পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত খাদ্য ও অনুষঙ্গ খাতের কোম্পানি অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান আজিজ মোহাম্মদ ভাইকে একটি হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরীকে হত্যার দায়ে তাকেসহ তিনজনকে যাবজ্জীবন দেওয়া হয়েছে।া
গতকাল বৃহস্পতিবার (৯ মে) ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক অরুণাভ চক্রবর্তী এ রায় ঘোষণা করেন। যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত অন্য দুই আসামি হলেন- আফাকুল ইসলাম ওরফে বান্টি ইসলাম ও আদনান সিদ্দিকী।
আজিজ মোহাম্মদ ভাই অনেক বছর আগে দেশ ছেড়ে গেছেন। বর্তমানে তিনি থাইল্যান্ডে অবস্থান করে সেখান থেকে ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন বলে বিশ্বাসযোগ্য একাধিক সূত্রে জানা গেছে। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত অপর দুই আসামী আফাকুল ইসলাম ওরফে বান্টি ইসলাম এবং আদনান সিদ্দিকীও পলাতম আছেন। ধারণা করা হচ্ছে, এরাও সংশ্লিষ্টদের চোখ ফাঁকি দিয়ে দেশ থেকে পালিয়ে গেছেন।
মামলার কাগজপত্র ও রাষ্ট্রপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৯৮ সালের ১৭ ডিসেম্বর রাজধানীর বনানীর ট্রাম্প ক্লাবের সামনে সোহেল চৌধুরীকে গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। পরে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) তদন্তে উঠে আসে আলোচিত ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাই, ট্রাম্প ক্লাবের মালিক বান্টি ইসলাম ও আশীষ রায় চৌধুরীর সঙ্গে বিরোধের জেরে ভাড়াটে খুনিদের দিয়ে সোহেল চৌধুরীকে হত্যা করা হয়।
খুন হওয়ার পরের বছর আশীষ রায় চৌধুরীসহ নয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। এর দুই বছর পর ২০০১ সালে বিচার শুরুর আদেশ হয়। ওই আদেশ চ্যালঞ্জ করে এক আসামি উচ্চ আদালতে গেলে আটকে যায় বিচার কার্যক্রম। পরে উচ্চ আদালতের আদেশে আবার বিচার কার্যক্রম ২০২২ সালে শুরু হয় বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি।
এদিকে ১৭ বছর আগে ঢাকা মহানগরের পিপির দপ্তর থেকে সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলার তদন্তের নথিপত্র (কেস ডকেট) নিয়ে যান পুলিশের তৎকালীন পরিদর্শক ফরিদ উদ্দিন। আদালতের নির্দেশের পরও তিনি তা আদালতে উপস্থাপন করতে পারেননি বলে গণমাধ্যমকে জানান এপিপি সাদিয়া আফরিন।
মামলার এজাহার ও পুলিশের কাছে দেওয়া সাক্ষীদের জবানবন্দির তথ্য বলছে, ১৯৯৮ সালের ২৪ জুলাইয়ের একটি ঘটনা থেকে আজিজ মোহাম্মদ ভাই, আজিজের আত্মীয় বান্টি ইসলাম, বান্টির বন্ধু আশীষ রায় চৌধুরীর সঙ্গে সোহেলের বিরোধের শুরু। এর জেরেই ট্রাম্প ক্লাবের সামনে ভাড়াটে লোক দিয়ে হত্যা করা হয় সোহেল চৌধুরীকে। জবানবন্দিতে সোহেল চৌধুরীকে হত্যার বিবরণ দিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষীরা।
আজিজ মোহাম্মদ ভাই অলিম্পিক গ্রুপের প্রধান কর্ণধার। এছাড়া তিনি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ওষুধ ও রসায়ন খাতের কোম্পানি অ্যামবি ফার্মাসিউটিক্যালস পিএলসি’রও চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।