করোনার বর্তমান পরিস্থিতিতে আজকে অ্যান্টিজেন্ট পরীক্ষার অনুমোদন দিয়েছে সরকার। তবে অ্যান্টিবডি পরীক্ষার অনুমোদন দেয়নি। এ বিষয়ে দেশের প্রখ্যাত অণুজীববিজ্ঞানী ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র উদ্ভাবিত কিটের (অ্যান্টিজেন ও অ্যান্টিবডি) গবেষক দলের প্রধান বিজ্ঞানী ড. বিজন কুমার শীল বলেছেন, ‘করোনা চলে গেলে অ্যান্টিজেনের দরকার নেই, পিসিআরের দরকার নেই। কিন্তু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দেখার জন্য কাকে ভ্যাকসিন দিতে হবে এবং ভ্যাকসিন দেয়ার পর তার মধ্যে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে কি না– এগুলো করতে হলে অ্যান্টিবডি টেস্ট লাগবে।’
‘অ্যান্টিবডি দীর্ঘমেয়াদি একটা টেস্ট। আরও পাঁচ বছর চলবে অ্যান্টিবডি টেস্ট। কে ভ্যাকসিন নেবে, সেটাও অ্যান্টিবডি কিটের মাধ্যমে টেস্ট করতে হবে। এর বিকল্প নেই। ভ্যাকসিন করে আসলাম, তার মানে এই নয় সবার অ্যান্টিবডি এসেছে। কার অ্যান্টিবডি এলো, কার এলো না– সেটা যাচাই করতে অ্যান্টিবডি কিটের কোনো বিকল্প নেই।’
সোমবার (২৪ আগস্ট) বিকেলে এসব কথা বলে ড. বিজন কুমার শীল। নিজেদের আবিষ্কৃত কিটের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সরকার আমাদের যে গাইডলাইন দিয়েছে, আমরা ইন্টারনাল ভেলিডেশন দিয়ে দিয়েছি ইতোমধ্যে। এখন এটা এক্সটারনাল ভেরিফিকেশন হবে, যেটা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) হওয়ার কথা। কিন্তু এখানে একটি সমস্যা তৈরি হয়েছে, স্যাম্পল সিলেকশনের ক্ষেত্রে ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ডে বা টেকনিক্যাল মাধ্যমে এটা করতে হবে। যেটি আমাদের দেশে এই মুহূর্তে নেই। তা আমদানি করতে হবে। আমদানি করার বিষয়ে যে এনওসি, সেটা গণস্বাস্থ্য সরকারের কাছ থেকে পেয়েছে। কিট এনে স্যাম্পলকে ক্যারাক্টরাইজড করে ১৩০ বা ১৪০টা স্যাম্পল নিয়ে আমাদের কিটকে পুনর্মূল্যায়ন করবে বিএসএমএমইউ। এরপর অনুমোদনের জন্য যাবে।’
কিট উদ্ভাবন দাবির পর দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও এখনও অনুমোদন পায়নি গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। এতে হতাশা চলে এসেছে কি না- জানতে চাইলে ড. বিজন কুমার শীল বলেন, ‘হতাশ হলে তো হবে না। হতাশ হলে সবই শেষ হয়ে গেল। আমরা বিজ্ঞানী, আমরা কখনও হতাশাগ্রস্ত হই না। যদি হতাম, তাহলে আপনার সঙ্গে মোবাইলে কথা বলতে পারতাম না। এই মোবাইলও তৈরি করেছে বিজ্ঞানীরা অনেক হতাশার মাঝখানে। সুতরাং বিজ্ঞানীরা কখনও হতাশাগ্রস্ত হয় না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা নিজেরা জানি, আমাদের কিটের পারফরম্যান্স কেমন। আমরা যথেষ্টসংখ্যক স্যাম্পল টেস্ট করেছি। আমাদের আত্মবিশ্বাস আছে যে, এটা বিশ্বের যেকোনো কিটের সমকক্ষ। বাংলাদেশে হয়েছে বলে এই না যে, এটা বাইরের কিটকে কমপিট করতে পারবে না। এ বিষয়ে আমাদের আত্মবিশ্বাসের অভাব নেই। আমাদের প্রক্রিয়া চলছে, দেখা যাক এটা কোন দিকে যায়।’