাহ্ন

বাজেটে ব্যক্তি ও গোষ্ঠী স্বার্থ প্রতিফলিত হয়েছে

  • আপডেট সময় : মঙ্গলবার, ১১ জুন, ২০২৪

আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে নাগরিকদের প্রত্যাশার কোনো প্রতিফলন ঘটেনি। বরং এতে প্রতিফলন ঘটেছে ব্যক্তি ও গোষ্ঠী স্বার্থে। সে কারণেই ১৫ শতাংশ কর দিয়ে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দেয়া হয়েছে। অথচ সৎ করদাতাদের কর দিতে হবে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত। বাজেটে যাদের স্বার্থ রক্ষা হয়েছে তারই রাজনীতি ও ক্ষমতাকে নিয়ন্ত্রণ করছে। ফলে অসুবিধাগ্রস্ত ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠী বাজেট থেকে উপকৃত হতে পারছে না।

টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম আয়োজিত ‘জাতীয় বাজেট ২০২৪-২৫ ও বিরাজমান পরিস্থিতি, অসুবিধাগ্রস্ত মানুষের প্রাপ্তি’ শীর্ষক এক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে বক্তারা এ কথা বলেন। রাজধানীর ব্র্যাক ইন সেন্টারে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে সভাপতিত্ব করেন নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সিনিয়র রিসার্স ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান।

অনুষ্ঠানে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, এই বাজেটে শুভঙ্করের ফাঁকি রয়েছে। এটি এমন একটি বাজেট, যা জবাবদিহিহীন। এটি দুর্নীতি সহায়ক ও অনৈতিক বাজেট। এই কথাগুলো বলার অবশ্যই যৌক্তিক কারণ আছে। প্রথমে যদি কালোটাকার বিষয়টি বলি, কালোটাকাকে বৈধতা দেয়া যাবে নাÑএমন ঘোষণা কিন্তু আমাদের সংবিধানে আছে। আপনি সৎভাবে উপার্জন করে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত কর দেবেন, অন্যজন অনৈতিকতার সঙ্গে দুর্নীতি করে প্রচুর পরিমাণে আয় করে নামমাত্র ১৫ শতাংশ কর দেবেন। আবার এসব বিষয় নিয়ে কোনো প্রশ্নও তোলা যাবে না।

তিনি বলেন, ‘যারা দুর্নীতি করছে তাদের পুরস্কৃত করা হচ্ছে, লাইসেন্স দেয়া হচ্ছে সারাবছর অবৈধভাবে আয় করার। বছর শেষে রাজস্ব বিভাগ তাদের ক্লিন সার্টিফিকেট দেবে। অনেকে আবার শুদ্ধাচার পুরস্কার পাবেন, সেরা করদাতার পুরস্কারও পাবেন। এর মাধ্যমে দেশবাসীকে বোঝানো হচ্ছে তোমরা চাইলে এই পথটা অনুসরণ কর। এসবের কারণে আমরা আগামী প্রজš§কে বলার সাহস পাব না যে তোমরা ভালো আদর্শ অনুসরণ কর। এই বলার সাহসটা আমাদের কাছ থেকে কেড়ে নেয়া হচ্ছে। নৈতিকতার যে ভিত্তি তা সম্পূর্ণভাবে নষ্ট করে দেয়া হচ্ছে।’

ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, বর্তমান সংকটের মধ্যে অর্থনীতির স্থিতিশীলতা, সমাজের পিছিয়ে

পড়া জনগোষ্ঠীর আর্থিক অবস্থার সুরক্ষা এবং সংস্কারের যেসব বিষয় থাকার দরকার ছিল, তার কোনো প্রতিফলন বা দিকনির্দেশনা ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে নেই।


দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘বিনিয়োগকে সচল রাখার জন্য, বৈদেশিক লেনদেনের ঘাটতিকে ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থায় রাখতে, প্রবৃদ্ধিকে সচল রেখে কর্মসংস্থান তৈরির ক্ষেত্রে অর্থনীতির স্থিতিশীলতার প্রশ্নটি গুরুত্বপূর্ণ। প্রস্তাবিত বাজেটে এই জায়গাগুলোয় কোনো ধরনের স্বস্তি আমরা দেখি নাই এবং এখান থেকে বের হয়ে আসারও কোনো ধরনের পরিকল্পনা নেই। অথচ এই রকম একটা সময়ে পিছিয়ে পড়া মানুষকে সুরক্ষা দিতে হয়। শুধু সামাজিক সুরক্ষা নয়, এ সময় তাদের ফিসক্যাল প্রোটেকশনও দরকার। বিভিন্ন খাত ও গোষ্ঠীকে কেন্দ্র করে এই সুরক্ষার বিষয়টিতেও আশ্বস্ত হওয়ার মতো কিছু নাই, এমনকি কোন দিকনির্দেশনাও নেই। একইসঙ্গে এর জন্য রাষ্ট্র ও প্রশাসনিক কাঠামোকে কাজে লাগিয়ে জ্বালানি, ব্যাংকিং খাত, পুঁজিবাজারসহ যেসব স্থানে সংস্কার দরকার ছিল, সেখানে বড় ধরনের রাজনৈতিক অঙ্গীকার নেই বলেও মনে করেন দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।

তিনি বলেন, এই যে সমস্যাগুলো হচ্ছে, এর সবকিছুর মূলে ক্ষমতা ও রাজনীতি। ক্ষমতার জন্য যে রাজনীতি হচ্ছে সেটা পিছিয়ে থাকা মানুষের পক্ষে যাচ্ছে না। বিভিন্ন রাজস্ব আহরণ পদ্ধতিই বলি, আর সংস্কারের কথাই হোক, সেগুলো নট ফর দ্য পিপল, অনলি ফর দ্য পারসন (মানুষের জন্য নয়, ব্যক্তি-বিশেষের জন্য)।”

অনুষ্ঠানে পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও সিইও ড. এম মাশরুর রিয়াজ বলেন, এনপিএলের (খেলাপি ঋণের) একটা বড় অংশ আসলে লুট হয়ে গেছে। এর প্রভাব পড়ছে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ওপর। সরকার বাজেটে যে ঋণ নেবে, এটার প্রভাবও পড়বে ছোটদের ওপর। কারণ ছোট ব্যবসায়ীদের যে বরাদ্দ সেটাই ব্যাংকগুলো সরকারকে দিয়ে দেবে।

তৌফিকুল ইসলাম খান ব্রিফিংয়ে মূল প্রবন্ধে বলেন, আয় করে কোথায় ছাড় আছে সেটা বাজেটে বলা হয়েছে। বড়ভাবে ছাড় কমানো হয়েছে পরোক্ষ করে। গার্মেন্টস, জ্বালানি, মাইক্রোক্রেডিটের মতো প্রত্যক্ষ কর ছাড়ের ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেই, আগামীতে কী করা হবেÑএ বিষয়ে দিকনির্দেশনা নেই। আয়কর ছাড়ের ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেই। তিনি বলেন, ১৫ শতাংশ নগদ অর্থ দিয়ে অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ করা যাবে। কিন্তু গুলশান এলাকায় ফ্ল্যাট কিনলে ২ দশমিক ৩৮ শতাংশ ট্যাক্স দিয়ে আপনি বের হয়ে যেতে পারবেন। পুরো বৈধ হবে, সে ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে ১৫ শতাংশ নয়, ২ থেকে ৩ শতাংশ দিয়ে আপনি বের হয়ে যেতে পারবেন। একইসঙ্গে সম্পূর্ণরূপে ইনডেমনিটি দেয়া হয়েছে। কাউকে কেউ কোনো প্রশ্ন করতে পারবে না, এটা মানা যায় না।

তিনি আরও বলেন, বাজেটে অর্থনৈতিক অবস্থা পুনরুদ্ধারের কথা বলা হয়েছে। আমরা খুবই আশাবাদী। এর থেকে চমৎকার স্বপ্ন আর হয় না। কিন্তু এটা বাস্তবায়নে কোনো দিকনির্দেশনা নেই। ঘূর্ণিঝড় রেমালে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের ব্যাপারে কিছু বলা হয়নি। কী কারণে আমরা অর্থনৈতিক সংকটে পড়লাম। সেটা ভালোভাবে চিহ্নিত করা হয়নি। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কথা বলে বের হয়ে যাওয়া হয়েছে। ব্যাংকিং সেক্টর, সুশাসন নিয়ে আলোচনা নাই। বাজারে অনিয়ম, অর্থপাচার রোধে কী হবে, দায় দেনার ক্রাইসিস চিহ্নিত করা হয়নি।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