নারী উন্নয়নে বিনিয়োগ সবচেয়ে স্মার্ট বিনিয়োগ। তার সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হবে। তাকে বিকশিত হওয়ার সুযোগ দিতে হবে। নারীর অন্তর্নিহিত শক্তিকে নারীর নিজেও অনুধাবন করতে হবে। তাহলে নারীরা এগিয়ে যাবে।’
আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আইসিএবি’র অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপু মনি, এমপি এসব কথা বলেন।
পেশাগত দক্ষতা প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী পড়ে পাস করে এবং ডিগ্রি নিয়ে বেরিয়ে আসে। সে চাকরি পাচ্ছে না। আবার যে চাকরিদাতা, সে বলে সঠিক দক্ষতার লোক খুঁজে পাচ্ছি না। একটা দূরত্ব আছে, ব্যবধান আছে, একে দূর করতে হবে। এ জন্য ইন্ডাস্ট্রি লিংকেজ করা দরকার। আইসিএবিও একটা ইন্ডাস্ট্রির মতো। আইসিএবিও দক্ষ জনবল ও উদ্যোক্তা তৈরিতে পদক্ষেপ নিতে পারে বলে তিনি মনে করেন।
ডা. দীপু মনি বলেন এমন শিক্ষাব্যবস্থা দরকার যেন শিক্ষার্র্থী জ্ঞান পাবে, দক্ষতা অর্জন করবে, সঠিক মূল্যবোধ নিয়ে বের হবে। তিনি আরো বলেন, ‘আমার দেশের সামনে অনেক লক্ষ্য আছে- ২০৪১ সালে উন্নত সমৃদ্ধ সুখী শান্তিময় বাংলাদেশ গড়ার । দেশ এখন উন্নয়নশীল । উন্নত দেশ ২০৪১ সালের আগেই হবে যাবে ইনশাআল্লাহ্। দেশ এমডিজি খুব ভালোভাবে অর্জন করেছে। দেশকে আরো এগিয়ে নিতে ব্যাপক বিনিয়োগের প্রয়োজন । সিএ-রা দেশি বিদেশি বিনিয়োগে আরো বেশি শক্তিশালী ভূমিকা রাখাতে হবে।
আইসিএবি নারী সদস্যদের ক্ষমতায়ন ও নেতৃত্ব উন্নয়ন কমিটি কাওরান বাজারে সিএ ভবনে আন্তর্জাতিক নারী দিবস ২০২১ উপলক্ষে এক আনুষ্ঠানের আয়োজন করে। ডা. দিপু মনি, এমপি, মাননীয় মন্ত্রী, শিক্ষা মন্ত্রনালয় এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন। পরে তিনি সিএ নারী পোর্টাল এর শুভ উদ্বোধন করেন।
স্বাগত বক্তব্যে আইসিএবির সভাপতি মাহমুদউল হাসান খসরু এফসিএ বলেন যে নারীরা বিভিন্ন চ্যালঞ্জে থাকা সত্ত্বেও তারা এগিয়ে চলছে এবং সফল হচ্ছে। তিনি বলেন, সিএ ডিগ্রি অবশ্যই নারীদের ক্ষমতায়িত করবে এবং তাদের সমাজিক মর্যাদা বৃদ্ধি করবে। দেশের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য পূরণের ক্ষেত্রে, নারীদের জন্য সিএ ডিগ্রি আরো বিশি জরুরী বলে মনে করেন তিনি।
জেন্ডার বান্ধব পরিবেশ তৈরিতে আইসিএবি কর্তৃক গৃহীত কয়েকটি উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে মারিয়া হাওলাদার এফসিএ, চেয়ারপারসন, সাফার মহিলা নেতৃত্ব কমিটি এবং আইসিএবি’র ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেন, ২০২১ সালে কমিটি চারটি ক্ষেত্রর উপর জোর দিচ্ছে ; মহিলা শিক্ষার্থীদের নার্সিং, বিভিন্ন উদ্যোক্তা ও নেতৃত্বের কর্মসূচি বাস্তবায়ন, বোর্ডের জন্য প্রস্তুত সিএ মহিলা এবং ভবিষ্যতে প্রস্তুত সিএ মহিলা পেশাদারদের বিকাশ করা।
তিনি আরো বলেন, আইসিএবি সিএ ফার্মের এক অধ্যক্ষের অধীনে মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩৫ জন এরপর কমপক্ষে ৫ জন ছাত্রী নেওয়া বাধ্যতামূলক করেছে । আইসিএবি’র গুণগত মান বিভাগ সিএ ফার্মগুলি নিয়মিত পরিদর্শন করে ফার্মের নারী শিক্ষার্থীদের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ রয়েছে কিনা যচাই করছে।
২০২০ সালে আন্তর্জাতিক নারী দিবসের প্রতিপাদ্য ছিল প্ল্যানেট ৫০.৫০। ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুসারে নারী-পুরুষ বৈষম্যের দিক থেকে বাংলাদেশের সামগ্রিক স্কোর ৪৯.৩৮ শতাংশ যা খুব কম। এই বছর আমাদের দিবসটির প্রতিপাদ্য হলো ‘‘চুজ টু চ্যালেঞ্জ’’– নারীরা প্রতিদিনই তাদের নিজস্ব চিন্তাভাবনা এবং কাজের জন্য দায়ী। বোর্ডরুমে আরও বেশি বেশি নারী বৃদ্ধি, আইনী অধিকারে বলয়ে সাম্যতা এবং জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে রোল মডেল হিসাবে নারীর দৃশ্যমানতা এবং আরও সক্রিয় অংশগ্রহণ আমাদের লক্ষ্য ।
এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, আফরোজা খান, সরকারের প্রাক্তন সচিব ও জয়িতা ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক; ফাতেমা ইয়াসমিন, সচিব, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ, অর্থ মন্ত্রণালয়; শরীফা খান, সদস্য (সচিব), পরিকল্পনা কমিশন, শিল্প ও জ্বালানি বিভাগ, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়; সুরাইয়া জান্নাথ খান এফসিএ, দেশের প্রথম নারী সিএ ও শীর্ষস্থানীয় বিশেষজ্ঞ, এফএম গ্লোবাল ইউনিট, ওয়াশিংটন ডিসি এবং দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চল, বিশ্বব্যাংক; এবং বিআইসিএমের নির্বাহী সভাপতি ড. মাহমুদা আক্তার।
অনুষ্ঠানে আইসিএবির ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল কাদের জোয়াদ্দার এফসিএ সমাপনী বক্তব্য প্রদান করেন।