দেশের বৃহৎ পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স সূচকটি রবিবার (০৯ আগস্ট) ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উত্থান হয়েছে। এদিন ডিএসইএক্স বেড়েছে ১৮০ পয়েন্ট। যা সূচকটি চালু হওয়ার সাড়ে ৭ বছরের মধ্যে একদিনের ব্যবধানে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উত্থান।
ডিএসইতে ডিএসইএক্স সূচকটি ২০১৩ সালের ২৭ জানুয়ারি ৪০৫৬ পয়েন্ট নিয়ে যাত্রা শুরু করে। এরপরে বিগত সাড়ে ৭ বছরের মধ্যে সূচকটি আজ দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উত্থান হয়েছে। এর আগে চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি ইতিহাসের সর্বোচ্চ অর্থাৎ ২৩২ পয়েন্ট উত্থান হয়েছিল। আর চলতি বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি তৃতীয় সর্বোচ্চ অর্থাৎ ১৬৯ পয়েন্ট উত্থান হয়েছিল। এরও আগে ২০১৫ সালের ১০ মে সূচকটি একদিনের ব্যবধানে চতুর্থ সর্বোচ্চ বা ১৫৫ পয়েন্ট বেড়েছিল।
দীর্ঘ দিন ধরে পুঁজিবাজার মন্দাবস্থায় ছিল। এতে বিনিয়োগকারীদের নাভিশ্বাস উঠে যায়। এই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী পুঁজিবাজারের উন্নয়নে গত ১৬ জানুয়ারি উচ্চ পর্যায়ের নীতি-নির্ধারকদের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং কয়েকটি নির্দেশনা দেন। প্রধানমন্ত্রীর ওই বৈঠকের পর ১৯ জানুয়ারি সূচকটি ইতিহাসের সর্বোচ্চ বাড়ে। কিন্তু পরবর্তীতে পুঁজিবাজার আবার মন্দায় পতিত হয়। সর্বশেষ গত ১০ ফেব্রুয়ারি পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য প্রত্যেক ব্যাংককে ২০০ কোটি টাকা করে ফান্ড গঠনের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক এক সার্কুলার জারি করে। ওই সার্কুলার জারির পর থেকে পুঁজিবাজারে বেশ কয়েকদিন উত্থান প্রবণতা বজায় থাকে।
এরপর আবার পতনে ফিরে যায় পুঁজিবাজার। বাজারকে পতনের হাত থেকে বাঁচাতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) সূচকে সার্কিট ব্রেকার বেধে দেয়। এতে করে পুঁজিবাজারের পতন আটকে যায়। তবে দীর্ঘ দিন পুঁজিবাজারের গতিও থামকে ছিল। সবশেষ ঈদ-উল-আযহার পর বাজারে গতি ফিরতে শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় আজ বড় উত্থান হয়েছে পুঁজিবাজারে।
আজ ডিএসইর অপর সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ৪৭ পয়েন্ট, ডিএসই-৩০ সূচক ৬৬ পয়েন্ট এবং নতুন চালু হওয়া সিডিএসইটি সূচক ৩৮ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১০৫৮, ১৫৪০ ও ৮৯৮ পয়েন্টে।
ডিএসইতে আজ টাকার পরিমাণে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ১২৮ কোটি ৬৪ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট। যা আগের দিন থেকে ২৯২ কোটি ১১ লাখ টাকা বেশি। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৮৩৬ কোটি ৫৩ লাখ টাকার।
ডিএসইতে আজ ৩৫৫টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২৯৩টির বা ৮২ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে। দর কমেছে ৪২টির বা ১২ শতাংশের এবং ২০টি বা ৬ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই এদিন ৪৮৭ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২ হাজার ৮৮৯ পয়েন্টে। এদিন সিএসইতে হাত বদল হওয়া ২৭৪টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার দর বেড়েছে ২১০টির, কমেছে ২৯টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৫টির দর। আজ সিএসইতে ২৬ কোটি ৭৮ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।