বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকর্ষণে নীতিমালা সহজীকরণসহ বিশেষ সুবিধা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এখন থেকে বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো চাইলেই তাদের লভ্যাংশের অর্থ বাংলাদেশে নিজের প্রতিষ্ঠানে বা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে পুনঃবিনিয়োগ করতে পারবে। যাদের কয়েকটি কোম্পানি পুঁজিবাজারে বাজারেও তালিকাভুক্ত রয়েছে। সেসব কোম্পানি থেকে ভালো লভ্যাংশ আয় হয়। এছাড়াও সেকেন্ডারি মার্কেটে বিদেশীরা বিনিয়োগ করে লভ্যাংশ আয় করে থাকে।
মঙ্গলবার (৭ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংকের ফরেন এক্সচেঞ্জ পলিসি ডিপার্টমেন্ট এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা জারি করে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠিয়েছে। বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে নানা উদ্যোগের অংশ হিসেবে এই শিথিলতা আনলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
পুঁজিবাজারে বিদেশী মালিকানার কয়েকটি মৌলভিত্তিসম্পন্ন কোম্পানি রয়েছে। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য- গ্রামীণফোন, বার্জার পেইন্টস, ম্যারিকো বাংলাদেশ, গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ (বিএটিবিসি), রেকিট বেনকিজার ইত্যাদি। এইসব কোম্পানিগুলো উচ্চ নগদ লভ্যাংশ দিয়ে থাকে। যার ৮০-৯০ শতাংশই বিদেশী উদ্যোক্তা/পরিচালকদের মাধ্যমে বিদেশে চলে যায়। তবে ওই লভ্যাংশ এখন চাইলেই বাংলাদেশে বিনিয়োগের সুযোগ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বিদেশীরা এখন থেকে তাদের বিনিয়োগের লভ্যাংশের অর্থ বাইরে না পাঠিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা (এফসি) অ্যাকাউন্ট খুলেও রাখতে পারবে। ওই অর্থ নিজ দেশে বা অন্য দেশে নিয়ে যেতে পারবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্টরা জানান, করোনাভাইরাসের এ সঙ্কট পরবর্তী অর্থনীতির গতি প্রকৃতিতে ব্যাপক পরিবর্তন আসছে। এ সময়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিশেষত চীন থেকে বড় ধরনের বিনিয়োগ পাওয়ার আশায় রয়েছে সরকার। এ রকম প্রেক্ষাপটে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ নেওয়াসহ বিভিন্ন নীতিমালা সহজীকরণ করা হচ্ছে।
বর্তমান নিয়মে কোনো ধরনের অনুমোদন ছাড়াই বিদেশি বিনিয়োগকারীর লভ্যাংশের পুরোটাই নিয়ে যেতে পারেন। আগে এক্ষেত্রে নানা বিধিনিষেধ ছিল। অবশ্য অর্থ প্রত্যাবাসনের ৩০ দিনের মধ্যে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টসহ বাংলাদেশ ব্যাংকে অবহিত করতে হয়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন নির্দেশনায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশে বিদেশি শেয়ারহোল্ডারের প্রদেয় লভ্যাংশ এখন থেকে এফসি হিসেব খুলে সেখানে জমা রাখা যাবে। তবে এই অর্থ যে লভ্যাংশ থেকে পাওয়া ব্যাংক থেকে তা নিশ্চিত হতে হবে। চাইলে তিনি এই অর্থ পুনঃবিনিয়োগ করতে পারবেন। তবে বিনিয়োগের ১৪ দিনের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা বিনিয়োগ এবং পরিসংখ্যান বিভাগকে জানাতে হবে। এছাড়া বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় নীতিমালার সব ধরনের নীতিমালা অনুসরণ করতে হবে।