1. [email protected] : শেয়ার সংবাদ প্রতিবেদক : শেয়ার সংবাদ প্রতিবেদক
  2. [email protected] : শেয়ারসংবাদ.কম : শেয়ারসংবাদ.কম
  3. [email protected] : Zahir Islam : Zahir Islam
  4. [email protected] : muzahid : muzahid
  5. [email protected] : nayan : nayan
  6. [email protected] : khadija : khadija khadija
শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:০৩ পূর্বাহ্ন

ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ডের কাছে ৪২ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ দাবি

  • আপডেট সময় : শনিবার, ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২১
western

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড লিমিটেডের বিরুদ্ধে ৪২ কোটি টাকারও বেশি ক্ষতিপূরণ দাবি করে নৌবিভাগে মামলা দায়ের করেছে দুবাইভিত্তিক জাহাজ নির্মাণকারী কোম্পানি আল-রশিদ শিপিং লিমিটেড।

আল-রশিদের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী তিনটি জাহাজ বানিয়ে দেওয়ার কথা ছিল ওয়েস্টার্ন মেরিনের, যেগুলো সংযুক্ত আরব আমিরাতের পতাকা বহন করে সগৌরবে ঘুরে বেড়াবে নানা দেশের সমুদ্রে এবং পৌঁছে দেবে বিভিন্ন পণ্য। কিন্তু তা হয়নি। এর বদলে ২০১৮ সালে সম্পন্ন হওয়া এই চুক্তি শেষ হয়েছে ব্যয়বহুল একটি মামলার বোঝা মাথায় নিয়ে।

নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে জাহাজ ডেলিভারি দিতে না পারায় আল-রশিদ শিপিং কোম্পানি নৌবিভাগের অধীনে প্রায় ৫ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ৪২ কোটি ৩৬ লাখ টাকা) ক্ষতিপূরণ চেয়ে একটি মামলা দায়ের করেছে ওয়েস্টার্ন মেরিনের বিরুদ্ধে।

গত বছরের জুনে হাইকোর্টে দায়ের করা এক পিটিশনে আল-রশিদ শিপিং কোম্পানি জানায়, এই ক্ষতিপূরণের টাকার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে এখনো পর্যন্ত ওয়েস্টার্ন মেরিনকে প্রদানকৃত পারিশ্রমিক, তাদের নিজস্ব ব্যয়, ব্যবসায়িক ক্ষতির পরিমাণ, লভ্যাংশ ও আইনি খরচসমূহ। ইতোমধ্যেই তারা ওয়েস্টার্ন মেরিনের সঙ্গে হওয়া চুক্তি ২০২০ সালের ১৮ মে বাতিল করে দিয়েছে।

বাংলাদেশি জাহাজ কোম্পানিটির সঙ্গে আল-রশিদ শিপইয়ার্ড প্রায় ৫০ কোটি টাকার দুটি চুক্তি করে। চুক্তি অনুযায়ী জাহাজের যন্ত্রপাতি উৎপাদন, নির্মাণ, স্থাপন , আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন একটি ৬৭ মিটারের এএইচটিএস জাহাজ ও দুটি ৬৫০০ টন ডেডওয়েটের ট্যাংকার চালু করা এবং তা ডেলিভারি দেওয়া ছিল ওয়েস্টার্ন মেরিনের কাজ।

প্রথম ধাপের পারিশ্রমিক দেওয়ার ১৮ মাসের মধ্যেই দুবাইয়ের কোম্পানিকে তিনটি জাহাজ ডেলিভারি দেওয়ার কথা থাকলেও ওয়েস্টার্ন মেরিন কোম্পানি তাদের জাহাজ বানানোর কাজই শুরু করতে পারেনি। যদিও তারা আট কোটি টাকারও বেশি পারিশ্রমিক নিয়েছিল।

