ক্যান্সার রোগীদের বিপাকজনিত বিভিন্ন সমস্যা হয়। এদের মধ্যে সবচেয়ে পরিচিত সমস্যা রক্তে ক্যালসিয়ামের পরিমান বেড়ে যায় বা হাইপারক্যালসেমিয়া হয়। ক্যান্সার রোগীদের এটি অনেক বেশী দেখা যায়। তবে শুধু ক্যান্সারের রোগীদেরই এটি হয় তা নয়। অন্যদেরও এই সমস্যাটা হতে পারে। যেসব ক্যান্সারে হাইপোক্যালসেমিয়া দেখা যায় তার মধ্যে আছে-
১। মায়েলোমা ২। স্তন ক্যান্সার ৩। নন স্মল সেল ফুসফুসের ক্যান্সার৪। কোলন ক্যান্সার ৫। প্রোস্টেট ক্যান্সার। এসব ক্যান্সার হলে রক্তে ‘পিটিএইচআরএইচ’ বাড়ে। তখন এটি প্যারাথাইরয়েড গ্রন্থির উপর কাজ করে। আমাদের গলার সামনে থাইরয়েড গ্রন্থি থাকে। থাইরয়েড গ্রন্থির পেছনে ৪টি প্যারাথাইরয়েড গ্রন্থি থাকে। প্যারাথাইরয়েড গ্রন্থি থেকে যে প্যারাথরমোন হরমোন বের হয় তার কাজ হচ্ছে শরীরে ক্যালসিয়ামের পরিমাণ বাড়ানো।
শরীরে ক্যালসিয়াম বেড়ে গেলে বিভিন্ন উপসর্গ দেখা যায়। যেমন- ১। বমিভাব ২। বমি ৩। পায়খানা কষা বা শক্ত হওয়া ৪। বার বার প্রসাব হওয়া ৫। পানি স্বল্পতা ৬। তন্দ্রা ভাব ৭। ঘনঘন পিপাসা লাগা ৮। দ্বিধাগ্রস্ত হওয়া ইত্যাদি
হাইপারক্যালসেমিয়া ডায়াগনসিসের জন্য খুব ভালভাবে ইতিহাস নিতে হবে। তবে ইতিহাস এবং রুগী পরীক্ষা করেই নিশ্চিত হওয়া যাবেনা। শতভাগ নিশ্চিত হবার জন্য রক্তে ক্যালসিয়ামের পরিমান রক্তে মাপা হয়। রক্তে ক্যালসিয়াম খুব বেশী হলে বিপদ হতে পারে। তাই দ্রুত চিকিৎসা করা উচিত। ০.৯% স্যালাইন শিরায় দিলে অবস্থার উন্নতি হয়। শিরায় বিসফসফোনেট দিলে রক্তে ক্যালসিয়াম কমে যায়। বিসফসফোনেট এর মধ্যে জোলেনড্রানিক এসিড এবং পামিড্রোনেট ব্যবহার করা হয়। যদি ক্যালসিয়াম খুব বেড়ে যায় তবে মাংসে বা চামড়ার নিচে ক্যালসিটোনিন দেয়া হয়।
তবে যেহেতু ক্যান্সারের কারণে হাইপারক্যালসেমিয়া হয় তাই ক্যান্সারের চিকিৎসাও পাশাপাশি চালিয়ে যেতে হবে। টিউমার বাড়তে থাকলে ক্যালসিয়ামও রক্তে বাড়তে থাকে। ক্যান্সার রুগীদেও এমন হাইপারক্যালসেমিয়া প্রায়ই হতে দেখা যায়। তাই চিকিৎসার সময়ে বিষয়টি স্মরণে থাকা উচিত।