1. [email protected] : শেয়ার সংবাদ প্রতিবেদক : শেয়ার সংবাদ প্রতিবেদক
  2. [email protected] : শেয়ারসংবাদ.কম : শেয়ারসংবাদ.কম
  3. [email protected] : Zahir Islam : Zahir Islam
  4. [email protected] : muzahid : muzahid
  5. [email protected] : nayan : nayan
  6. [email protected] : khadija : khadija khadija
শনিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৩৮ অপরাহ্ন

বন্ধ হতে পারে এক ডজন জীবন বিমা কোম্পানির ব্যবসা

  • আপডেট সময় : সোমবার, ২২ মে, ২০২৩
insurance

নানা অনিয়মের সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে দেশে ব্যবসা করা বেশ কয়েকটি জীবন বীমা কোম্পানির আর্থিক অবস্থা দুর্বল হয়ে পড়েছে। কোম্পানিগুলোর আর্থিক অবস্থা এতটাই নাজুক হয়ে পড়েছে যে তারা গ্রাহকদের বিমা দাবি সঠিকভাবে পরিশোধ করতে পারছে না।

বিমা খাতে ইতিবাচক ইমেজ ফিরিয়ে আনার জন্য সরকারের উচ্চ মহল থেকে নির্দেশনা রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) প্রায় এক ডজন বিমা কোম্পানির ব্যবসা সাময়িক বন্ধ করার মতো সিদ্ধান্ত নিতে পারে। এরই মধ্যে একটি জীবন বিমা কোম্পানির ব্যবসা সাময়িক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

আইডিআরএ একটি সূত্র জানিয়েছে, কয়েকটি কোম্পানির অবস্থা খুবই খারাপ।এগুলো ভালো করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। কয়েক বছরের মধ্যে কোম্পানিগুলো অস্তিত্ব সংকটের মধ্যে পড়বে। এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি কোম্পানি সক্ষমতা না থাকায় গ্রাহকের দাবির টাকা পরিশোধ করতে পারছে না। সার্বিক দিক বিবেচনায় কয়েকটি কোম্পানির ব্যবসা সাময়িক বন্ধের পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে।

কয়েকটি কোম্পানি বন্ধ করার পরিকল্পনা আইডিআরএর নিজস্ব সিদ্ধান্ত নয় বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা। গোয়েন্দা সংস্থা ও সরকারের একটি অংশও এসব কোম্পানির ব্যবসা সাময়িক বন্ধের জন্য বলেছে। এক্ষেত্রে আর্থিক অবস্থা খুবই দুর্বল, বিনিয়োগে অনিয়ম, ব্যবস্থাপনা খাতে অতিরিক্ত ব্যয়, গ্রাহকের দাবি পরিশোধ করতে না পারা, লাইফ ফান্ডে টাকা না থাকা, অতিরিক্ত আর্থিক অনিয়ম আছে এমন কোম্পানিতে অতিরিক্ত কমিশন খরচ, সেসব কোম্পানির ব্যবসা বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

এদিকে আইডিআরএ’র তৈরি করা প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ধারাবাহিকভাবে জীবন বিমা কোম্পানিগুলোর দাবি পরিশোধের হার কমছে। সর্বশেষ ২০২২ সালে জীবন বিমা কোম্পানিগুলোতে ৩০ লাখ ২৮ হাজার ৯৩০ গ্রাহকের বিমা দাবি উত্থাপন হয়। এর আর্থিক মূল্য ১৩ হাজার ৮২৬ কোটি ৪৫ লাখ টাকা।

উত্থাপন হওয়া এই দাবির বিপরীতে কোম্পানিগুলো ১৮ লাখ ৯২ হাজার ৯৯২টি দাবি পরিশোধ করেছে। যার আর্থিক মূল্য ৯ হাজার ২৫৯ কোটি ৩২ লাখ টাকা। অর্থাৎ ১১ লাখ ৩৫ হাজার ৯৩৮ গ্রাহকের ৪ হাজার ৫৬৭ কোটি ১৩ লাখ টাকা বিমা দাবি পরিশোধ করা হয়নি। এই হিসাবে ২০২২ সালে জীবন বিমা কোম্পানিগুলোর দাবি পরিশোধের হার ৬২.৫০ শতাংশ। অর্থাৎ ৩৭.৫০ শতাংশ গ্রাহক বিমা দাবির টাকা পাননি।