ওয়েস্টার্ন মেরিনের সঙ্গে আল-রশিদ কোম্পানির চুক্তি সাক্ষর হয় ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর। কিন্তু এরপর থেকে ওয়েস্টার্ন মেরিন শুধু জাহাজের একটি প্লেট তৈরি ছাড়া আর কোনো কাজই করেনি। অন্যদিকে, আল-রশিদের কাছ থেকে তারা ২০১৮ সালের ১৭ অক্টোবর প্রথম ধাপে ৫ লাখ ডলার এবং ২০১৯ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় ধাপে ৩ লাখ চল্লিশ হাজার ডলার নিয়েছে।

দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড সূত্রে জানা যায়, আল-রশিদ কোম্পানির কাছ থেকে পাওয়া অর্থ দিয়ে তারা নিজেদের কর্মীদের বেতন, বোনাস ও অন্যান্য বিল দিয়েছে।

চুক্তি অনুযায়ী প্যানেল বা ব্লক নির্মাণের ২৫ শতাংশ কাজ হবার পরেই ওয়েস্টার্ন মেরিন দ্বিতীয় ধাপের পারিশ্রমিক চাইতে পারবে- এমন কথা থাকলেও তারা বারবার আল-রশিদের কাছে টাকা চেয়ে নিয়েছে বলে পিটিশনে বলা হয়েছে।

এ বিষয়ে আল-রশিদ শিপিং লিমিটেডের আইনজীবী শাহ মুহাম্মদ এজাজ রহমান বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যেই ওয়েস্টার্ন মেরিনকে প্রচুর পরিমাণ টাকা দিয়েছি, তাও তারা কাজ শুরু করেনি। এটি আমাদের দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে এবং আমাদের কঠিন সমস্যায় ফেলে দিয়েছে। গত মাসে হওয়া শুনানিতে হাইকোর্ট ৭ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছেন এবং এরমধ্যে আপসে সমস্যা সমাধানের সুযোগ দিলেও আমরা ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ডের কাছ থেকে কোনো রকম প্রস্তাব পাইনি।’

ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সোহেল হাসানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা যতখানি পারিশ্রমিক পেয়েছি, সে অনুযায়ীই কাজ করেছি। আমরা রড, বিদেশি স্টিল ইত্যাদি কিনেছি এবং ডিজাইন অনুমোদন করিয়েছি। আমাদের ৪০০-৫০০ কর্মীর বেতন-বোনাস, শিপইয়ার্ডের ইলেকট্রিক বিল ইত্যাদি দিতে ওই টাকা আমরা অ্যাডভান্স নিয়েছি, যা পরবর্তী পেমেন্টের সঙ্গে সামঞ্জস্য করা হবে।’

আল-রশিদ শিপইয়ার্ডের পিটিশন : বরাদ্দকৃত অর্থের মধ্যে অনেক অসামঞ্জস্য দেখিয়ে আল-রশিদ কোম্পানি পিটিশনে জানায়, বারবার টাকা দেওয়ার পরও ওয়েস্টার্ন মেরিন জাহাজ তৈরির কাজ শুরু করেনি। এমনকি তারা পরের ধাপের পারিশ্রমিকের সঙ্গে আগের নেওয়া টাকার মিল করে দেবে বলেও জানিয়েছিল।

২০১৮ সাল থেকে এ পর্যন্ত আল-রশিদ তাদেরকে ১০ লাখ ১৩ হাজার ৫৮৭ ডলার দিয়েছে।

দুবাইভিত্তিক এই জাহাজ নির্মাণ কোম্পানি জাহাজের পরিচালনা প্রক্রিয়ার জন্য জাপান থেকে কিছু ইঞ্জিন ও যন্ত্রপাতি ২০১৯ সালের ২৪ এপ্রিল বাংলাদেশে পাঠায়। কিন্তু ওয়েস্টার্ন মেরিন আজও তা গ্রহণ করেনি এবং সেগুলো এখনো চট্টগ্রাম বন্দরে পড়ে রয়েছে।

