বৃহস্পতিবার লভ্যাংশ ঘোষণা করা চারটি কোম্পানির মধ্যে দর হারিয়েছে দুটি। একটি দর ধরে রেখেছে। আর একটি দর বেড়েছে ২০ পয়সা। চারটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে তিনটিই মহামারীকালে আয় করেছে বেশি।
২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত অর্থবছরের জন্য যে চারটি কোম্পানি লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে, তার মধ্যে দর হারিয়েছে দুটি। একটির দর অপরিবর্তিত আছে আর একটির দর বেড়েছে একেবারেই সামান্য।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের লেনদেন শুরুর আগেই ওয়েবসাইটে শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক, লংকাবাংলা ফিনান্স, রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স ও ইউনাইটেড ইন্সুরেন্সের লভ্যাংশ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত আসে।
আগের দিন প্রতিষ্ঠান চারটির পরিচালনা পর্ষদ লভ্যাংশের এই প্রস্তাব দেয়।
এর মধ্যে শাহজালাল আগের বছরের চেয়ে বেশি আর বাকি তিনটি সমান লভ্যাংশ দেয়ার প্রস্তাব করে।
কিন্তু বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা পূরণ না হওয়ার বিষয়টি দেখা যায় লেনদেনে।
শাহজালালের দাম আগের দিনের সমান ছিল। লংকাবাংলার দর আগের দিনের চেয়ে বেড়েছে ২০ পয়সা। দর হারিয়েছে দুই বিমা কোম্পানি।
শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক
২০২০ সালের সমাপ্ত অর্থবছরের জন্য বিনিয়োগকারীদের জন্য ৭ শতাংশ (শেয়ার প্রতি ৭০ পয়সা) নগদ ও ৫ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে শাহজালাল ব্যাংক। ২০২০ সালের তুলনায় শেয়ার প্রতি ২০ পয়সা বেশি দেবে তারা।
ওই বছর কোম্পানিটি পাঁচ শতাংশ করে বোনাস ও নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল।
গত ডিসেম্বর সমাপ্ত অর্থবছরে ব্যাংকটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে এক টাকা ৯৫ পয়সা, যা আগের বছরের তুলনায় ২৫ পয়সা বেশি।
মহামারিকালে শেয়ার প্রতি আয় ও লভ্যাংশ বৃদ্ধির কোনো প্রভাব পড়েনি শেয়ার দরে।
আগের দিনের সমান দাম ২১ টাকা ২০ পয়সাই দাঁড়ায় বৃহস্পতিবারের দাম। যদিও এক পর্যায়ে দাম কমে হয়ে যায় ২০ টাকা ৭০ পয়সা।
লংকাবাংলা ফিনান্স
২০২০ সালের ডিসেম্বরে সমাপ্ত অর্থবছরে এই কোম্পানিটিরও আয় হয়েছে আগের বছরের তুলনায় বেশি।
কোম্পানিটি শেয়ারধারীদের জন্য ১২ শতাংশ (শেয়ার প্রতি এক টাকা ২০ পয়সা) নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে।
লংকাবাংলা মহামারির বছরে শেয়ার প্রতি আয় করেছে গত বছরের প্রায় দ্বিগুণ।
২০২০ হিসাব বছরে লংকাবাংলা ফাইন্যান্সের শেয়ারপ্রতি সমন্বিত আয় (ইপিএস) দাঁড়িয়েছে ১ টাকা ৮১ পয়সা। যেখানে এর আগের বছরে পুনর্মূল্যায়িত ইপিএস ছিল ৯৪ পয়সা।
গত বছর কোম্পানিটি শেয়ারধারীদের ৭ শতাংশ নগদ (৭০ পয়সা) ও ৫ শতাংশ বোনাস শেয়ার দিয়েছিল।
তবে বিনিয়োগকারীরা এই ঘোষণায় খুশি না, সেটি বোঝা গেছে শেয়ার দরে।
কোম্পানির শেয়ার দর আগের দিনের তুলনায় ২০ পয়সা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৬ টাকা ৩০ পয়সায়। যদিও এক পর্যায়ে শেয়ার পর কমে দাঁড়িয়েছিল ৩৫ টাকা ৩০ পয়সা।
রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স
বিমা খাতের কোম্পানি রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড ২৫ শতাংশ (শেয়ার প্রতি আড়াই টাকা) নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে।
গত চার বছর ধরেই কোম্পানিটি ২৫ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়ে আসছে। এর মধ্যে তিন বছর শেয়ার প্রতি দেড় টাকা নগদ ও ১০ শতাংশ বোনাস শেয়ার দিয়ে এলেও ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে সমাপ্ত অর্থবছরে কেবল নগদ লভ্যাংশ দেয়া হয়েছিল এবারের মতোই।
দর হারিয়েছে এই কোম্পানিটিও।
আগের দিন ৫৮ টাকা ৫০ পয়সায় দিন শেষ করা কোম্পানিটি লভ্যাংশের প্রস্তাবে দর হারিয়েছে এক টাকা ৬০ পয়সা।
এদিন সর্বোচ্চ ৫৯ টাকা উঠলেও দিন শেষে কমে দাঁড়িয়েছে ৫৬ টাকা ৯০ পয়সা।
সবচেয়ে বেশি হতাশ করল ইউনাইটেড ইন্স্যুরেন্স
বিমা খাতের আরেক কোম্পানির ইউনাইটেড ইন্স্যুরেন্সের ১১ শতাংশ (এক টাকা ১০ পয়সা) নগদ লভ্যাংশ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়ার পর কোম্পানিটির শেয়ার দর কমেছে ৬ দশমিক ১৫ শতাংশ।
দিনের সর্বোচ্চ ৪৪ টাকা ৯০ পয়সা দর উঠলেও দিন শেষে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৪২ টাকা ৭০ পয়সায়।
এই কোম্পানিটি গত বছরের তুলনায় আয় করেছে বেশি। তবে লভ্যাংশ গত বছরের সমানই রেখেছে।
গত ডিসেম্বরে সমাপ্ত অর্থবছরে শেয়ারপ্রতি ২ টাকা ৪ পয়সা মুনাফা করেছে কোম্পানিটি। গত বছর মুনাফা ছিল ১ টাকা ৯৫ পয়সা।