কক্সবাজারের টেকনাফ মডেল থানা পুলিশের সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ এনে আরও একটি ফৌজদারি দরখাস্ত করা হয়েছে। কক্সবাজারের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালত-৩ এর (টেকনাফ) বিচারক মো. হেলাল উদ্দিন দরখাস্তটি আমলে নিয়ে এ ঘটনায় আগে টেকনাফ থানায় কোনো মামলা হয়েছে কি-না, সে বিষয়ে আগামী ১০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে ওসিকে আদেশ দেন।
টেকনাফের হোয়াইক্ষ্যং ইউনিয়নের পশ্চিম মহেশখালীয়াপাড়ার মৃত আবদুল জলিল পুতুইক্যার স্ত্রী ছেনুয়ারা বেগম বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার (২৭ আগস্ট) এ ফৌজদারি দরখাস্তটি করেন।
ফৌজদারি দরখাস্তে উল্লেখ করা হয়েছে, আবদুল জলিল পুতুইক্যাকে ২০১৯ সালের ৩ ডিসেম্বর আসামিরা পরস্পর যোগসাজশ করে ধরে নিয়ে ১০ লাখ টাকা চাঁদা না দেয়ায় চলতি বছরের ৭ জুলাই ক্রসফায়ারের নামে তাকে হত্যা করে।
এতে টেকনাফ মডেল থানার বরখাস্ত হওয়া ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, হোয়াইক্ষ্যং পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর মশিউর রহমান, এএসআই আরিফুর রহমান, এসআই সুজিত চন্দ্র দে, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক মানস বড়ুয়া, এসআই অরুণ কুমার চাকমা, এসআই নাজিম উদ্দিন, এসআই মো. নাজিম উদ্দিন ভূঁইয়া, এএসআই রাম চন্দ্র দাশ, কনস্টেবল সাগর দেব, কনস্টেবল রুবেল শর্মা, হোয়াইক্ষ্যং ইউনিয়ন পরিষদের দফাদার কাঞ্জরপাড়ার মৌলভী সিরাজুল ইসলামের ছেলে মো. আমিনুল হককে আসামি করা হয়েছে। সাক্ষী করা হয়েছে ১০ জনকে।
কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সিনিয়র আইনজীবী আবদুল বারী ও মাহমুদুল হক আদালতে ফৌজদারি দরখাস্তটির গ্রহণযোগ্যতার শুনানিতে অংশ নেন।
উল্লেখ্য, গত ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফের মারিশবুনিয়া পাহাড়ে ভিডিও চিত্র ধারণ করে মেরিন ড্রাইভ দিয়ে কক্সবাজারের হিমছড়ি এলাকার নীলিমা রিসোর্টে ফেরার পথে শামলাপুর তল্লাশি চৌকিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান। এ ঘটনায় টেকনাফ থানার তৎকালীন ওসি প্রদীপসহ ৯ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। সেই মামলায় আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) তিন সদস্যকেও যুক্ত করা হয়েছে। বর্তমানে তারা কক্সবাজার জেলা কারাগারে।
সিনহা হত্যার পর ওসি প্রদীপসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্য গ্রেফতার হওয়ায় বিভিন্ন সময় হয়রানির শিকার ভুক্তভোগীরা পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা করতে উদ্যোগী হচ্ছে। ইতোমধ্যে ওসি প্রদীপের বিরুদ্ধে চারটি হত্যার অভিযোগ আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে।