পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর ক্যাটাগরি পরিবর্তনে আরও বিচক্ষণ হওয়ার দাবি জানিয়েছে ব্রোকারেজ হাউজগুলোর সংগঠন ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিবিএ)। একইসাথে সংস্থাটি ক্যাপিটাল গেইনের উপর করারোপ না করার দাবি জানিয়েছে।
বুধবার (১৫ মে) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের মতিঝিল কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ডিবিএ নেতৃবৃন্দের সাথে ডিএসইর বিশেষ বৈঠকে এসব দাবি তুলে ধরেন ডিবিএ নেতারা।
ডিবিএ’র নেতারা জানান, পুঁজিবাজারে ভালো কোম্পানিগুলোকে তালিকাভুক্তকরণে নজর দিতে হবে। ভালো কোম্পানি আসলে বাজারে বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগে উৎসাহিত হবে। একইসাথে লিস্টিং রেগুলেশনে কিছু পরিবর্তন আনতে হবে। বাজারে যেন বাজে আইপিও না আসে। সেক্ষেত্রে আইপিওগুলো দেওয়ার আগে সুনিশ্চিত ভাবে কোম্পানিগুলোর তথ্য জানতে হবে।
এসএমই মার্কেট নিয়ে ডিবিএ নেতারা বলেন, এসএমই মার্কেটকে রিভিউ করতে হবে। এখন সময় এসেছে এসএমই মার্কেটকে নিয়ে কাজ করার। বাজারে যারা বিনিয়োগকারী আছে তাদেরকে বিনিয়োগ শিক্ষা দিতে হবে। অনেকে না জেনে বুঝে বিনিয়োগ করে লোকসানে পরে মার্কেটকে দায়ী করেন। বিনিয়োগ শিক্ষা উদ্যোগ নিলে মার্কেটে বিনিয়োগকারীদের নিয়ে মার্কেট সুন্দর ভাবে পরিচালনা করা যাবে।
পুঁজিবাজারে দরপতন ঠেকাতে সম্প্রতি শেয়ারদরের ওপর আরোপ করা ৩ শতাংশ সার্কিট ব্রেকারকে আর্টিফিশিয়াল পদ্ধতি বলে দাবি করছে ডিবিএ। সংস্থাটি মনে করছে, পুঁজিবাজারকে নিজস্ব গতিতে চলতে না দিলে দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন সম্ভব না।
প্রসঙ্গত, পুঁজিবাজারে স্বচ্ছতা ফেরাতে সক্ষমতার দিক থেকে খারাপ কোম্পানিগুলোকে জেড ক্যাটাগরিতে পরিবর্তন বা স্থানান্তরের বিষয়ে সম্প্রতি কড়া নির্দেশনা দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, কোনো কোম্পানি পরপর দুই বছর লভ্যাংশ ঘোষণা এবং আইনি কারণ ছাড়া এজিএম করতে ব্যর্থ হলেও জেড ক্যাটাগরিতে পাঠানো হবে। টানা ৬ মাস কোম্পানির কার্যক্রম বা উৎপাদন বন্ধ রাখলে, টানা দুই বছর ক্যাশ ফ্লো নেতিবাচক এবং পরিশোধিত মূলধনের থেকে ঋণ বেশি হলেও জেড ক্যাটাগরিতে যেতে হবে।
এমন নির্দেশনার পরপরই মোট দুই দফায় মোট ২৮ কোম্পানিকে জেড ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর করা হয়। তবে ক্যাটাগরি পরিবর্তন নিয়ে বাজার বিশ্লেষকদের নানান মত-দ্বিমত দেখা যায়। এবার ক্যাটাগরি পরিবর্তনে আরও বিচক্ষণ হওয়ার দাবি জানিয়েছে ডিবিএ।
এদিকে ডিবিএর সকল দাবির প্রেক্ষিতে বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে ডিএসই চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হাফিজ মোহাম্মদ হাসান বাবু বলেন, আমাদের মূল উদ্দেশ্য পুঁজিবাজারের উন্নয়ন। পুঁজিবাজারকে অর্থনীতির সাথে সম্পৃক্ত না করতে পারলে, জিডিপিতে পুঁজিবাজারের অংশীদারত্ব বাড়াতে না পারলে পুঁজিবাজার কখনোই ভালো হবেনা। সে উদ্দেশ্যেই আমরা বারবার সকলের সাথে বসছি।
তিনি বলেন, ডিবিএ খুব শিগগিরই আমাদেরকে তাদের দাবিগুলো লিখিতভাবে দিবেন। পুঁজিবাজারের উন্নয়নে আমরা তাদের দাবিগুলো নিয়ে কাজ করবো।
এ সময় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এটিএম তারিকুজ্জামান, ডিবিএ প্রেসিডেন্ট সাইফুল ইসলাম, ডিবিএ সাবেক প্রেসিডেন্ট রিচার্ড ডি রোজারিওসহ ডিএসই এবং ডিবিএর কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।