অলটারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড অব বাংলাদেশে’ বিনিয়োগ নিয়ে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসির) প্রশ্নের জবাব দিয়েছে পদ্মা ব্যাংক।
বিএসইসিতে গত ১৪ মার্চ পাঠানো চিঠিতে পদ্মা ব্যাংক জানিয়েছে, যে তহবিলে বিনিয়োগ করা হয়েছে সেটি বিএসইসির অনুমোদিত। বিএসইসিই এর লাইসেন্স দিয়েছে। তা ছাড়া ব্যাংক খাতের প্রাথমিক নিয়ন্ত্রক বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নিয়েই বিনিয়োগটি করা হয়েছে। এটি যথাযথভাবে গৃহীত এবং এর যাবতীয় তথ্য আর্থিক বিবরণীতে সংরক্ষিত, যা প্রাথমিক নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে অবহিত করা হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়, তারপরেও একটি স্বার্থান্বেষী মহল থেকে বিশ্বাসঘাতকের মতো ব্যাংকের বিনিয়োগ নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে ভিত্তিহীন অভিযোগ করা হয়েছে, যার অনুলিপি দেয়া হয়েছে বিএসইসিতেও। এর পরিপ্রেক্ষিতেই বিষয়টি সম্পর্কে জানতে পদ্মা ব্যাংকে চিঠি দেয় বিএসইসি।
বিএসইসিকে পদ্মা ব্যাংক জানায়, ২০১৫ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশ ব্যাংকের অফসাইট সুপারভিশন বিভাগের (ডিওএস) জারি করা সার্কুলার নম্বর ২-এর শর্ত মেনেই এ বিনিয়োগ করা হয়েছে। ওই সার্কুলারে বিএসইসি কর্তৃক নিবন্ধিত বিশেষ উদ্দেশ্যে গঠিত এবং পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত নয় এরূপ কোনো তহবিল বা তহবিলসমূহে তফশিল ব্যাংকে সর্বোচ্চ ২০০ কোটি টাকা বিনিয়োগের সুযোগ দেয়া হয়।
একই সঙ্গে এ ধরনের তহবিলে বিনিয়োগের অঙ্গীকার করার আগে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের অভিপ্রায় সংবলিত গৃহীত সিদ্ধান্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের অফসাইট সুপারভিশন বিভাগে দাখিল করার শর্ত রাখা হয়েছে।
পদ্মা ব্যাংক জানাচ্ছে, ২০১৫ সালে ব্যাংকের ১৪তম পর্ষদ সভায় যথাযথ আলোচনার মাধ্যমেই বিনিয়োগ সিদ্ধান্তটি নেয়া হয়। সভার সভাপতিত্ব করেন তৎকালীন চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন খান আলমগীর। সভার কার্যবিবরণীতেও তার সই রয়েছে। অথচ বিশ্বাসঘাতকের মতো তিনিই এ বিনিয়োগকে প্রশ্নবিদ্ধ করছেন। অন্তঃসারশূন্য এ অভিযোগের কোনো নিয়ন্ত্রক সংস্থার মনোযোগ পাওয়ার কোনো কারণ নেই।
পদ্মা ব্যাংক আরও জানিয়েছে, এ বিনিয়োগ থেকে কোনো লভ্যাংশ না পাওয়ার যে অভিযোগ করা হয়েছে তাও অপপ্রচার। এ বিনিয়োগ থেকে ব্যাংক নিয়মিত লভ্যাংশ পেয়ে আসছে। বাংলাদেশ ব্যাংককে এ বিষয়ে নিয়মিত অবহিত করা হয়ে থাকে।
পদ্মা ব্যাংক ২০১৩ সালে ফারমার্স ব্যাংক নামে যাত্রা শুরু করে। যার চেয়ারম্যান ছিলেন মহিউদ্দিন খান আলমগীর। যার নেতৃত্বে নজিরবিহীন ঋণ কেলেঙ্কারিতে ডুবতে বসে ব্যাংকটি। আর তার অন্যতম সহযোগী ছিলেন ব্যাংকটির অডিট কমিটির তৎকালীন চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক চিশতী।
পরে ব্যাংকটি রক্ষায় এগিয়ে আসে সরকার। মহিউদ্দীন খান আলমগীরকে সরিয়ে পুনর্গঠন করা হয় পর্ষদ। তহবিল ঘাটতি মেটাতে মালিকানায় যুক্ত করা হয় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোকে। তারপর থেকেই বর্তমান পর্ষদের নেতৃত্বে ধীরে ধীরে গুছিয়ে উঠতে শুরু করেছে ব্যাংকটি।
পদ্মা ব্যাংক বলছে, যখন অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা ফিরিয়ে গ্রাহকদের আস্থা অর্জনের পথে অনেকখানি এগিয়ে গেছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ, তখন ব্যাংকের বিনিয়োগ নিয়ে বানোয়াট গল্প ফেঁদে অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করতে চাচ্ছেন মহিউদ্দীন খান আলমগীর। এর মাধ্যমে ব্যাংকটিকে ধ্বংস করার নিজের দায় অন্যের ঘাড়ে চাপাতে চাচ্ছেন তিনি।