পুঁজিবাজারে জন্য সুখবরের ইঙ্গিত দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বাজেটে যুক্ত হচ্ছে নতুন প্রস্তাব। বিদেশে পাচার হয়ে যাওয়া টাকা দেশে ফিরে এলে তার একটি অংশ পুঁজিবাজারেও বিনিয়োগ হবে। তাতে পুঁজিবাজার লাভবান হবে বলে বুধবার (১৫ জুন) সরকারী ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রীসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেছিলেন অর্থমন্ত্রী।
অর্থমন্ত্রী আরো বলেছিলেন, বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ও চলমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে মন্দার পূর্বাভাস পাওয়া যাচ্ছে। এ অবস্থায় আগামী অর্থবছরে আমাদের কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হতে পারে। তাই আর্থিক নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অধিক বিচক্ষণতা ও দূরদর্শী পন্থা অবলম্বন করতে হবে। অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে সরকারি ব্যয় নির্বাহের জন্য এক দিকে আমাদের অধিক পরিমাণে রাজস্ব জোগান দিতে হবে, অন্য দিকে বেসরকারি খাতেও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে গতিশীলতা আনতে হবে। এ অবস্থায় বিদেশে অর্জিত অর্থ ও সম্পদ অর্থনীতির মূল স্রোতে আনার মাধ্যমে বিনিয়োগ ও আর্থিক প্রবাহ বৃদ্ধির লক্ষ্যে তিনি আয়কর অধ্যাদেশে নতুন বিধান যুক্ত করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন।
এছাড়া, পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম জানিয়েছেন, আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের মাধ্যমে কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়ার প্রস্তাব বিবেচনাযোগ্য। কারণ কালো টাকা অর্থনীতির মূল স্রোতে আনার লক্ষ্যে এ প্রস্তাব বিবেচনার দাবি রাখে।
পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞরা অর্থমন্ত্রী ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রীর এমন মন্তব্যকে ইতিবাচক মনে করছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আসলে এর থেকে যদি পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ হয় তাহলে এটা অবশ্যই বাজারের জন্য অনেক বড় ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। বাজারের তারল্য প্রবাহ বাড়াতে সাহায্য করবে। ফলে বাজার ও বিনিয়োগকারীদের মনে চাঙা ভাব ফিরে আসবে। যদিও পাচার হওয়া টাকা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করার ঘোষণা দেওয়ার পর থেকেই বাজার অনেক ভালো হচ্ছে।
বিনিয়োগকারীদের মতে, পুঁজিবাজারে কালো টাকা বিনিয়োগের যে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে তা বাস্তবায়ন হলে তা বাজারের জন্য ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবে। তারা মনে করেন, এর মাধ্যমে বিনিয়োগের বড় একটা অংশ পুঁজিবাজারে যুক্ত হবে। আর বিনিয়োগ বাড়লে বাজারের গতি বাড়ে এটাই স্বাভাবিক। যদি এই সুযোগ না দেওয়া হয় তাহলে অনেক বড় একটা অর্থ মূল অর্থনীতির বাইরে থেকে যাবে। যা বাজারের জন্য নেতিবাচক। তাই সংশোধিত বাজেটে এই প্রস্তাবনাগুলো অবশ্যই যুক্ত করতে পারে বলে মনে করেন বিনিয়োগকারীরা।
পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারাও পুঁজিবাজারে কালো টাকা বিনিয়োগ চায়। তারা জানান, কালো টাকা সাদা করা ও পাচার হওয়া অর্থ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করার বিষয়টি অবশ্যই পুঁজিবাজারের জন্য সুখবর।