করোনাভাইরাস ভীতির পাশাপাশি ফ্লোর প্রাইস ভীতি কাটিয়ে উঠতে শুরু করেছেন বিনিয়োগকারীরা। সে কারণে তারা ধীরে ধীরে বাজারে ফিরে আসছেন, বাড়াচ্ছেন নিজেদের অংশগ্রহণ, যার ফলে আস্তে আস্তে বাজারচিত্র পরিবর্তিত হচ্ছে। কিছুটা অগ্রগতি হচ্ছে লেনদেনেও, যা সাম্প্রতিক বাজারচিত্রে দেখা যায়।
গতকালের লেনদেন চিত্র লক্ষ করলে দেখা যায়, দীর্ঘদিন মূল মার্কেটে ১০০ কোটি টাকার ওপরে লেনদেন হয়। ৩১ মে লেনদেন চালু হওয়ার পর গতকাল নিয়ে মূল মার্কেটে মোট চার কার্যদিবস ১০০ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হতে দেখা গেছে। এর মধ্যে এক দিন দুই হাজার ৫৪৩ কোটি টাকা এবং এক দিন ৫৫৫ কোটি টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়। তবে এই দুই দিন বড় লেনদেন চোখে পড়লেও তার প্রায় পুরাটাই ছিল ব্লক মার্কেটের লেনদেন।
গতকাল ডিএসই’তে মোট ১৩৮ কোটি টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে ব্লক মার্কেটে লেনদেন ছিল ২৬ কোটি টাকা। বাকি ১১২ কোটি টাকার লেনদেন হয় মূল মার্কেটে। এই মার্কেটে লেনদেন বৃদ্ধি পাওয়ার মূল কারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্য থেকে ধীরে ধীরে করোনাভীতি কেটে যাচ্ছে। ফলে তারা শারীরিকভাবে বাজারে না এলেও ফোন ও অ্যাপের মাধ্যমে লেনদেন বাড়াচ্ছেন। তাদের ধারণা ছিল করোনাভাইরাসজনিত সমস্যা হয়তো শিগগির শেষ হবে। কিন্তু দীর্ঘদিনেও এর উপস্থিতি না কমায় তারা পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। ফলে বাড়াচ্ছেন বিনিয়োগ।
অন্যদিকে ফ্লোর প্রাইস ভীতিও কিছুটা কাটিয়ে উঠতে শুরু করেছেন তারা। সামান্য বেশি দরে হলেও ভালো কোম্পানির শেয়ার কিনতে চাইছেন বিনিয়োগকারীরা। ফলে দর বৃদ্ধি পাওয়া কোম্পানির পাশাপাশি বাড়ছে লেনদেন। গতকাল ডিএসইতে মোট ৪৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারদর বাড়তে দেখা যায়। এদিকে বিনিয়োগকারীদের এই আচরণের কারণে সূচকও ধীরে ধীরে বাড়ছে। গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক সাত পয়েন্ট বৃদ্ধি পায়। এর মধ্যে দিয়ে সূচকটি এক মাস পর আবার চার হাজার পয়েন্ট ফিরে গেল। গতকাল দিন শেষে সূচক স্থির হয় চার হাজার এক পয়েন্টে।
এদিকে গতকালে বাজারচিত্রের খাতভিত্তিক পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের শীর্ষে ছিল ব্যাংক খাত। দিনজুড়েই এ খাতের বিক্রেতার চেয়ে ক্রেতার সংখ্যা ছিল বেশি, যার জের ধরে গতকাল সবচেয়ে দর বৃদ্ধি পায় এ খাতের শেয়ারের। মোট ৪৭টি দর বৃদ্ধি পাওয়া কোম্পানির মধ্যে ১১টিই ছিল এ খাতের কোম্পানি। তবে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে ওষুধ ও রসায়ন খাতের কোম্পানির শেয়ার। মোট লেনদেনে এ খাতের কোম্পানির অবদান ছিল প্রায় ৪০ শতাংশ। পরের অবস্থানে ছিল ব্যাংক খাত। মোট লেনদেনে এ খাতের অবদান ছিল ২২ শতাংশের বেশি। এছাড়া গতকাল বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, বিমা এবং অন্যান্য খাতের শেয়ারেও বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ আগের চেয়ে বেশি লক্ষ করা গেছে।