হঠাৎ পেটে যন্ত্রণা, বমি বমি ভাব, প্রস্রাব করতে সমস্যা কিংবা গাঢ় হলুদ বা লালচে রঙের মূত্র দেখে মনে হতেই পারে কিডনিতে হয়তো পাথর জমেছে। আবার, পিত্তথলিতে পাথর হলেও কিন্তু খাবারের প্রতি অনীহা, বমি বমি ভাব দেখা যায়। দু’টি ক্ষেত্রেই পেটে যন্ত্রণা হয়। তবে চিকিৎসকেরা বলছেন, পেটে ব্যথা বা যন্ত্রণা হলেও তার ধরনে সূক্ষ্ম তফাৎ রয়েছে। পিত্তথলিতে পাথর জমলে পেটের উপর দিকে ব্যথা হয়। বমি হতে পারে, দুর্বল লাগতে পারে। কারো কারো ক্ষেত্রে জন্ডিসের মতো উপসর্গ দেখা দেয়। কিন্তু কিডনিতে পাথর জমলে পেটের নিচের দিকে ব্যথা হয়। যা কোমর, পিঠ পর্যন্ত ছড়িয়ে যেতে পারে। বার বার প্রস্রাবের বেগ আসে। মূত্রের মধ্যে রক্ত মিশে যাওয়াও অস্বাভাবিক নয়। তা ছাড়া, পিত্তথলি এবং বৃক্ক বা কিডনির মধ্যে থাকা পাথরের উপাদানও আলাদা।
লিভার বা যকৃতের গায়ে লেগে থাকা পিত্তথলির মধ্যে খাবার হজমে সহায়ক উৎসেচক, পিত্তরস অতিরিক্ত হয়ে গেলে তা জমতে শুরু করে। দিনের পর দিন তা জমতে জমতে শক্ত হয়ে পাথরে পরিণত হয়। রক্তে থাকা বিলিরুবিন, কোলেস্টেরলও থাকে এই পাথরের মধ্যে। কিডনিতে জমা পাথর আবার ক্যালশিয়াম, অক্সালেট এবং ইউরিক অ্যাসিডের মতো খনিজের সমন্বয়ে তৈরি।
পিত্তথলি বা কিডনিতে পাথর হয় কেন?
পাকস্থলীর মধ্যে খাবার পরিপাক করতে বিভিন্ন উৎসেচক বা পাচক রসের প্রয়োজন হয়। সেই রসের জোগান দেয় পিত্তথলি। সঠিক সময়ে খাবার না খেলে সেই উৎসেচক উদ্বৃত্ত হতে থাকে। দিনের পর দিন তা থলির মধ্যে জমতে জমতে একটা সময়ে পাথরে পরিণত হয়। কিডনিতে পাথর জমার কারণ আবার একেবারেই আলাদা। পর্যাপ্ত জল না খেলে শরীরে জমা দূষিত পদার্থ মূত্রের মাধ্যমে বাইরে বেরোতে পারে না। কিডনির যে ছাঁকনি, তা-ও নষ্ট হয়। রক্তের মধ্যে ইউরিক অ্যাসিড, ক্যালশিয়াম এবং অক্সালেটের মতো খনিজের পরিমাণ বাড়তে থাকলেও কিডনিতে পাথর জমে।