1. [email protected] : শেয়ার সংবাদ প্রতিবেদক : শেয়ার সংবাদ প্রতিবেদক
  2. [email protected] : শেয়ারসংবাদ.কম : শেয়ারসংবাদ.কম
  3. [email protected] : Zahir Islam : Zahir Islam
  4. [email protected] : muzahid : muzahid
  5. [email protected] : nayan : nayan
  6. [email protected] : khadija : khadija khadija
শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:২০ পূর্বাহ্ন

বিএসইসি’র নয়া উদ্যোগ

  • আপডেট সময় : রবিবার, ৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২১
bsec

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কাজ করা এক কোটির বেশি প্রবাসী বাংলাদেশির পাঠানো রেমিটেন্স অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। গত বছর করোনা মহামারিতেও রেমিটেন্স প্রবাহ বেড়েছে। এবার পুঁজিবাজারে প্রবাসীদের পাশাপাশি বিদেশি বিনিয়োগ আর্কষণে আগামী ৯-১২ ফেব্রুয়ারি সংযুক্ত আরব আমিরাত ও দুবাইতে ‘ক্যাপিটাল মার্কেটস রোডশো’ করবে বিএসইসি।

‘রাইজিং অব দ্য বেঙ্গাল টাইগার: পটেনশিয়ালস অব বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেটস’ শীর্ষক রোডশোতে নতুন পণ্য চালু এবং সম্ভাবনা বিদেশি বিনিয়োগকারী ও এনআরবিদের কাছে তুলে ধরবে কমিশন। পাশাপাশি ব্রোকারেজ হাউজের প্রথম ডিজিটাল বুথও খোলা হবে দুবাই এ। যা পর্যায়ক্রমে চালু হবে অন্যান্য দেশেও।

মুলত দেশের পুঁজিবাজারে বিদেশি ও নন-রেসিডেন্ট বাংলাদেশিদের (এনআরবি) বিনিয়োগ বাড়াতে উদ্যোগ নিচ্ছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। বিদেশি ও প্রবাসী বাংলাদেশিদের কাছে বিনিয়োগের সম্ভাবনা তুলে ধরে দেশের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে উৎসাহিত করতে রোডশো’ করতে যাচ্ছে বিএসইসি। কমিশনের এই উদ্যোগ এবারই প্রথম।

এদিকে ইক্যুইটি নির্ভরতা কমাতে পুঁজিবাজারে আরও নতুন পণ্য চালু করতে যাচ্ছে কমিশন। বিএসইসি জানিয়েছে, শীঘ্রই তারা নতুন চারটি পণ্য চালু করবে। পণ্যগুলো হচ্ছে- ডেরিভেটিভস, গ্রিন বন্ড, সুকুক ও এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড (ইটিএফ)।

কমিশন মনে করছে, পুঁজিবাজারে এনআরবি ও বিদেশিদের বিনিয়োগ থাকলেও তা খুব কম। কাজেই এখন এই বিনিয়োগ বাড়ানো গেলে পুঁজিবাজারের গভীরতা বৃদ্ধির পাশাপাশি গতিশীলতাও বাড়বে বলে মনে করছেন তারা। বর্তমান পুঁজিবাজারে শেয়ার কেনাবেচায় যে বেনেফিসিয়ারি ওনার্স অ্যাকাউন্ট (বিও) রয়েছে, তার মাত্র ৬ শতাংশ এনআরবি ও বিদেশিদের। আর প্রায় ৯৪ শতাংশই দেশীয় বিনিয়োগকারীর, যার মধ্যে ব্যক্তিগত অ্যকাউন্টই বেশি।

পুঁজিবাজারে বিদেশিদের বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও সহজে বিনিয়োগের জন্য কমিশন সম্প্রতি ডিজিটাল বুথ খোলার বিষয়ে নীতিমালা জারি করেছে। বিদেশে ডিজিটাল বুথ খোলা শুরু হলে এনআরবিসহ বিদেশিরা সহজে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে পারবে। এতে করে পুঁজিবাজারে বিদেশি অর্থপ্রবাহ বাড়বে। বিদেশে অবস্থানরত নন-রেসিডেন্ট বাংলাদেশিদের (এনআরবি) পাঠানো রেমিটেন্স বিনিয়োগে রূপান্তর করতে চায় কমিশন, সেই ক্ষেত্রে পুঁজিবাজার হতে পারে ভালো জায়গা।

