আসন্ন ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে পুঁজিবাজারের জন্য ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের –ডিএসই পক্ষ থেকে ১১ সুপারিশ পাঠানো হয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর)। চাওয়া হয়েছে স্টক এক্সচেঞ্জের জন্য উৎসে কর সুবিধা, বন্ডের সুদের উপর কর অব্যাহতি, লভ্যাংশের আয়ের উপর কর ছাড়।
তবে এখনও চালু হয়নি এমন দুটি বিষয়কে সবচেয়ে প্রাধান্য দিয়ে বাজেটে কর ছাড় চেয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ। এগুলো হচ্ছে অল্টারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ড (এটিবি) ও এসএমই কোম্পানিগুলো বা স্বল্পমূলধনী কোম্পানিগুলোর জন্য কর ছাড়।
এ বিষয়ে ডিএসই মুখপাত্র শফিকুর রহমান বলেন, ‘এগুলো এখনও চালু হয়নি। তবে হবে।’
কবে হবে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এগুলো কাজ প্রায় শেষের দিকে। বাজেটের আগে চালু করার সম্ভব কি না প্রশ্নে তিনি বলেন, সেটি হতেও পারে নাও হতে পারে।’
সম্প্রতি বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন- বিএসইসি দেশের ১২টি স্বল্পমূলধনী কোম্পানি নিয়ে বৈঠক করেছে। এবং তাদের পুঁজিবাজার থেকে মূলধন সংগ্রহে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে বিএসইসি কমিশনার শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি স্বল্প মূলধনী বা এসএমই কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে নিয়ে আসতে। বিষয়টি প্রাথমিক পর্যায়ে আছে। এসব কোম্পানিও মূলধন প্রয়োজন, আমরা চাই তারা পুঁজিবাজার থেকে মূলধন সংগ্রহ করুক।’
ডিএসইর পক্ষ থেকে প্রস্তাবিত বাজেটে এসএমই বোর্ডে তালিকাভুক্ত হওয়া কোম্পানিগুলোর জন্য ৫ বছরের ১০ শতাংশ কর ছাড়রের সুবিধা চাওয়া হযেছে। অল্টারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ডে যেসব সিকিউরিটিজ তালিকাভুক্ত হবে সেগুলোকের তালিকাভুক্ত কোম্পানির মতো বিবেচনা করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। যার একটিও এখনও চালু হয়নি।
বলা হয়েছে,পুঁজিবাজারে যে বন্ডগুলো তালিকাভুক্ত আছে সেগুলোর কোনো লেনদেন হয় না। এমনকি এগুলোতে কারা বিনিয়োগ করছে, কত আয় হচ্ছে সে বিষয়গুলোও জানা সম্ভব হয় না। তালিকাভুক্ত সিকিউরিটিজের মতো বন্ডগুলোকে বিবেচনা করা হলে এগুলোর বিভিন্ন তথ্য ডিএসই ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। এতে সরকারের মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা বাস্তবায়নে এসব বন্ড থেকে সরকার অর্থ সংগ্রহ করতে পারবে।
ডিএসইর সদস্যদের লেনদেনের উৎস কর হ্রাস করে সর্বাধিক ০.০১৫ শতাংশ রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। এটি বাস্তবায়ন করা হলে ডিএসই সদস্যদের পুঁজিবাজারে টিকে থাকতে সহায়ক হবে বলে জানানো হয়।
এছাড়া জিরো কুপন বন্ডের ইস্যুয়ার ও বিনিয়োগকারীদের কর ছাড় দেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। এ বিষয়ে বলা হয়েছে, সার্বিক পুঁজিবাজারের তুলনায় বন্ড মার্কেট খুবই ছোট। বন্ড মার্কেট বড় করার স্বার্থে এ খাতের কর ছাড় জরুরীবলে জানানো হয়।
এছাড়া বাজেট প্রস্তাবে পুঁজিবাজার তালিকাভুক্ত ও নন তালিকাভুক্ত কোম্পানির মধ্যে করের পার্থক্য ১৫ শতাংশ করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। বর্তমানে যা সাড়ে ৭ শতাংশ রয়েছে।
লভ্যাংশ হিসেবে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত আয়কে কর অব্যাহতি দেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। বর্তমানে যেখানে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত কর অব্যাহতি দেয়া হচ্ছে।
প্রাতিষ্ঠানিক শেয়ারধারীরা আয়ের উপর বর্তমানে ২০ শতাংশ কর দিয়ে থাকে। সেটি ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।
পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বিশেষ কর ছাড়ের সুবিধা দেয়া হয়েছে চলতি বাজেটে, যা আগামী ৩০ জুন ২০২১ শেষ হবে। এই মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২২ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।