কোম্পানিটির ফ্লোর প্রাইস ছিল ৯০৬ টাকা ৭০ পয়সা। একটির বিপরীতে দুটি বোনাস শেয়ার দেয়ার পর ফ্লোর সমন্বয়ের ঘোষণা আসে বিএসইসির পক্ষ থেকে। তবে আগের ফ্লোর প্রাইসের সঙ্গে সমন্বয় না করে রেকর্ড ডেটে দামের সঙ্গে সমন্বয় করা হয়েছে নতুন ফ্লোর প্রাইস।
২০০ শতাংশ বোনাস শেয়ার দেয়ার প্রস্তাব করায় বৃটিশ আমেরিকান ট্যোবাকো বাংলাদেশ লিমিটেড-বিএটিবিসি ফ্লোর প্রাইস কমানো হয়েছে।
বুধবার রেকর্ড ডেটের দিন যে দাম রয়েছে তার সঙ্গেই সমন্বয় হয়েছে লভ্যাংশ। তবে নগদে যে লভ্যাংশ দেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে, সেটি শেয়ার দামের সঙ্গে সমন্বয় হবে না।
এই শেয়ারটির নতুন ফ্লোর প্রাইস ৫১৮ টাকা। অর্থাৎ এই দামের নিচে বিক্রি হবে না সেটি।
গত বছরের মার্চে দেশে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ার পর শেয়ারের দাম ক্রমাগত পড়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিটি শেয়ারের সর্বনিম্ন দাম বেঁধে দেয়া হয়, যা পরিচিতি পায় ফ্লোর প্রাইস হিসেবে।
সে সময় বিএটিবিসির ফ্লোর প্রাইস ঠিক হয় ৯০৭ টাকা ৬০ পয়সা।
ফ্লোর প্রাইস ঠিক হওয়ার পর মুন্নু অ্যাগ্রো ১০ শতাংশ বোনাস এবং ন্যাশনাল পলিমার ১০০ শতাংশ অর্থাৎ একটি শেয়ারের বিপরীতে একটি রাইট শেয়ার দেয়ার পরও ফ্লোর প্রাইস পাল্টায়নি।
তবে বিএটিবিসি একটি শেয়ারের বিপরীতে দুটি বোনাস শেয়ার দেয়ার পর পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি ফ্লোর প্রাইস সমন্বয়ের ঘোষণা দেয়। সিদ্ধান্ত হয়, বোনাস ও রাইটের সঙ্গে আনুপাতিক হারে কমবে ফ্লোর প্রাইস।
তখন কথা উঠে বিএটিবিসির নতুন ফ্লোর প্রাইস আগের তিন ভাগের এক ভাগ হয় কি না। তবে রেকর্ড ডেটের দুই দিন আগে বিএসইসি এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায় রেকর্ড ডেটের দামের ওপর ভিত্তি করে নির্ধারিত হবে নতুন ফ্লোর প্রাইস।
শেয়ারটি রেকর্ড ডেটের আগে ক্লোজ হয় এক হাজার ৫৫৪ টাকা।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের-ডিএসইর মুখপাত্র শফিকুর রহমান বলেন, ‘বিএসইসি ফ্লোর প্রাইসের যে নিদের্শনা দিয়েছে তাতে বিএটিবিসির ফ্লোর প্রাইস নির্ধারণ করা হয়েছে ৫১৮ টাকা।’
কোম্পানিটি ২০০ শতাংশ বোনাস শেয়ার দেয়ার পাশাপাশি শেয়ার প্রতি ৬০ টাকা নগদ লভ্যাংশ দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এর মধ্যে ৩০ টাকা অন্তর্বর্তীকালীন লভ্যাংশ হিসেবে দেয়া হয়। তবে ফ্লোর প্রাইস সমন্বয়ের ক্ষেত্রে নগদ লভ্যাংশ বিবেচনা করা হয়নি।
বিএটিবিসি ১৯৭৭ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। এরপর সর্বপ্রথম ১৯৮৫ সালে চারটি শেয়ারের বিপরীতে একটি শেয়ার বোনাস ঘোষণা করে।
তারপর ১৯৮৭ সালে দুটি শেয়ারের বিপরীতে একটি, ১৯৯৩ সালে তিনটি শেয়ারের বিপরীতে একটি শেয়ার ঘোষণা করা হয়।
এর ২৫ বছর পর ২০১৮ সালেও কোম্পানিটি ২০০ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণা করে। এর আগ পর্যন্ত কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন ছিল ৬০ কোটি টাকা। লভ্যাংশ ঘোষণার পর মূলধন দাঁড়ায় ১৮০ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন: সিগারেট রপ্তানিতে আগ্রহ বিএটিবিসির, বড় হচ্ছে কারখানা
সর্বশেষ অর্থবছরের হিসাব পর্যালোচনা করে ২০০ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ অনুমোদন হলে কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন দাঁড়াবে ৫৪০ কোটি টাকা।
আগামী ২৮ মার্চ কোম্পানিটির বার্ষিক সাধারণ সভা হবে। সেদিন অনুমোদন হলেই এই লভ্যাংশ চূড়ান্ত হবে। বাংলাদেশে বার্ষিক সাধারণ সভায় বোর্ড প্রস্তাবিত লভ্যাংশ পরিবর্তনের ইতিহাস খুবই কম।
কোম্পানিটি পরিশোধিত মূলধন তিন বছরের মধ্যে নয় গুণ করার পাশাপাশি ব্যবসা বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে। বাংলাদেশ ছাড়িয়ে এখন বিদেশের বাজার দখলের পরিকল্পনা করেছে তারা। সিগারেট রপ্তানির লক্ষ্য নিয়ে ১৯২ কোটি টাকায় কারখানা সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।