কমিশনের এক কর্মকর্তা এ বিষয়ে বলেন, প্রবাসীরা অর্জিত অর্থ পাঠায়, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এ অর্থ নতুন বাড়ি বানিয়ে শেষ করে। কিন্তু সেটা বিনিয়োগে রূপান্তর করা গেলে তাদের আয়ের উৎস বাড়বে। কমিশন সে বিষয়টির উপর জোর দিচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে বিএসইসি চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম বলেন, দুবাই এমন একটা বাণিজ্যিক হাব যেখানে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী, বাংলাদেশের প্রবাসী, বিদেশি বিনিয়োগকারী সবাই আছে। করোনার কারণে অন্য দেশে এখন রোড শো করা যাচ্ছে না। দুবাইয়ে তাই প্রথমেই আয়োজন করছি। সেখানে প্রথম বিদেশের মাটিতে ব্রোকারেজ হাউজের ডিজিটাল বুথ উদ্বোধন করা হবে। এরপর হংকং, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, লন্ডনেও করা হবে।

বিএসইসি চেয়ারম্যান জানান, সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় আর্থিক প্রতিষ্ঠান সুইস ব্যাংকও বাংলাদেশের পুজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য রোড শো করতে চায়। তারা নিজেরা স্পন্সর করবে বলে জানিয়েছে। আগামী মে মাসে এই শো অনুষ্ঠিত হবে বলে চূড়ান্ত হয়েছে।

৯ থেকে ১২ ফেব্রুয়ারি চারদিনের আয়োজনে পুঁজিবাজারের বিভিন্ন দিকের পাশাপাশি শরীয়াহ ভিত্তিক বন্ড সুকুক এবং ইক্যুয়িটি ও ভেঞ্চার ক্যাপিটালে বিনিয়োগের সুযোগ তুলে ধরা হবে ৪টি উপস্থাপনায়। এছাড়া দুবাইয়ের আর্থিকখাতের উর্ধতন কর্মকর্তাদের সাথে একটি বৈঠকের আয়োজন করা হবে।

অর্থনীতি বিশ্লেষক ব্যারিস্টার এ এম মাসুম বলেন, নিটা বা ফরেন কারেন্সি হিসাবে লাভসহ বিনিয়োগের অর্থ ফেরত নেয়া সহজ হওয়ায় পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ বাড়বে, গতি আসবে। জিএআই’এর তথ্যমতে, প্রতিবছর যে ৬৪ হাজার কোটি টাকা পাচারের কথা জানা যায়। তার একটা অংশ বিদেশে ডিজিটাল বুথে লেনদেনের মাধ্যমে দেশে আসবে বলে মনে করেন তিনি।

এদিকে, ভালো ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানকে পুঁজিবাজারমুখী করতে আগামী বাজেটে তালিকাভূক্ত প্রতিষ্ঠানের কর ছাড় সাড়ে ৭ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করার সুপারিশ করা হবে বলেও জানান বিএসইসি চেয়ারম্যান।

বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মাহবুব আলম বলেন, পুঁজিবাজারে বিদেশী ও এনআরবিদের টানতে কমিশনের উদ্যোগ এটিই প্রথম। এর আগে এত বড় আয়োজন করে বিনিয়োগে উৎসাহিত করার কোন উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। কোভিডের কারণে সারা পৃথিবীতে বিনিয়োগের পরিবেশ কমে গেছে কিন্তু বাংলাদেশে বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। রোডশো আয়োজনের মাধ্যমে বিনিয়োগ সম্ভাবনা এবং বিদেশি ও এনআরবিদের বিনিয়োগে উৎসাহিত করা হবে।

বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র রেজাউল করিম বলেন, কোম্পানি তালিকাভুক্ত হওয়ার পর দেখা যায় অনেক সময় টার্নওভার প্রোফিট কমে যায়। এতে বিনিয়োগকারীদের ঝুঁকি বাড়ে। তাই প্রতিষ্ঠানের আইপিও অনুমোদনের সময় সঠিক তথ্য যাচাই করতে এনবিআরে তাদের দেয়া ভ্যাট, আয়কর রিটার্নের কয়েক বছরের তথ্য চাওয়া হবে। বিএসইসি যাচাই বাছাই করে বিভিন্ন রকম সংস্কারের মাধ্যমে পুঁজিবাজারের উন্নয়ন ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে চায়।

