রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান মুকেশ আম্বানির ছোট পুত্র অনন্ত আম্বানির সঙ্গে রাধিকা মার্চেন্টের প্রি-ওয়েডিং সেলিব্রেশন মহা ধুমধামে সম্পন্ন হলো দুদিন আগেই। সোশ্যাল মিডিয়ায় এখন চর্চা শুধু তাদেরকে ঘিরেই।
তবে নেটিজেনদের অনেকেই অনন্তের স্থূলকায় শরীর নিয়ে কটূক্তি করছেন। বিগত কয়েক বছর আগেও অনেকটা ওজন ঝরিয়ে ফিট হয়েছিলেন অনন্ত আম্বানি। তবে হঠাৎ করেই কেন এতোটা স্থূলকায় হলেন?
প্রি-ওয়েডিং সেলিব্রেশনে সবার সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগির সময় অনন্ত আম্বানি জানান, ছোটবেলা থেকেই শারীরিক বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছেন। তার জীবন কখনোই ফুলের মতো সুন্দর ছিল না।
টাইমস অব ইন্ডিয়াতে দেওয়া ২০১৭ সালের এক সাক্ষাৎকারে নীতা আম্বানি তার ছোট ছেলের স্বাস্থ্য প্রসঙ্গে জানান, অনন্ত আম্বানি একজন ক্রনিক হাঁপানির রোগী।
আর এ কারণে তার চিকিৎসায় প্রচুর স্টেরয়েডের ব্যবহার হয়েছে। এর পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়ায়ই তিনি স্থূলতায় ভুগছেন। রিপোর্ট অনুযায়ী, আগে অনন্তের ওজন ছিল প্রায় ২০৮ কেজি।
স্টেরয়েড কীভাবে হাঁপানির চিকিৎসায় সাহায্য করে?
হাঁপানির লক্ষণগুলো (অ্যাস্থমা অ্যাটাক) গুরুতরভাবে খারাপ হওয়ার ক্ষেত্রে, ডাক্তাররা মৌখিক স্টেরয়েডের একটি সংক্ষিপ্ত কোর্স লিখে দিতে পারেন। এতে করে গুরুতর হাঁপানির সমস্যায়ও ভর্তির প্রয়োজন হয় না। স্টেরয়েড গ্রহণে শ্বাসনালিতে প্রদাহ ও ফোলাভাব কমাতে সাহায্য করে।
স্টেরয়েড কেন ওজন বাড়ায়?
অ্যাজমা অ্যান্ড লাং ইউকে অনুসারে, হাঁপানির লক্ষণগুলো একজন ব্যক্তির জন্য ব্যায়াম করা বা সক্রিয় রাখা আরও কঠিন করে তোলে।
দীর্ঘমেয়াদি স্টেরয়েড গ্রহণ করলে একজন স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ক্ষুধার্ত বোধ করতে পারে, যা ওজন বাড়িয়ে দেয়। মৌখিক স্টেরয়েড গ্রহণের কারণে শরীরে তরল জমে ওজন বেড়ে যেতে পারে।
জানা যায় ২০১৬ সালে, অনন্তের ট্রান্সফরমেশন অনেককেই অনুপ্রাণিত করেছে। রিপোর্ট অনুসারে, অনন্ত ১৮ মাসেরও কম সময়ে ১০৮ কেজি ওজন কমিয়েছেন।
অনন্ত প্রতিদিন পাঁচ-ছয় ঘণ্টা ব্যায়াম করেন। তার দৈনন্দিন ব্যায়ামের নিয়মে ২১ কিলোমিটার হাঁটা, তারপর যোগব্যায়াম, ওজন প্রশিক্ষণ, কার্যকরী প্রশিক্ষণ ও উচ্চ-তীব্রতা কার্ডিও ব্যায়াম অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
এর পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর খাবারও খেতে হয় তাকে। উচ্চ প্রোটিন ও কম চর্বিযুক্ত কম কার্ব ডায়েট অনুসরণ করেন তিনি। প্রতিদিন ১২০০-১৪০০ ক্যালোরি গ্রহণ করেন অনন্ত।
তার খাদ্যের মধ্যে আছে তাজা সবুজ শাকসবজি, মসুর ডাল, স্প্রাউট, ডাল ও দুগ্ধজাত পণ্য যেমন- পনির ও দুধল। ওজন কমানোর যাত্রায় তিনি মিষ্টি খাবার ও সব ধরনের জাংক ফুড ত্যাগ করেছেন।
একটি স্বাস্থ্যকর ডায়েট ও কঠোর ওয়ার্কআউট রুটিন ছাড়াও, অনন্ত আম্বানির একটি পরিকল্পিত ফিটনেস প্রোগ্রাম আছে, যা তিনি ধর্মীয়ভাবে অনুসরণ করেছিলেন। তার ফিটনেস প্রশিক্ষক বিনোদ চন্নাকে তার জন্য ওয়ার্কআউট প্রোগ্রামের পরিকল্পনা করার আগে অনেক গবেষণা করতে হয়।
১৬টি ওয়ার্কআউট কৌশলের একজন বিশেষজ্ঞ ও বেশ কয়েকটি বলিউড সেলিব্রিটিদের প্রশিক্ষক, তিনি একটি প্রোগ্রামের পরিকল্পনা করেন। যা অনন্তকে তার ওষুধে হস্তক্ষেপ না করে ওজন কমাতে সাহায্য করেছিল।
তিনি প্রাকৃতিক উপায়ে ১৮ মাসে ১০৮ কেজি ওজন কমিয়েছিলেন। তবে আবারও বেশ মুটিয়ে গেছে তিনি। তার প্রাক-বিবাহ উৎসবের ছবি-ভিডিওগুলো সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পরে অনেকেই কটূক্তি করছেন।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া