1. [email protected] : শেয়ার সংবাদ প্রতিবেদক : শেয়ার সংবাদ প্রতিবেদক
  2. [email protected] : শেয়ারসংবাদ.কম : শেয়ারসংবাদ.কম
  3. [email protected] : Zahir Islam : Zahir Islam
  4. [email protected] : muzahid : muzahid
  5. [email protected] : nayan : nayan
  6. [email protected] : khadija : khadija khadija
বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২:১৯ পূর্বাহ্ন

একীভুতকরণের পরে দ্বিগুণ উৎপাদনে ফার গ্রুপের দুই কোম্পানি

  • আপডেট সময় : মঙ্গলবার, ১৪ মে, ২০২৪

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আরএন স্পিনিং মিলস অগ্নিকান্ডে পুড়ে যাওয়ার পরে চালু নিয়ে অনিশ্চয়তার দিন কাটায় বিনিয়োগকারীরা। তাদের অনিশ্চয়তা থেকে মুক্তি দিতে একীভুত (মার্জ) করে উৎপাদনে ফিরে মুনাফা করছে ফার গ্রুপের এ কোম্পানিটি। গ্রুপের তালিকাভুক্ত আরেক কোম্পানি ফার কেমিক্যাল এন্ড টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিজও মার্জ হয়ে দীর্ঘবছরের ধারাবাহিক লোকসান থেকে মুনাফায় ফিরেছে। এমন দাবি করেছে ফার গ্রুপ কর্তৃপক্ষ।

সম্প্রতি আরএন স্পিনিং মিলসের সঙ্গে মার্জ হওয়া সামিন ফুড অ্যান্ড বেভারেজ ইন্ডাস্ট্রিজ এন্ড টেক্সটাইল মিলসের গাজীপুরে অবস্থিত কারখানা ঘুরে দেখা যায়, শতভাগ রপ্তানিমুখী সুতা উৎপাদন হচ্ছে এ কারখানায়। প্রায় ১৬০০ কর্মী তিন শিফটে ২৪ ঘন্টা কারখানায় উৎপাদন কার্যক্রম সচল রাখছেন।

কারখানা পরিদর্শন শেষে কথা হয় আরএন স্পিনিংয়ের চেয়ারম্যান মো. হুমায়ুন কবিরের সঙ্গে। তিনি বলেন পুড়ে যাওয়া আরএন স্পিনিংয়ের কার্যক্রম পুনরায় চালু হওয়া নিয়ে অনিশ্চতা দেখা দেয়ায় আমরা কোম্পানিটিকে মার্জ করেছি। এটা নিশ্চয়ই বিনিয়োগকারীদের অনিশ্চয়তা থেকে মুক্তি দিতে ভালো সিদ্ধান্ত।

বর্তমানে মার্জ হওয়া কোম্পানিটিতে আমাদের উৎপাদন সক্ষমতা রয়েছে ৭৯ হাজার ৮৪৮ স্পেন্ডিল। প্রতি বছর যেখানে ১ কোটি ৭৫ লাখ কেজি সুতা উৎপাদন সম্ভব। আমাদের এ কারখানায় প্রায় ১৬০০ কর্মী কাজ করেন। এটি শতভাগ বিদ্যুৎ চালিত কারখানা। আর আমাদের পণ্যও শতভাগ রপ্তানিমুখী। নিরবিচ্ছিন্নভাবে ২৪ ঘন্টা আমাদের সবগুলো মেশিন চালু থাকে।

অগ্নীকাণ্ডে কারখানা পুড়ে ছাঁই হয়ে যাওয়া এবং ধারাবাহিক লোকসানের কারণে পুঁজিবাজারে তালিকভুক্ত ফার গ্রুপের দুই কোম্পানির ভবিষৎ সংকটাপন্ন হয়ে পড়ে। এর মধ্যে অগ্নীকাণ্ডে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতির কারণে আরএন স্পিনিং মিলসের উৎপাদন থেকে শুরু করে সব ধরনের কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে গ্রুপের অপর কোম্পানি সামিন ফুড অ্যান্ড বেভারেজ ইন্ডাস্ট্রিজ এন্ড টেক্সটাইল মিলসের সঙ্গে তালিকাভুক্ত আরএন স্পিনিং মিলসকে মার্জ করা হয়। মূলত তালিকাভুক্ত কোম্পানিটিকে লোকসান থেকে ফেরাতে এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। যার সুফল এরই মধ্যে দৃশ্যমান। লোকসান থেকে ভালো মুনাফার পথে হাটছে কোম্পানিটি, দাবি কোম্পানির কর্তাদের।

