চলতি বছর শুরুতে গতিশিল ছিল দেশের পুঁজিবাজার। সম্প্রতি কোম্পানিগুলোর ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার এবং ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে স্থানান্তরের সিদ্ধান্তের পর পুঁজিবাজারের সেই গতি কিছুটা কমেছে। বিশেষ করে অসাধু চক্রের বিভিন্ন ধরনের গুজব রটানোর কারণে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে পুঁজিবাজারে। গত বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) দুটি গুজবকে কেন্দ্র করে ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই-সিএসই) সূচকে বড় পতন ঘটেছে।
আগামী রোববার (১০ মার্চ) থেকে নতুন করে আরো বেশ কয়েকটি কোম্পানি ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর করা হচ্ছে এবং বেক্সিমকোসহ আরো কয়েকটি কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস রোববার থেকে উঠে যাচ্ছে বলে গুজব ছড়িয়ে পড়ে। তবে এসব তথ্য ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এবং ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃপক্ষ। গুজব বা ভিত্তিহীন তথ্যে বিনিয়োগকারীদের কান দেওয়া উচিত হবে না বলে তারা জানিয়েছে, এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া বা দেওয়া হয়নি।
জানা গেছে, গত সোমবার (৪ মার্চ) নতুন করে ৬ কোম্পানির শেয়ার ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়টিকে কেন্দ্র করে কয়েকদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে কয়েকটি কোম্পানির তালিকা প্রকাশ করে গুজব ছড়ানো হয়েছে যে, ১০ মার্চ থেকে নতুন করে আরোও কয়েকটি কোম্পানি ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর করা হচ্ছে। এই তালিকার কয়েকটি কোম্পানি ইতোমধ্যেই জেড ক্যাটাগরিতে রয়েছে। ফলে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। এরই ধরাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) দেশের ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক ‘ডিএসইএক্স’ ৫৩ পয়েন্ট ও ‘সিএসইএক্স’ ৫৩ পয়েন্ট পতন হয়।
জানতে চাইলে শনিবার বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘নতুন করে আর কোনো কোম্পানিকে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর করার সিদ্ধান্ত বিএসইসি নেয়নি বা স্টক এক্সচেঞ্জকে দেয়নি। এ ছাড়া নতুন কোনো কোম্পানির শেয়ার ফ্লোরপ্রাইস প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয়নি কমিশন। বিএসইসির সর্বশেষ আদেশ অনুযায়ী যেসব কোম্পানির শেয়ারের ফ্লোরপ্রাইস প্রত্যাহার করা হয়েছে তার বাইরে আর নতুন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি।’
এদিকে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. এটিএম তারিকুজ্জামান রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘আগামী রোববার থেকে নতুন করে কোনো কোম্পানি ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর করা হচ্ছে না। এমন কোনো সিদ্ধান্ত ডিএসই নেয়নি। নতুন কোনো কোম্পানির শেয়ার ফ্লোরপ্রাইস প্রত্যাহার করা হচ্ছে বলেও বিএসইসির কাছ থেকে নির্দেশনা আসেনি।’
জানতে চাইলে বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কাজী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বৃহস্পতিবার কারসাজি চক্র গুজব ছড়ায় যে, রোববার থেকে অল্প কিছু কোম্পানির শেয়ারের ফ্লোরপ্রাইস তুলে দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি নতুন করে বেশ কিছু কোম্পানির শেয়ার জেড ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর করা হচ্ছে। এসব গুজব বিনিয়োগকারীদের প্রভাবিত কছে। যার প্রভাব পুঁজিবাজারে পড়েছে। তবে আমরা কমিশনের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা জানিয়েছে, এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে কমিশন সব সময় কাজ করে যাচ্ছে।