পুঁজিবাজারে তালিকাভূক্ত সিমেন্ট খাতের সাত কোম্পানির মধ্যে পাঁচ কোম্পানির রিজার্ভ রয়েছে পরিশোধিত মূলধনের কয়েকগুণ বেশি। একটি কোম্পানির রিজার্ভ পরিশোধিত মূলধনের চেয়ে কম। আর রিজার্ভ নেগেটিভ রয়েছে একটি কোম্পানির। রিজার্ভ পরিশোধিত মূলধনের চেয়ে বেশি থাকা এই ৫ কোম্পানির মধ্যে রয়েছে হাইডেলবার্গ, প্রিমিয়ার, কনফিডেন্স, মেঘনা এবং এমআই সিমেন্ট। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) থেকে এই তথ্য জানা যায় ।
প্রাপ্ত তথ্য মতে , রিজার্ভ কম থাকা একটি কোম্পানি হলো লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ লিমিটেড। আর রিজার্ভ নেগেটিভ থাকা কোম্পানিটি হচ্ছে আরামিট সিমেন্ট লিমিটেড। আর রিজার্ভ বেশি থাকা কোম্পানিগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ রিজার্ভ রয়েছে হাইডেলবার্গ সিমেন্ট লিমিটেডের।
হাইডেলবার্গ সিমেন্ট:কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন ৫৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা। আর রিজার্ভে রয়েছে ৩২৮ কোটি ৩০ লাখ টাকা। পরিশোধিত মূলধনের চেয়ে রিজার্ভ বেশি রয়েছে ২৭১ কোটি ৮০ লাখ টাকা বা প্রায় ৮ গুণ। সর্বশেষ শেয়ারদর অনুযায়ি কোম্পানিটির পিই রেশিও অবস্থান করছে ২০.৪০ পয়েন্টে।
সর্বশেষ তিন প্রান্তিকে (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর’২১) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ৯ টাকা ৮৮ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে কোম্পানির শেয়ার প্রতি লোকসান ছিলো ৩ টাকা ০২ পয়সা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি সম্পদ মূল্য দাঁড়িয়েছে ৭৪ টাকা ০৪ পয়সা।
উল্লেখ্য, চলতি অর্থবছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) কোম্পানিটির মুনাফা নেতিবাচক অবস্থায় রয়েছে। তৃতীয় প্রান্তিকে এর শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে ১ টাকা ৯১ পয়সা। যা আগের বছর তৃতীয় প্রান্তিকে শেয়ার প্রতি লোকসান ছিল ৪৮ পয়সা।
প্রিমিয়ার সিমেন্ট: কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন ১০৫ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। আর কোম্পানিটির রিজার্ভে রয়েছে ৩৭৪ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধনের চেয়ে রিজার্ভ বেশি রয়েছে ২৬৯ কোটি ৪৩ লাখ টাকা বা ৩.৫৫ গুণ। সর্বশেষ কোম্পানিটির পিই রেশিও অবস্থান করছে ২০.৪০ পয়েন্টে।
সর্বশেষ প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর’২১) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ১২ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে কোম্পানির শেয়ার প্রতি আয় ছিলো ৮১ পয়সা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি সম্পদ মূল্য দাঁড়িয়েছে ৭৭ টাকা ৯৫ পয়সা।
কনফিডেন্স সিমেন্ট: কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন ৭৮ কোটি ২৩ লাখ টাকা। আর কোম্পানিটির রিজার্ভে রয়েছে ৩৫৩ কোটি ১৫ লাখ টাকা। কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধনের চেয়ে রিজার্ভ বেশি রয়েছে ২৭৪ কোটি ৯২ লাখ টাকা বা সাড়ে চার গুণ। সর্বশেষ কোম্পানিটির পিই রেশিও অবস্থান করছে ১২.৪৯ পয়েন্টে।
সর্বশেষ প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর’২১) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ২ টাকা ৩২ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে কোম্পানির শেয়ার প্রতি আয় ছিলো ৩ টাকা ৩৯ পয়সা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি সম্পদ মূল্য দাঁড়িয়েছে ৭৬ টাকা ৬১ পয়সা।
মেঘনা সিমেন্ট: কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন ২৭ কোটি ২৮ লাখ টাকা। আর কোম্পানিটির রিজার্ভে রয়েছে ৫৭ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধনের চেয়ে রিজার্ভ বেশি রয়েছে ৩০ কোটি টাকা বা দ্বিগুণ। সর্বশেষ কোম্পানিটির পিই রেশিও অবস্থান করছে ৪১.০৩ পয়েন্টে।
সর্বশেষ প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর’২১) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ৪৬ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে কোম্পানির শেয়ার প্রতি আয় ছিলো ৪৬ পয়সা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি সম্পদ মূল্য দাঁড়িয়েছে ৭০ টাকা ৬১ পয়সা।
এমআই সিমেন্ট: কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন ১৪৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা। আর কোম্পানিটির রিজার্ভে রয়েছে ২৪৪ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধনের চেয়ে রিজার্ভ বেশি রয়েছে ৯৬ কোটি টাকা বা ১.৬৭ গুণ। সর্বশেষ কোম্পানিটির পিই রেশিও অবস্থান করছে ৩১.০৬ পয়েন্টে।
সর্বশেষ প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর’২১) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ৫৪ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে কোম্পানির শেয়ার প্রতি আয় ছিলো ৫১ পয়সা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি সম্পদ মূল্য দাঁড়িয়েছে ৫৩ টাকা ২৩ পয়সা।
রিজার্ভ কম ও নেগেটিভে থাকা লাফার্জহোলসিম এবং আরামিট সিমেন্ট:
লাফার্জহোলসিম : কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন ১১৬১ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। আর কোম্পানিটির রিজার্ভে রয়েছে ৫৬৭ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধনের চেয়ে রিজার্ভ কম রয়েছে ৫৯৪ কোটি ১৭ লাখ টাকা বা ০.৫০ গুণ। সর্বশেষ কোম্পানিটির পিই রেশিও অবস্থান করছে ২০.৫৫ পয়েন্টে।
সর্বশেষ তিন প্রান্তিকে (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর’২১) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ২ টাকা ৬৬ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে কোম্পানির শেয়ার প্রতি আয় ছিলো ১ টাকা ২৯ পয়সা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি সম্পদ মূল্য দাঁড়িয়েছে ১৬ টাকা ৬১ পয়সা।
আরামিট সিমেন্ট: কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন ৩৩ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। আর কোম্পানিটির রিজার্ভে নেগেটিভ রয়েছে ৬২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধনের চেয়ে রিজার্ভ নেগেটিভ রয়েছে দ্বিগুণ। সর্বশেষ কোম্পানিটির পিই রেশিও অবস্থান করছে নেগেটিভ পয়েন্টে।
সর্বশেষ প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর’২১) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে ১ টাকা ৯৬ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে কোম্পানির শেয়ার প্রতি লোকসান ছিলো ১ টাকা ৩২ পয়সা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি সম্পদ মূল্য দাঁড়িয়েছে ২৭ টাকা ১৯ পয়সা।