দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সার্বিক সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে দশমিক ৩১ শতাংশ। চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে ঊর্ধ্বমুখিতার মধ্য দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে দেশের পুঁজিবাজারে।সূচকের পাশাপাশি এক্সচেঞ্জটিতে দৈনিক লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে ৪৬ শতাংশ। দেশের আরেক পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) গতকাল সূচক ও দৈনিক লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে। তবে পুঁজিবাজারে সূচক ও লেনদেনে ঊর্ধ্বমুখিতা দেখা গেলেও বেশির ভাগ খাতেই নেতিবাচক রিটার্ন এসেছে।
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, গতকাল লেনদেন শুরুর প্রথম ১৫ মিনিটেই শেয়ার কেনার চাপে সূচকে ৫০ পয়েন্ট যোগ হয়। তবে এর পর থেকেই বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করতে শুরু করেন। বিক্রয়চাপ বেড়ে যাওয়ার কারণে শেষ পর্যন্ত শুরুর উত্থান ধরে রাখা সম্ভব হয়নি। অবশ্য কিছু বড় মূলধনি কোম্পানির শেয়ারে ক্রয়চাপ থাকার কারণে দিন শেষে ইতিবাচক প্রবণতায় লেনদেন শেষ হয়েছে। তবে সূচকে মিশ্র প্রবণতার কারণে গতকাল বেশির ভাগ খাতেই নেতিবাচক রিটার্ন এসেছে।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গতকাল সকাল সাড়ে ৯টায় লেনদেন শুরুর পর প্রথম ১৫ মিনিট পর্যন্ত ঊর্ধ্বমুখী ছিল ডিএসইএক্স। শেয়ার বিক্রির চাপে এর পর থেকেই পয়েন্ট হারাতে শুরু করে সূচকটি। শেষ ঘণ্টায় বিক্রয়চাপ তীব্র হওয়ার কারণে আরো পয়েন্ট হারাতে থাকে সূচক। তবে দিনভর সূচকে অস্থিরতা দেখা গেলেও শেষ পর্যন্ত গতকাল আগের দিনের তুলনায় ২০ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ৫৩৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে ডিএসইএক্স। এর আগের কার্যদিবসে যা ছিল ৬ হাজার ৫১৫ পয়েন্টে। অন্য সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসইর ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ গতকাল ১৭ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ৩৬৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আগের দিন শেষে যা ছিল ২ হাজার ৩৪৬ পয়েন্টে। শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস গতকাল দিন শেষে ৬ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৪৩৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আগের দিন শেষে যা ছিল ১ হাজার ৪৩০ পয়েন্টে। গতকাল সূচকের উত্থানে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা ছিল বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস, ওরিয়ন ফার্মাসিউটিক্যালস, সি পার্ল বিচ রিসোর্টস অ্যান্ড স্পা, ওরিয়ন ইনফিউশন ও পূবালী ব্যাংকের শেয়ারের।
ডিএসইতে গতকাল ১ হাজার ৮১৪ কোটি টাকার সিকিউরিটিজ লেনদেন হয়েছে। যেখানে আগের কার্যদিবসে লেনদেন ছিল ১ হাজার ২৪৩ কোটি টাকা। গতকাল এক্সচেঞ্জটিতে লেনদেন হওয়া ৩৭১টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড ও করপোরেট বন্ডের মধ্যে দিন শেষে দর বেড়েছে ১০৯টির, কমেছে ১৪০টির আর অপরিবর্তিত ছিল ১২২টি সিকিউরিটিজের বাজারদর।
খাতভিত্তিক লেনদেনচিত্রে দেখা যায়, গতকাল ডিএসইর মোট লেনদেনের ২৮ দশমিক ২ শতাংশ দখলে নিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে ওষুধ ও রসায়ন খাত। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৪ দশমিক ৮ শতাংশ দখলে নিয়েছে বিবিধ খাত। ৭ দশমিক ৪ শতাংশ লেনদেনের ভিত্তিতে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে প্রকৌশল খাত। মোট লেনদেনের ৬ দশমিক ৭ শতাংশের ভিত্তিতে চতুর্থ অবস্থানে ছিল তথ্যপ্রযুক্তি খাত। আর খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের দখলে ছিল লেনদেনের ৬ দশমিক ১ শতাংশ। গতকাল পুঁজিবাজারে ভ্রমণ ও অবকাশ খাতে সবচেয়ে বেশি ৫ দশমিক ৩ শতাংশ ইতিবাচক রিটার্ন এসেছে। অন্যদিকে সবচেয়ে বেশি নেতিবাচক রিটার্ন ছিল আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও পাট খাতে ১ শতাংশ। এছাড়া আরো ৭ খাতের শেয়ারে গতকাল নেতিবাচক রিটার্ন এসেছে।