শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ২৩ ব্যাংক থেকে শেয়ারহোল্ডারদের ২ হাজার ৩২৮ কোটি টাকার নগদ লভ্যাংশ দেওয়া হবে। এরইমধ্যে ব্যাংকগুলোর পর্ষদ সভায় এই লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়েছে। যা ব্যাংকগুলোর বার্ষিক সাধারন সভা (এজিএম) অনুমোদন শেষে বিতরন করা হবে।
করোনা মহামারির কারনে ব্যাংকের ব্যবসা ও লভ্যাংশ নিয়ে শুরু থেকেই নানা ধরনের গুজব ও আতঙ্ক রয়েছে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে। তবে আগের ধারাবাহিকতায় ২০২০ সালের ব্যবসায়ও শেয়ারবাজারের ব্যাংকগুলো ভালো নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। এটাকে শেয়ারবাজারের জন্য ইতিবাচক দিক বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালক শাকিল রিজভী বলেন, চলমান করোনা মহামারি সংকটের সময় ব্যাংকের এই নগদ লভ্যাংশ খুবই ইতিবাচক খবর। এটার দরকার ছিল। তবে অনেকে না বুঝে ব্যাংক খাত নিয়ে আতঙ্ক তৈরী করেছে।
দেখা গেছে, শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ৩১টি ব্যাংকের মধ্যে ২৭টি ব্যাংকের ২০২০ সালের লভ্যাংশ সংক্রান্ত পর্ষদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এরমধ্যে ২৩টির পর্ষদ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। এই ব্যাংকগুলোর পর্ষদ মোট ২ হাজার ৩২৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকার নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে।
সবচেয়ে বেশি নগদ লভ্যাংশ দেবে সিটি ব্যাংক। ব্যাংকটি শেয়ারহোল্ডারদের ১৭.৫০ শতাংশ হারে ১৭৭ কোটি ৮৭ লাখ টাকার নগদ লভ্যাংশ দেবে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৬৯ কোটি ৮৪ লাখ টাকার নগদ লভ্যাংশ দেবে প্রাইম ব্যাংক। আর ইসলামী ব্যাংক দেবে তৃতীয় সর্বোচ্চ ১৬০ কোটি ৯৯ লাখ টাকার নগদ লভ্যাংশ।
বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স এসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সভাপতি ছায়েদুর রহমান বলেন, কিছু কিছু ব্যাংক প্রত্যাশার থেকে বেশি নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। যা শেয়ারবাজারের জন্য সুখবর। ব্যাংকগুলোর এবারের নগদ লভ্যাংশে বাজারে গতি বৃদ্ধি করবে যোগ করেন তিনি।
তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের কারনে ব্যাংক খাতের মুনাফায় ধস নামবে বলে অনেকে দ্বিধাদ্বন্দ্বে রয়েছে। প্রকৃতপক্ষে করোনাভাইরাস হলেও ব্যাংকের সুদ গণনা কিন্তু থেমে নেই। আর এটাই ব্যাংকের মুনাফার প্রধান উৎস। তাই মুনাফায় পতন হয়নি। যে কারনে এবারও আগের ন্যায় ভালো নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে।
এ বছর শুধুমাত্র বোনাস শেয়ার ঘোষণা করেছে এবি ব্যাংক, আইএফআইসি ব্যাংক ও মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক। আর লোকসানে থাকা আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক এবছরও কোন লভ্যাংশ ঘোষণা করেনি। এছাড়া এখনো লভ্যাংশ সংক্রান্ত সভা করেনি ন্যাশনাল ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্যাংক ও রূপালি ব্যাংক।
উল্লেখ্য, করোনা মহামারির কারনে গত ২ বছর ধরে ব্যাংকের লভ্যাংশে সর্বোচ্চ সীমা বেধেঁ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত বছর ব্যাংকগুলো সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিতে পারলেও এবার তা ১৭.৫০ শতাংশ করা হয়েছে। এই সীমা না থাকলে ব্যাংকের নগদ লভ্যাংশের পরিমাণ হয়তো আরও বাড়তে পারত। এছাড়া ১৬ মার্চ সর্বোচ্চ ১৭.৫০ শতাংশ লভ্যাংশের সংশোধিত নির্দেশনা ঘোষণার আগেই দু-একটি ব্যাংক আগের নিয়মে লভ্যাংশ ঘোষণা করে।