এ ধরনের উদ্যোগ এবারই প্রথম: প্রতিষ্ঠার ২৭ বছরে উপনীত হলেও বিদেশি ও প্রবাসী বাংলাদেশিদের পুঁজিবাজারে টানতে প্রথমবারের মতো উদ্যোগ নিচ্ছে বিএসইসি। দেশের বাইরে বাংলাদেশের পুঁজিবাজার সম্পর্কে ব্যাপকভাবে তুলে ধরে বিনেয়াগে উৎসাহিত করার উদ্যোগ আগে নেওয়া হয়নি।
কমিশনের কর্মকর্তারা মনে করছেন, কোভিডের কারণে বিশ্বে বিনিয়োগের পরিবেশ সংকুচিত হয়েছে। কিন্তু অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের অর্থনীতির অবস্থা কিছুটা হলেও ভালো অবস্থানে রয়েছে। নন-রেসডেন্ট বাংলাদেশী ও বিদেশীদের বিনিয়োগে সম্ভাবনা রয়েছে।

২০১৯ সালে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে কৌশলগত অংশীদার হিসাবে বিনিয়োগ করেছে চীনের সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জ ও শেনজেন স্টক এক্সচেঞ্জ। কৌশলগত অংশীদার হিসাবে পাওয়ার পর ডিএসই চীনের দুই স্টক এক্সচেঞ্জ পরিদর্শন করেছে। সাধারণত কোনো কোম্পানি পুঁজিবাজার থেকে মূলধন উত্তোলন করতে রোড শো আয়োজন করে।

তবে বাংলাদেশের পুঁজিবাজার সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা, সম্ভাবনা ও নতুন পণ্য সম্পর্কে অবগত করতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা ‘ক্যাপিটাল মার্কেটস রোডশো’ আয়োজন করবে। কোনো প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম জনসম্মুখে আসার আগে সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে সে প্রতিষ্ঠানের আয়োজিত প্রচারনাই রোডশো। কোনো প্রতিষ্ঠান কার্যক্রম শুরু করার আগে, প্রতিষ্ঠানটিতে বিনিয়োগের সুযোগ ও সম্ভাবনা সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীদের সামনে তুলে ধরেই রোডশো।

নতুন করে যুক্ত হচ্ছে আরো চারটি পণ্য: বর্তমান পুঁজিবাজারে ইক্যুইটি নির্ভরতা বেশি। বন্ড ও মিউচ্যুয়াল পণ্যও রয়েছে। নিরাপদ বিনিয়োগ হিসাবে মিউচ্যুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ হলেও সচল নয় বন্ড মার্কেট। যদিও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পুঁজিবাজারে বন্ড জনপ্রিয় পণ্য। কিন্তু দেশের পুঁজিবাজার থেকে বিভিন্ন বেসরকারি উদ্যোক্তরা বন্ডের মাধ্যমে মূলধন উত্তোলন করলেও সেকেন্ডারি মার্কেটে বন্ড কেনাবেচা হয় না। বন্ড মার্কেটকে সচল ও বন্ডের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদী মূলধন উত্তোলন আরও বাড়াতে নানামুখী চেষ্টা করছে কমিশন।

গত বছর একটি বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানসহ প্রায় ছয় হাজার কোটি টাকার বেশি বন্ড ইস্যুর অনুমোদনও দিয়েছে কমিশন। আরও বেশ কিছু বন্ড পরিকল্পনাধীন রয়েছে। ২০১৯ সালে বিএসইসি সুকুক বিনিয়োগ ও ডেরিভেডিভস নীতি প্রণয়ন করেছে। অল্টারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ডে বন্ডের লেনদেন চালুর বিষয়ে পরিকল্পনা করছে কমিশন।

গ্রিন বন্ড ও এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড (ইটিএফ) নীতি প্রণয়ন নিয়েও কাজ করছে কমিশন। কমিশন মনে করছে, পুঁজিবাজারে একাধিক পণ্য বা পণ্য বৈচিত্র্যায়ন করা গেলে বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি পাবে। বাড়বে বিনিয়োগের পরিমাণও। দীর্ঘমেয়াদী মূলধন উত্তোলনে শিল্পখাতের উদ্যোক্তারাও পুঁজিবাজারমুখী হবে।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

ব্যাংক খাতে আমানত কমেছে

  • ১৭ অক্টোবর ২০২৪