এর আগে ২০২১ সালে ২৪ লাখ ৬৮ হাজার ৪১০টি দাবি উত্থাপিত হয় এবং পরিশোধ করা হয় ১৭ লাখ ৩৭ হাজার ৭৪৩টি। দাবি পরিশোধের হার ছিল ৭০.৪০ শতাংশ। ২০২০ সালে ১৯ লাখ ৭ হাজার ৫৫৯টি বিমা দাবি উত্থাপিত হয় এবং পরিশোধ করা হয় ১৬ লাখ ১৭ হাজার ৯১৬টি। পরিশোধের হার ছিল ৮৪.৮২ শতাংশ।

তার আগে ২০১৯ সালে ২০ লাখ ৭৪ হাজার ৮১৬টি বিমা দাবি উত্থাপন হয় এবং পরিশোধ করা হয় ১৮ লাখ ৪৪ হাজার ১৪৬টি বিমা দাবি। দাবি পরিশোধের হার ছিল ৮৮.৮৮ শতাংশ। আর ২০১৮ সালে ২৪ লাখ ২৬ হাজার ৬৩৭টি বিমা দাবি উত্থাপন হয় এবং পরিশোধ করা হয় ২১ লাখ ৬৯ হাজার ৫৬টি। দাবি পরিশোধের হার ছিল ৮৯.৩৯ শতাংশ।

বিমা খাতের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে আইডিআরএ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জয়নুল বারী সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, গত বছর মোট ৯ হাজার ৫৫৯ কোটি টাকা বিমা দাবি পরিশোধ করা হয়েছে। যেটা তার আগের বছর ছিল ৭ হাজার ২২৮ কোটি টাকা। কিন্তু আমরা যদি আনুপাতিক হারে দেখি ২০২২ সালে মাত্র ৬৬ শতাংশ বিমা দাবি পরিশোধ হয়েছে। অর্থাৎ একশটা পলিসির দাবি করা হলে ৬৬ শতাংশ নিষ্পত্তি করা হয়। আগের বছর এটা ছিল ৬৮ শতাংশ। তার আগের বছর ৮৭ শতাংশ এবং তার আগের বছর ৮৯ শতাংশ। মানে প্রতি বছর আমরা বিমা দাবি পরিশোধের ক্ষেত্রে পিছিয়ে যাচ্ছি। অর্থাৎ প্রায় ৪০ ভাগের মতো মানুষ বিমা করে বিমার ন্যায্য দাবি পাচ্ছেন না। এটা বিমার ভবিষ্যতের জন্য অশনি সংকেত।

তিনি বলেন, যে বিমা কোম্পানিগুলো দাবি পরিশোধ করতে পারছে না, তাদের বেশিরভাগ ইচ্ছা করে করছে না তা নয়। বেশিরভাগের সেই সক্ষমতাই নেই। তারা সক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে। কারণ তারা অপচয় করেছে, ব্যবস্থাপনা ব্যয় মাত্রাতিরিক্ত, দুইশ-তিনশ গুণ করেছে। লাইফ ফান্ডে টাকা রাখেনি। বিনিয়োগ করেছে অলাভজনক খাতে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে মন্দ বিনিয়োগ বা ইচ্ছাকৃতভাবে বিনিয়োগের নামে টাকা তছরুপ করেছে। এখন যখন তাদের বিমা দাবি পরিশোধের সময় এসেছে, তারা বিমা দাবি পরিশোধ করতে পারছে না। যাই বা করছে নতুন প্রিমিয়াম সংগ্রহ করে, সেখান থেকে দাবি পরিশোধ করছে। এতে ভবিষ্যতের জন্য আরও দায় বাড়ছে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের কাছে যে তথ্য আছে, তাতে অন্তত ১০টি বিমা কোম্পানির অস্তিত্ব দুই-চার বছরের মধ্যে মারাত্মক সংকটে পড়বে। প্রতিদিন আমাদের কাছে কয়েকশ দরখাস্ত আসে, বিমা দাবি পাচ্ছে না। আমাদের কাছে যারা আসছেন, তারা দীর্ঘদিন বিমা কোম্পানির মাঠ পর্যায়ের অফিস ঘুরে আসছেন। ভয়ঙ্কর বিষয় হলো, এখন এসব মানুষ থানায় গিয়ে, কোর্টে গিয়ে মামলা করছে। উকিল নোটিশ দিচ্ছে।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