পরিদর্শনকালে মার্জ হওয়া কোম্পানিটির ১ হাজার ১৭১ দশমিক ৮৮ ডেসিমেল আয়তনের কারখানা ও উৎপাদন কার্যক্রম সচল থাকার চিত্র দেখা যায়। এছাড়া কারখানায় বিদ্যমান মেশিনারিজের ওপর স্টিকার দেখে তা জার্মানি, সুইজারল্যান্ড, ইতালি, চায়না ও ইন্ডিয়া থেকে আমদানি হওয়া মেশিনারিজ হিসেবে তথ্য প্রমাণ পাওয়া যায়। একইসঙ্গে কারখানায় বিপুল পরিমান আমদানিকৃত কাঁচামাল ও পণ্যের মজুদ দেখা যায়।

কারখানার কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মার্জ হওয়া এ কোম্পানিটিতে তারা রোস্টার অনুসারে ৩ শিফটে ডিউটি করেন। ২৪ ঘন্টা কারখানায় উৎপাদন কার্যক্রম সচল থাকে। কোন মেশিনে তাৎক্ষনিক সমস্যা তৈরি না হলে সবগুলো মেশিনই চালু থাকে।

এদিকে নারায়নগঞ্জে অবস্থিত ফার কেমিক্যাল এবং এসএফ টেক্সটাইলের কারখানাও পরিদশনে দেখা যায়, এ কারখানা দুটিতেও বিপুল পরিমান উন্নত মেশিনারিজ, আমদানিকৃত কাঁচামাল এবং মজুদ পণ্য রয়েছে। এছাড়া এ কারখানা দুটিতেও সবগুলো মেশিন চালু ও উৎপাদন দেখা যায়।

এ কারখানা দুটি পরিদর্শন শেষে ফার কেমিক্যালের জেনারেল ম্যানেজার আবু তালহা বলেন, মার্জ হওয়ার ফলে এখন আমাদের উৎপাদন সক্ষমতা ৩৩ হাজার ৬০০ স্পেন্ডিল থেকে বেড়ে ৭৫ হাজার ৮৫০ স্পেন্ডিলে দাঁড়িয়েছে। আর প্রতিবছর সুতা উৎপাদনের সম্ভাবনা ৬৩ লাখ কেজি থেকে ১ কোটি ৪৬ লাখ কেজিতে উন্নিত হয়েছে। বর্তমানে আমাদের কারখানা দুটির সর্বমোট ১ হাজার ১২৪ দশমিক ৫৮ ডেসিমেল আয়তন রয়েছে। দুই কারখানায় প্রায় সাড়ে ১৬০০ কর্মী রোস্টার অনুসারে ২৪ ঘন্টা কাজ করেন। শতভাগ বিদ্যুৎ চালিত কারখানা দুটির পণ্যও শতভাগ রপ্তানিমুখী।

একীভুত হওয়া কোম্পানির বিষয়ে ফার গ্রুপের চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের ফারুক বলেন, প্রথমে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) একটি কমিটি সরেজমিনে আমাদের এসএফ টেক্সটাইল ও সামিন ফুড এন্ড বেভারেজ ইন্ডাস্টিজ এন্ড টেক্সটাইল মিলসের কারখানা পরিদর্শন করে বিএসইসিকে সন্তোষজনক তদন্ত প্রতিবেদন দেয়। পরে হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুসারে বিশেষ সাধারণ সভা (ইজিএম) করে মার্জ হওয়ার বিষয়ে শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদন নেয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় আদালতের নির্দেশনা অনুসারে সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে কোম্পানি দুটিকে মার্জ করা হয়েছে।

কোম্পানির সুনাম ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্থ করার জন্য একটি মহল নেতিবাচক প্রচারনা চালাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমানে কোম্পানির বিরুদ্ধে বিএসইসি ও শেয়ারহোল্ডারদের কোন অভিযোগ নেই। এ মার্জের ফলে বিনিয়োগকারীরা লাভবান হবেন। কোম্পানির ব্যবসা ও মুনাফা বৃদ্ধি পাবে।

