1. [email protected] : শেয়ার সংবাদ প্রতিবেদক : শেয়ার সংবাদ প্রতিবেদক
  2. [email protected] : শেয়ারসংবাদ.কম : শেয়ারসংবাদ.কম
  3. [email protected] : Zahir Islam : Zahir Islam
  4. [email protected] : muzahid : muzahid
  5. [email protected] : nayan : nayan
  6. [email protected] : khadija : khadija khadija
শনিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৪, ১২:২৯ অপরাহ্ন

সবচেয়ে বেশি আর্থিক ঝুঁকিতে পুঁজিবাজারের চার ব্যাংক

  • আপডেট সময় : বুধবার, ২২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩
bangladesh-bank-

ব্যাংক খাতে বিশেষ ছাড়ে কমানো হয়েছে খেলাপি ঋণ। সরকারি-বেসরকারি খাতের ৮ ব্যাংকে কাগজে কমলে মন্দ ঋণ কমলেও এসব ঋণের বিপরীতে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা সঞ্চিতি বা প্রভিশন রাখতে ব্যর্থ হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত বেসিক, অগ্রণী, রূপালী, বেসরকারি খাতের বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক, মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক এবং বিশেষায়িত বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক (বিকেবি)। এসব ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১৯ হাজার ৪৬ কোটি টাকা।

ব্যাংক খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ব্যাংক যেসব ঋণ বিতরণ করে, ওই ঋণের গুণমান বিবেচনায় নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ নিরাপত্তা সঞ্চিতি (প্রভিশন) হিসেবে জমা রাখতে হয়। কোনো ব্যাংকের ঋণ শেষ পর্যন্ত মন্দঋণে (খেলাপি) পরিণত হলে পরে যেন আর্থিকভাবে ঝুঁকিতে না পড়ে, এজন্যই প্রভিশন রাখার বিধান রয়েছে। এখন কোনো ব্যাংকে প্রভিশন ঘাটতি থাকলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কোনো লভ্যাংশ ঘোষণা করতে পারে না। এক সময় কোনো ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি থাকলে শুধু সতর্ক ও ঘাটতি মেটাতে দিক নির্দেশনা দিতো কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে সংশোধিত ব্যাংক কোম্পানি আইনে কোনো ব্যাংকে টানা দু`বছর ঘাটতি থাকলে তার বড় অঙ্কের জরিমানাসহ লাইসেন্স বাতিলের কথা বলা হয়েছে। এসব কারণে বিভিন্ন উপায়ে প্রভিশন ঘাটতি মেটানোর চেষ্টা করে ব্যাংকগুলো।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ডিসেম্বর শেষে সরকারি তিন ব্যাংক, বেসরকারি চার এবং একটি বিশেষায়িত ব্যাংক ১৯ হাজার ৪৬ কোটি ২৩ লাখ টাকার প্রভিশন ঘাটতিতে পড়েছে। তবে কোনো কোনো ব্যাংক প্রয়োজনের চেয়ে অতিরিক্ত অর্থ নিরাপত্তা সঞ্চিতি হিসেবে রেখে দেওয়ায় সার্বিকভাবে ব্যাংক খাতে ঘাটতির পরিমাণ কিছুটা কম। ফলে ব্যাংকিং খাতের সার্বিকভাবে নিরাপত্তা সঞ্চিতির ঘাটতি ১১ হাজার ৯ কোটি টাকা।

রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঘাটতি রয়েছে সরকারি বেসিক ব্যাংকের। ডিসেম্বরে ব্যাংকটির প্রভিশন ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৫৩৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। এর পরেই রয়েছে অগ্রণী ব্যাংক। ব্যাংকটির প্রভিশন ঘাটতি ৪ হাজার ৪২২ কোটি ১৫ লাখ টাকা। তালিকায় তৃতীয় স্থানে রয়েছে রূপালী ব্যাংক, তাদের ঘাটতি ২ হাজার ৮১৪ কোটি ৬১ লাখ টাকা।

