করোনাভাইরাসের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সরকারের প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় ৩০০ কোটি টাকা ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়া উদ্যোক্তাদের অগ্রাধিকার দেবে এসএমই ফাউন্ডেশন। এ লক্ষ্যে উদ্যোক্তাদের সঙ্গে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের যোগাযোগ নিশ্চিত করতে এসএমই ফাউন্ডেশন হেল্প ডেস্ক স্থাপন করেছে।
বুধবার (৫ মে) ঋণ বিতরণ বিষয়ে সারা দেশের এসএমই অ্যাসোসিয়েশন এবং চেম্বারের উদ্যোক্তাদের সঙ্গে অনলাইনে মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. মফিজুর রহমান।
তিনি জানান, যারা সরকারের প্রথম দফার প্রণোদনার আওতায় ঋণপ্রাপ্ত হননি, নারী-উদ্যোক্তা, নতুন উদ্যোক্তা অর্থাৎ যারা এখনও ব্যাংক ঋণ পাননি এবং পশ্চাৎপদ ও উপজাতীয় অঞ্চল, শারীরিকভাবে অক্ষম ও তৃতীয় লিঙ্গের উদ্যোক্তাদের ঋণ পাওয়া নিশ্চিত করতে এরইমধ্যে এসএমই ফাউন্ডেশনে আলাদা হেল্প ডেস্ক স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে উদ্যোক্তাদের যোগাযোগ করিয়ে দিতে সব প্রতিষ্ঠানের ফোকাল পারসনও নির্ধারণ করা হয়েছে।
ড. মো. মফিজুর রহমান জানান, করোনাভাইরাসের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সরকারের প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় ঋণের জন্য ২ মে থেকে ব্র্যাক ব্যাংক, মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক, বেসিক ব্যাংক এবং আইডিএলসি ফাইন্যান্স-এ ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের আবেদন গ্রহণ শুরু হয়েছে। শিগগিরই এসএমই ফাউন্ডেশনের সঙ্গে চুক্তি সই হওয়া বাকি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানেও আবেদন করা যাবে। ফাউন্ডেশনের প্রচলিত ক্রেডিট হোলসেলিং ব্যবস্থার মতো উদ্যোক্তারা ২৫ লাখ টাকা পর্যন্ত জামানতবিহীন ঋণ পাবেন জানিয়ে, এ সীমা আরও বাড়ানোর জন্য উদ্যোগ গ্রহণের আশ্বাস দেন তিনি।
সভায় সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সরকারের এই প্রণোদনা প্যাকেজের সুফল যেন সত্যিকার প্রান্তিক পর্যায়ের এবং নেত্রকোণার মতো শিল্পক্ষেত্রে অনুন্নত এলাকাগুলোর ক্ষতিগ্রস্ত উদ্যোক্তারা পান, তা নিশ্চিত করতে হবে। ঋণের সুষ্ঠু বিতরণ নিশ্চিত করতে এসএমই ফাউন্ডেশনের আয়োজনে এসএমই অ্যাসোসিয়েশন, চেম্বার প্রতিনিধি এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের মতবিনিময় সভা আয়োজন প্রশংসনীয় উদ্যোগ বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
সভায় জানানো হয়, প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় উদ্যোক্তারা ৪ শতাংশ সুদে ঋণ পাবেন। গ্রাহক পর্যায়ে ঋণের পরিমাণ হবে সর্বনিম্ন এক লাখ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৭৫ লাখ টাকা পর্যন্ত। ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে সর্বোচ্চ ২৪টি সমান মাসিক কিস্তিতে ঋণ পরিশোধ করা যাবে। ব্যাংকের চাহিদা করা ডকুমেন্টসহ ‘সম্পূর্ণ/পরিপূর্ণ ঋণ আবেদনপত্র’ ব্যাংকের কাছে দাখিলের পর ঋণ মঞ্জুর করে গ্রাহকের অনুকূলে বিতরণের উদ্যোগ গ্রহণ করবে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক।
সাধারণভাবে একক ও যৌথ মালিকানাধীন উদ্যোগের অনুকূলে ঋণ বিতরণ করা হবে। তবে প্রান্তিক ক্ষুদ্র, বিশেষ করে নারী-উদ্যোক্তাদের ঋণের আওতায় আনার লক্ষ্যে ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্ক ও ঐক্যমতের ভিত্তিতে সর্বোচ্চ পাঁচ জন উদ্যোক্তার অনুকূলে গ্রুপভিত্তিক ঋণ বিতরণ করা যাবে।