প্রতারক নিরীক্ষক সিরাজ খান বসাক অ্যান্ড কোং এর পার্টনার রমেন্দ্র নাথ বসাকের মাধ্যমে নিরীক্ষা করে শেয়ারবাজারে আসার অপেক্ষায় একমি পেস্টিসাইডস। যে প্রতারক নিরীক্ষক একই কোম্পানির একই সময়ের দুই রকম অ্যাকাউন্টস নিরীক্ষা করেছে এবং সঠিক বলে সার্টিফিকেট দিয়েছে। যা দেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন ঘটনা। এই জঘন্যতম কাজের জন্য তার নিরীক্ষা কাজের উপর ৫ বছরের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএবি)। আর সেই প্রতারক নিরীক্ষা করেছে একমি পেস্টিসাইডস। যে কোম্পানিটি পুঁজিবাজার থেকে ৩০ কোটি টাকা সংগ্রহ করবে। অথচ ওই কোম্পানির অ্যাকাউন্টসের উপর আস্থা রাখাই কঠিন।
অথচ অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের নেতৃত্বাধীন কমিশন দায়িত্ব পালনের শুরুতেই স্বচ্ছ কোম্পানির আইপিও অনুমোদনের বিষয়ে জোরদার করেছিলেন। যে কারনে একমি পেস্টিসাইডসের থেকে অনেক ছোট অপরাধের কোম্পানিরও আইপিও আবেদন বাতিল করে দিয়েছিলেন। যা শেয়ারবাজারে কমিশনের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি করেছিল। কিন্তু এক বছরের মাথায় এসে সেই অবস্থার পরিবর্তন ঘটেছে।
এ বিষয়ে শেয়ারবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, নিরীক্ষকদের জায়গায় স্বচ্ছতা আনাটা খুবই জরুরি। তাদের নিরীক্ষার উপরে আস্থা রাখা যায় না। তারপরেও একজন বিতর্কিত নিরীক্ষকের নিরীক্ষার কোম্পানির আইপিও কেনো দেওয়া হয়েছে, সেটা কমিশনই ভালো বলতে পারবে।
গত বছরের ১০ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংক সিলভার কম্পোজিট টেক্সটাইল মিলসের একইসময়ের দুই রকম আর্থিক হিসাব দুই ব্যাংকে জমাদানের বিষয়ে ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিলকে চিঠির মাধ্যমে জানায়। যা রমেন্দ্র নাথ নিরীক্ষা করেছিলেন। এরপরে ১৭ জানুয়ারি এফআরসি থেকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) চিঠি দিয়ে জানানো হয়, কোম্পানিটি রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার জন্য দুই রকম আর্থিক হিসাব বানিয়েছে। এছাড়া একই বিষয়ে আইসিএবিকে অবগত করে এফআরসি। এরপরে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে জানতে একমি পেস্টিসাইডসের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা (সিএফও) সেলিম রেজার সঙ্গে যোগাযোগ করলে, তিনি গত দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে নানা তালবাহানা করেন। কিন্তু তারপরেও তিনি কোন মন্তব্য দেননি।
সেলিম রেজা গত ১৯ সেপ্টেম্বরে ইস্যু ম্যানেজার প্রতিষ্ঠান শাহজালাল ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্টে দেখা করতে বললেও ওইদিন কোন মন্তব্য না করে পরে জানাবেন বলে জানান। এরপরে ২৭ সেপ্টেম্বর একই প্রতিষ্ঠানে দুপুর ৩টায় যেতে বললেও তিনি ওইদিন দেখা করেননি। এরপরে কোম্পানিতে ২৮ সেপ্টেম্বর সাক্ষাত করতে বলেন। কিন্তু ওইদিন কোন মন্তব্য দেন না। তবে লিখিত পাঠিয়ে দেবেন বলে জানান। কিন্তু এখন পর্যন্ত পাঠাননি।
উল্লেখ্য, একমি পেস্টিসাইডস ১০ টাকা অভিহিত মূল্যে ৩ কোটি শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে ৩০ কোটি টাকা উত্তোলন করবে। এজন্য কোম্পানিটির আইপিওতে ১২ অক্টোবর আবেদন গ্রহণ শুরু হয়ে শেষ হবে ১৮ অক্টোবর।
উত্তোলনযোগ্য অর্থ দিয়ে কোম্পানিটি কারখানার ভবন নির্মাণ, বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি স্থাপন, নতুন যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম ক্রয়, ব্যাংক ঋণ পরিশোধ এবং আইপিও খরচ খাতে ব্যয় করবে।