দেশের ইউনিটহোল্ডারদের ন্যায় এলআর গ্লোবাল বাংলাদেশ অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির চীফ ইনভেস্টমেন্ট অফিসার (সিআইও) রিয়াজ ইসলামের কর্মকাণ্ডে উদ্বিগ্ন কোম্পানিটির বিদেশী মালিকেরা। এর সমাধানে তারা রিয়াজ ইসলামের শেয়ার কিনে নিতে চায়। এজন্য সহযোগিতা চেয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) চিঠি দিয়েছে তারা।
সম্প্রতি নিউইয়র্কভিত্তিক প্রাইভেট বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ও এলআর গ্লোবাল বাংলাদেশ অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের ৪৭.৭০ শতাংশ মালিকানাদের পক্ষে বিএসইসির চেয়ারম্যান বরাবর এ বিষয়ে চিঠি দিয়েছেন পার্টনার গেভিন উইলসন।
বিদেশীদের আগে থেকে অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিটির অধীনে নিয়ন্ত্রিত ফান্ডের দেশী ইউনিটহোল্ডাররাও রিয়াজ ইসলামের উপর আস্থা রাখতে পারছিলেন না। যে কারনে ডিবিএইচ ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ড ও গ্রীণ ডেল্টা মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিটহোল্ডাররা আইনের মধ্য থেকেই অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ থেকে রক্ষা পেতে রিয়াজ ইসলাম কয়েক দফায় খোড়াঁ যুক্তিতে মামলা করলেও আদালতে তা ধোপে টিকেনি। কিন্তু ফান্ড দুটির দায়িত্ব হস্তান্তরে বর্তমানে বাধাঁ হয়ে দাড়িঁয়েছে কমিশন। শুরুতে বর্তমান কমিশনের এক কমিশনার রিয়াজ ইসলামের পক্ষে অবস্থান নিলেও তিনি এখন বিপক্ষে। এখন রিয়াজ ইসলামের পক্ষে আরেক শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা।
বিএসইসিকে দেওয়া চিঠিতে এলআর গ্লোবাল বাংলাদেশ অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির বিদেশী পার্টনার জানিয়েছেন, কোম্পানিটি ও সিআইও রিয়াজ ইসলামের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিনের আইনী মামলা সম্পর্কে তারা অবগত। এই পরিস্থিতিতে প্রতিষ্ঠানটির ভালোভাবে পরিচালনা করার জন্য সমস্যা সমাধানে তারা আলোচনা করতে চায়।
চিঠিতে বলা হয়েছে, অংশীদার হিসেবে রিয়াজ ইসলামের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ তারা পেয়েছে। এছাড়া তারা রিয়াজ ইসলামের বর্তমান কর্মকাণ্ডে অবগত এবং খুবই অখুশি। বিগত ৮ বছরে বিদেশীরা ৪৭.৭০ শতাংশ মালিকানা সত্ত্বেও কোন লভ্যাংশ নেইনি বলে জানিয়েছে। যদিও অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠানটি থেকে প্রতি বছর লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। এছাড়া রিয়াজ ইসলাম নিয়মিত বেতন ও বোনাস নিচ্ছে।
রিয়াজের বিষয়ে তাদের মতো বিভিন্ন ফান্ডের উদ্যোক্তারাও অবগত বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। বাংলাদেশের মিউচ্যুয়াল ফান্ড ইন্ডাস্ট্রি ও তাদের কোম্পানিতে নেগেটিভ প্রভাব ফেলার আগেই বিষয়টি সমাধান করা উচিত বলে জানানো হয়েছে। তারা প্রতিটি উদ্যোক্তার সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের মনোভাব নিয়ে আলোচনা করবে এবং রিয়াজ ইসলামকে পরিবর্তনের বিষয়ে তাদের সহযোগিতা চাইবে। আস্থা অর্জন ও স্টেকহোল্ডারদের সহযোগিতা পেতে তারা রিয়াজ ইসলামের মালিকানা বা শেয়ার কিনবে বলেও জানিয়েছে।
বিদেশী এলআর গ্লোবাল বাংলাদেশে ২০০০ সাল থেকে বিনিয়োগকারী এবং অর্থনীতি, বাজার ও বিনিয়োগের সুযোগের উপর আস্থা রেখেছে বলে চিঠিতে জানানো হয়েছে। তারা বলছে, বাংলাদেশের উন্নয়নে একটি শক্তিশালী শেয়ারবাজার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড ইন্ডাস্ট্রি দরকার।
এ বিষয়ে জানতে রিয়াজ ইসলামের ব্যক্তিগত ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সংযোগ পাওয়া সম্ভব হয়নি।