মার্জের পরে আর্থিকভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে তালিকাভুক্ত দুই কোম্পানি:

একীভুত হওয়ার পর গ্রুপটির তালিকাভুক্ত দুই কোম্পানিই অনিশ্চয়তা থেকে বেরিয়ে এসেছে। দুটো কোম্পানিই লোকসান থেকে মুনাফায় ফিরেছে। পাশাপাশি সম্পদমূল্য ধনাত্মক হয়েছে। উৎপাদন সক্ষমতাও বাড়াচ্ছে কর্তৃপক্ষ। এতে কোম্পানির ভবিষৎ সম্ভাবনা উদীয়মান হচ্ছে।

আর্থিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণে দেখা যায়, একীভুত হওয়ার আগে টানা পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে লোকসান গুনেছে আরএন স্পিনিং মিলস। এর মধ্যে অগ্নিকাণ্ডে কারখানার পুড়ে যাওয়ায় সর্বশেষ ২ বছর উৎপাদন বন্ধ ছিল। এতে বিক্রি শূণ্য হয়ে পড়ে কোম্পানিটি। এজন্য সর্বশেষ সমাপ্ত ২০২২-২৩ হিসাব বছরেও কোম্পানির কর পরবর্তী নিট লোকসান হয়েছিল ৩ কোটি ১৪ লাখ টাকা। প্রতি শেয়ারের বিপরীতে এ লোকাসন ছিল ৮ পয়সা। আর একীভুত হওয়ার পর মার্জ হওয়া কোম্পানির সুবাদে চলতি হিসাব বছরের ৯ মাসেই (জুলাই-মার্চ) আরএন স্পিনিং মিলসের ২ কোটি ৭৪ লাখ টাকা নিট মুনাফা হয়েছে। প্রতি শেয়ারের বিপরীতে এ মুনাফা ৯ পয়সা। কোম্পানির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) গত বছরের ৩০ জুন শেষে ছিল ঋণাত্মক ২ পয়সা। যেখানে একীভুত হওয়ার পর চলতি বছরের ৩১ মার্চে শেষে দাঁড়িয়েছে ধনাত্মক ১০ টাকা ৫২ পয়সায়।

অন্যদিকে একীভুত হওয়ার আগে টানা তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে লোকসানে ছিল ফার কেমিক্যাল এন্ড টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিজ। সর্বশেষ সমাপ্ত ২০২২-২৩ পূর্ন হিসাব বছরেও কোম্পানিটির নিট লোকসান হয়েছিল ২৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। প্রতি শেয়ারের বিপরীতে এ লোকসান ছিল ১ টাকা ১২ পয়সা। আর একীভুত হওয়ার পরে চলতি হিসাব বছরের ৯ মাসে মার্জ হওয়া কোম্পানির সুবাদে ফার কেমিক্যালের নিট মুনাফা অর্জন হয়েছে ৪ কোটি টাকার বেশি। যেখানে শেয়ারপ্রতি মুনাফা ২৬ পয়সা। গত বছরের ৩০ জুন শেষে কোম্পানির এনএভিপিএস ছিল ধনাত্মক ১০ টাকা ৯৮ পয়সা। একীভুত হওয়ার পর চলতি বছরের ৩১ মার্চ শেষ যা দাঁড়িয়েছে ৩২ টাকা ৫৯ পয়সা।

এ বিষয়ে ফার গ্রুপের ম্যানেজার (অ্যাকাউন্টস, ফাইন্যান্স এবং কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স) সুদীপ বণিক বলেন, মার্জ হওয়ার আগে তালিকাভুক্ত দুই কোম্পানিই লোকসানে ছিল। আর মার্জ হওয়ার পর এরই মধ্যে ৯ মাসে আমরা মুনাফায় ফিরতে সক্ষম হয়েছি। আশা করছি, আগামী দিনগুলোতে মার্জ হওয়া দুই কোম্পানিই অনেক ভালো মুনাফা অর্জনে সক্ষম হবে।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

কমলো সোনার দাম

  • ২৫ নভেম্বর ২০২৪
  • সূচকের পতনে চলছে লেনদেন

  • ২৪ নভেম্বর ২০২৪