ওষুধ খাতের কোম্পানি এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ লিমিটেডের শেয়ারদর ও লেনদেন সাম্প্রতিক সময়ে অস্বাভাবিক বেড়েছে। এর পেছনে কোনো ধরনের মূল্যসংবেদনশীল তথ্য নেই বলে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জকে জানিয়েছে কোম্পানিটি। অস্বাভাবিকভাবে দর বাড়ায় বাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন কারসাজি সন্দেহে কোম্পানিটিকে নোটিশ দিয়েছে ডিএসই।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, ৬ মার্চ লেনদেন শুরু হওয়ার পর থেকে কোম্পানিটির শেয়ারদর ঊর্ধ্বমুখী। ১০ মার্চ ডিএসইতে কোম্পানিটির শেয়ারদর ছিল ২৬ টাকা ৬০ পয়সা। ১৮ মার্চ তা দাঁড়ায় ৪২ টাকা ৬০ পয়সায়। সর্বশেষ গতকাল এটি বেড়ে দাঁড়ায় ৫১ টাকায়।
এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজের অনুমোদিত মূলধন ২০০ কোটি ও পরিশোধিত মূলধন ১২২ কোটি ৩৯ লাখ ৩০ হাজার টাকা। রিজার্ভে রয়েছে ৩৪১ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা ১২ কোটি ২৩ লাখ ৯৩ হাজার ৪৫৫। এর মধ্যে ৪০ দশমিক ৭১ শতাংশ উদ্যোক্তা পরিচালক, ১৫ দশমিক ৭৮ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক ও ৪৩ দশমিক ৫১ শতাংশ সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে।
গত ৪ থেকে ৮ ফেব্রুয়ারি সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে শেয়ার ইস্যুর জন্য এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজের আইপিও সাবক্রিপশন সম্পন্ন হয়। এর আগে ২০২২ সালের ১০ থেকে ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত কোম্পানিটির শেয়ারের কাট-অফ প্রাইস বা প্রান্তসীমা মূল্য নির্ধারণে বিডিং অনুষ্ঠিত হয়। বিডিংয়ে কোম্পানিটির শেয়ারের প্রান্তসীমা মূল্য ৫০ টাকা নির্ধারণ করেন ইআইরা (যোগ্য বিনিয়োগকারী)। বিএসইসির শর্তানুসারে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা কোম্পানিটির শেয়ারের প্রান্তসীমা মূল্যের চেয়ে ৩০ শতাংশ ছাড় বা ২০ টাকা এ দুয়ের মধ্যে যেটি কম, সে মূল্যে শেয়ার বরাদ্দ দেয়া হয়।
এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজের আইপিও আবেদন গত বছরের ১৬ জানুয়ারি শুরু হয়ে ২২ জানুয়ারি পর্যন্ত চলার কথা ছিল। ২০২২ সালের আগস্টে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) ৮৩৭তম সভায় বুক বিল্ডিং পদ্ধতির আইপিওর মাধ্যমে এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজকে পুঁজিবাজার থেকে ৯৫ কোটি টাকার মূলধন উত্তোলনের অনুমোদন দেয়া হয়। উত্তোলিত অর্থে কোম্পানিটি ব্যবসা সম্প্রসারণ, উৎপাদন ভবন নির্মাণ, ব্যাংক ঋণ পরিশোধ ও ইস্যু ব্যবস্থাপনা খাতে ব্যয় করবে। কোম্পানিটির ইস্যু ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে ছিল শাহজালাল ইকুইটি ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড। কোম্পানিটি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির আগে কোনো ধরনের লভ্যাংশ ঘোষণা, অনুমোদন বা বিতরণ করতে পারবে না বলে শর্তারোপ করেছে বিএসইসি।
গত বছরের ১৫ জানুয়ারি ওষুধ ও রসায়ন খাতের কোম্পানিটির সম্পদের ভ্যালুয়েশন নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় এর সাবস্ক্রিপশন প্রক্রিয়া স্থগিত করেছিল বিএসইসি। পরবর্তী সময়ে সার্বিক দিক বিবেচনা করে গত বছরের ২৮ নভেম্বর বিএসইসির ৮৮৯তম কমিশন সভায় আলোচ্য স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।