বেশ কিছুদিন ধরেই অস্বাভাবিক হারে দর বাড়ছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আর্থিক খাতের কোম্পানি জিএপি ফাইন্যান্সের। এরপরও অদৃশ্য কারণে ডিএসইর পক্ষ থেকে কোম্পানিটিকে কোনো তদন্ত নোটিশ পাঠানো হচ্ছেনা। বর্তমানে কোম্পানিটি গত ২ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ দরে লেনদেন হচ্ছে।
ডিএসই থেকে জানা যায়, আজ ডিএসইতে কোম্পানিটির শেয়ার দর আগের দিনের তুলনায় ৭ পয়সা বা ২.৬৩ শতাংশ দর বেড়ে সর্বশেষ ২৭ টাকা ৩০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে। এদিন কোম্পানিটির মোট এক কোটি ৪৬ লাখ ৬৯ হাজার ৬৯৪টি শেয়ার ৩ হাজার ৪৩৮বার হাতবদল হয়, যার বাজারমূল্য ৪০ কোটি ১৯ লাখ ১৪ হাজার টাকা।
গত ৭ কার্যদিবসে কোম্পানিটির দর বেড়েছে ৫ টাকা ৪০ পয়সা বা ২৪.৬৫ শতাংশ। গত ৭ কার্যদিবসের মধ্যে নামে মাত্র দর কমছে। চলতি মাসেই শেষ হবে কোম্পানিটির আর্থিক বছর। লভ্যাংশ ঘোষণা করতে আরও অন্তত তিন মাস সময় বাকি রয়েছে। কিন্ত এর আগেই কোম্পানিটির ধারাবাহিক দর বৃদ্ধি স্বাভাবিকভাবে দেখছেন না বাজার সংশ্লিষ্টরা ও বিনিয়োগকারীরা। এছাড়া কোম্পানিটি অতীতে খুব একটা সন্তোষজনক লভ্যাংশ দেয়নি।
সর্বশেষ অর্থবছরের অর্থাৎ ২০২০ সালে বিনিয়োগকারীদের কোম্পানিটি ১০ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দিয়েছে। আগের বছর ২০১৯ সালে ১০.৫০ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দিয়েছিল। তারও আগের বছর ২০১৮ সালে ১৮ ক্যাশ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছিল।
বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, যে কোনো কোম্পানির দর বাড়তে বা কমতেই পারে। কিন্ত একটানা বৃদ্ধি পাওয়া বা কমে যাওয়াটা স্বাভাবিক বলে ধরে নেয়া যায় না। কোম্পানিটির দর উচ্চমূল্যায়িত হওয়ার আগেই তা নিয়ন্ত্রণে আনা উচিত। এজন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত কোম্পানিটির দর বৃদ্ধির কারণ খতিয়ে দেখা। যাতে বিনিয়োগকারীরা হুজুগে এ শেয়ারে বিনিয়োগ করে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।
তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত ০১ ডিসেম্বর (বুধবার) কোম্পানিটির উদ্বোধনী দর ছিল ২১ টাকা ৯০ পয়সা। আজ ০৯ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার কোম্পানিটির শেয়ারদর দাঁড়িয়েছে ২৭ টাকা ৩০ পয়সায়। অর্থাৎ ৭ কার্যদিবসে কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে ৫ টাকা ৪০ পয়সা বা ১৯.৭৮ শতাংশ। অথচ গত ৭ দিন পুঁজিবাজার মন্দা প্রবণতায়ই বেশি ছিল।
এদিকে, ২০১২ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া কোম্পানিটির অনুমোদিত ও পরিশোধিত মূলধন যথাক্রমে- ২০০ কোটি টাকা ও ১৫৭ কোটি ৬ লাখ ৯০ হাজার টাকা। বর্তমানে কোম্পানিটির রিজার্ভের পরিমাণ মাত্র ১৫৫ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। কোম্পানিটির ১৫ কোটি ৭০ লাখ ৬৮ হাজার ৫৮৫টি শেয়ারের মধ্যে ৩৫.৫০ শতাংশ উদ্যোক্তা পরিচালক, ১৭.১৭ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী এবং ৪৭.৩৩ শতাংশ শেয়ার সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে।
সর্বশেষ শেয়ারধারণ অনুযায়ি, গত সেপ্টেম্বর মাসের তুলনায় অক্টোবর মাসে কোম্পানিটিতে উদ্যোক্তা ও প্রাতিষ্ঠানিক শেয়ার কমেছে এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের শেয়ার বেড়েছে। সেপ্টেম্বর মাসে উদ্যোক্তাদের শেয়ার ছিল ৩৫.৫১ শতাংশ, যা অক্টোবর মাসে ০.০১ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৩৫.৫০ শতাংশে।
অন্যদিকে, সেপ্টেম্বর মাসে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের শেয়ার ছিল ২৫.১৯ শতাংশ, যা অক্টোবর মাসে কমে দাঁড়িয়েছে ১৭.১৭ শতাংশে।
আর সাধারণ বিনিয়োগকারীদের শেয়ার সেপ্টেম্বর মাসে ৩৯.৩০ শতাংশ থেকে বেড়ে অক্টোবর মাসে দাঁড়িয়েছে ৪৭.৩৩ শতাংশে।