গত দুদিন বিমা কোম্পানির শেয়ার বিক্রি করে মুনাফা তুলে নিয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। আজ রোববারও (১৩ জুন) নতুন করে বিমা কোম্পানির পাশাপাশি আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং ব্যাংক খাতের শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছেন তারা।
এই তিন খাতের শেয়ার বিক্রি করে এবার নতুন করে বস্ত্র ও মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ারে বিনিয়োগ করছেন। ফলে দুটি খাতে বিনিয়োগকারীদের লেনদেনের বিষয়ে আগ্রহ ছিল সবচেয়ে বেশি।
রোববার সূচকে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় দিনের লেনদেন শুরু হয়। এর ফলে লেনদেনের প্রথম ১০ মিনিটেই ডিএসইর প্রধান সূচক বাড়ে ৩১ পয়েন্ট। বৃহস্পতিবারের মতোই এদিন ব্যাংক-বিমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার বিক্রির চাপের মধ্য দিয়ে লেনদেন শুরু হয়। শুরু হয় সূচক পতনের ধারায়, আর এই ধারা অব্যাহত ছিল দুপুর সোয়া ১২টা পর্যন্ত।
এরপর বিদ্যুৎ, জ্বালানি, বস্ত্র ও মিউচুয়াল ফান্ড খাতের শেয়ারের দাম বৃদ্ধিকে কেন্দ্র করে দুপুর ১টা পর্যন্ত সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় লেনদেন হয়। তবে বিদ্যুৎ ও বস্ত্র খাতের কিছু কোম্পানির শেয়ারের দাম কমে। ফলে দিনের বাকি সময় লেনদেন হয় সূচকের নিম্নমুখী প্রবণতায়।
দিন শেষে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক কমেছে ৩০ পয়েন্ট। অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বেড়েছে ৫৭ পয়েন্ট।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, বস্ত্র খাতে তালিকাভুক্ত ৫৮টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ৩২টির, কমেছে ২৬টির। আর মিউচুয়াল ফান্ড খাতে তালিকাভুক্ত ৩৭টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ৩১টির, কমেছে মাত্র ১টি প্রতিষ্ঠানের ইউনিট শেয়ারের দাম। আর বাকি ৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এছাড়াও বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের ২২টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ১৩টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের। আর কমেছে ৯টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের। এই তিন খাতের শেয়ারের দাম বাড়ায় রোববার বড় ধরনের দরপতন থেকে রক্ষা পেয়েছে দেশের পুঁজিবাজার।
ডিএসইর তথ্য মতে, রোববার ডিএসইতে মোট ৩৭২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ১৫৯টির, কমেছে ১৯২টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২১টির। তাতে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ৬৯ কোটি ৭ লাখ ৫৬ হাজার টাকা। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ৬৬৯ কোটি ২৫ লাখ ৯৬ হাজার টাকা।
বেশির ভাগ শেয়ারের দাম বাড়ায় এদিন আগের দিনের তুলনায় ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৩০ দশমিক ৫০ পয়েন্ট কমে ছয় হাজার ৩৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
প্রধান সূচকের পাশাপাশি ডিএসইর অন্য সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ৬ দশমিক ৫ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ২৯৩ পয়েন্টে এবং ডিএসই-৩০ সূচক ১২ দশমিক ৫৩ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ১৯২ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
লেনদেনের শীর্ষে ছিল বেক্সিমকো লিমিটেড। এরপর বেশি লেনদেন হয়েছে ওরিয়ন ফার্মার শেয়ারের। এরপর ক্রমান্বয়ে রয়েছে, ফরচুন সু, ডেল্টা লাইফ ইনস্যুরেন্স, লঙ্কা বাংলা ফাইন্যান্স, রিং সাইন টেক্সটাইল, সোনার বাংলা ইনস্যুরেন্স, লুব-রেফ, পাইওনিয়ার ইনস্যুরেন্স এবং প্রগতি ইনস্যুরেন্স লিমিটেড।
অপরদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৫৭ কমে ১৭ হাজার ৫২৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। সিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩২২টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বেড়েছে ১৪৪টির, কমেছে ১৫৬টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২২টির শেয়ারের দাম।
এদিন সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৯০ কোটি ১ লাখ ৪৮ হাজার ৮০৯ টাকা। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১১৪ কোটি ৬৪ লাখ ১৯ হাজার ৭৭ টাকা।