বেসরকারি ব্যাংকের মধ্যে বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত ন্যাশনাল ব্যাংকের ঘাটতি সবচেয়ে বেশি। ব্যাংকটির প্রভিশন ঘাটতির পরিমাণ ৬ হাজার ৬১৭ কোটি ৭১ লাখ টাকা। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ১৭১ কোটি ১৬ লাখ টাকা, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের ১৩৯ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। বিশেষায়িত বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক (বিকেবি) এর প্রভিশন ঘাটতির পরিমাণ ৩ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। এছাড়া বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি ৩৪৩ কোটি ৭২ লাখ টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ও অর্থনীতিবিদ ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, খেলাপি ঋণের কারণে প্রভিশন ঘাটতিতে পড়েছে বিভিন্ন ব্যাংক। যাদের প্রভিশন ঘাটতি থাকে নিয়ম অনুযায়ী তারা লভ্যাংশ ঘোষণা করতে পারে না। আবার যেসব ব্যাংক প্রয়োজনীয় প্রভিশন সংরক্ষণে ব্যর্থ হয়, তাদের মূলধন ঘাটতিতে পড়ার শঙ্কা থাকে। এতে করে ব্যাংকের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। আমানতকারীদের অর্থের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

তিনি বলেন, প্রভিশন ঘাটতি কমাতে হলে খেলাপি ঋণ কমাতে হবে। তবে বিশেষ ছাড় দিয়ে কাগজে কলমে নয়, আদায় করে খেলাপি ঋণ কমাতে হবে। আর যারা ঋণ পরিশোধ করতে না তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য বলছে, ২০২২ সালের ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকিং খাতের মোট ঋণ স্থিতি দাঁড়িয়েছে ১৪ লাখ ৭৭ হাজার ৭৮৮ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। এর মধ্যে খেলাপিতে পরিণত হয়েছে এক লাখ ২০ হাজার ৬৫৬ কোটি টাকা। যা মোট ঋণের ৮ দশমিক ১৬ শতাংশ। অর্থাৎ উচ্চ খেলাপির ঝুঁকিতে রয়েছে দেশের ব্যাংক খাত। কারণ আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী খেলাপি ঋণের হার সর্বোচ্চ ৩ শতাংশ সহনীয় বলে ধরা হয়।

২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাস শেষে ব্যাংকিং খাতের মোট ঋণ স্থিতি ছিল ১৪ লাখ ৩৬ হাজার ১৯৯ কোটি ৮২ লাখ টাকা। এর মধ্যে খেলাপিতে পরিণত হয় এক লাখ ৩৪ হাজার ৩৯৬ কোটি টাকা। যা মোট ঋণের ৯ দশমিক ৩৬ শতাংশ।

একই বছরের জুন শেষে ব্যাংকিং খাতের মোট বিতরণ করা ঋণ ছিল ১৩ লাখ ৯৮ হাজার ৫৯২ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপির পরিমাণ ছিল এক লাখ ২৫ হাজার ২৫৮ কোটি টাকা, যা মোট বিতরণ করা ঋণের ৮ দশমিক ৯৬ শতাংশ। তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৯ হাজার ১৩৯ কোটি টাকা।

২০২১ সালের ডিসেম্বর খেলাপি ঋণ ছিল এক লাখ ৩ হাজার ২৭৪ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৭ দশমিক ৯৩ শতাংশ। এ হিসাবে গেল বছর (২০২২ সাল) খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১৭ হাজার ৩৮৩ কোটি টাকা।

তবে ত্রৈমাসিকের তুলনা করলে সেপ্টেম্বর প্রান্তিকের তুলনায় ডিসেম্বরে খেলাপি ঋণ ১৩ হাজার ৭৩৯ কোটি টাকা বা ১ দশমিক ২০ শতাংশ পয়েন্ট হ্রাস পেয়েছে।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