২০১৯ সালের ২১ মে ওয়েস্টার্ন মেরিন আবারও আল-রশিদের কাছে দ্বিতীয় ধাপে টাকা চায় ট্যাংকারের কাজ শুরু করবে বলে। এর তিন মাস বাদে চট্টগ্রাম বন্দরে যন্ত্রাংশগুলো আসে। সেগুলো বন্দর থেকে ছাড়িয়ে নেবার চার্জ দেখিয়ে তারা আবারও আল-রশিদের কাছে টাকা চায়। ওয়েস্টার্ন মেরিন যখন তার ক্লায়েন্টের কাছে একটি হিসাব পাঠায়, সেখানে বলা ছিল, জাহাজ নির্মাণে ভালো অগ্রগতি দেখাতে পারলে আল-রশিদ তাদের টাকা দেবে। কিন্তু তখন ওয়েস্টার্ন মেরিন কোনো অগ্রগতির প্রমাণ দিতে পারেনি। এরই মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরে পড়ে থাকা যন্ত্রাংশের মেয়াদ ২০২০ সালে শেষ হয়ে যায়। ফলে ওয়েস্টার্ন মেরিনের এই গাফিলতির কারণে আল-রশিদকে এসব পণ্যের বাড়তি খরচ পরিশোধ করতে হয়।

চুক্তি বাতিল : ২০২০ সালের ১৮ মে আল-রশিদ শিপিং কোম্পানি তাদের চুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় এবং ওয়েস্টার্ন মেরিনের কাছে ক্ষতিপূরণ দাবি করে। জাহাজ বানানো কোম্পানিটি এখনো তাদের কোনো জবাব দেয়নি।

এই প্রেক্ষিতে ওয়েস্টার্ন মেরিনের সোহেল রহমান বলেন, ‘আল-রশিদ দুটি ইঞ্জিন পাঠিয়েছিল, কিন্তু আমরা এর জন্যে কোনো টাকা ধরিনি এবং কোনো এলসি-ও (লেটারস অব ক্রেডিট) খুলিনি। এইসব কারণে আমরা বন্দর থেকে পণ্যগুলো ছাড়াতে পারিনি। আল-রশিদ আমাদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পাঠিয়েছিল, কিন্তু এতে কিছুটা সময় লাগে। তার ওপর আমাদের দেশে পণ্য ছাড়ানোর প্রক্রিয়া এমনিতেই ধীরগতিতে চলে; কারণ এর সঙ্গে বন্দর কর্তৃপক্ষের নানা বন্ড জড়িত।’

সোহেল আরও বলেন, ‘প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের পেছনে আমাদের কিছু টাকা খরচ হয়। আমরা বলেছিলাম, এই টাকা পরবর্তী ধাপের পারিশ্রমিকের সঙ্গে সামঞ্জস্য করে দেব। কিন্তু এই পর্যায়ে তারা আদালতে গিয়েছে।’

‘হাইকোর্ট আমাদেরকে নিজেরা বসে এই সমস্যা সমাধানের সময় দিয়েছেন। যদি আমরা একসঙ্গে বসি, হয়তো কোনো সমাধান বেরিয়ে আসবে। সেইসঙ্গে আমরা বন্দর ও শুল্ক ব্যয়ও কমাতে পারব,’ আরও জানান সোহেল।

তবে এতকিছুর পরও ওয়েস্টার্ন মেরিন এখনো আগের মতোই জাহাজ বানাতে চায়।

এ বিষয়ে বাংলাদেশের রপ্তানিমুখী জাহাজ শিল্প সংগঠনের প্রেসিডেন্ট আব্দুল্লাহহিল বারি মন্তব্য করেন, ‘এটি খুবই ন্যাক্কারজনক ঘটনা। কারণ এটি শুধুই ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ডের জন্য নয়, আমাদের দেশের সুনামও নষ্ট করেছে। এর ফলে বাইরের দেশে আমাদের ভাবমূর্তির ওপর খারাপ প্রভাব পড়তে পারে। কেননা, বদনাম খুব দ্রুত ছড়ায়।’

বারি আরও বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে সমাধান করা উচিত, যেন মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে আমাদের বাজার নিশ্চিত রাখা যায়। একবার সেখানে বাজার সৃষ্টি হয়ে গেলে সেখান থেকে আর কেউ আমাদের ফিরিয়ে দিতে পারবে না।’

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

আজিজ পাইপসের এমডি নিয়োগ

  • ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪
  • সূচকের পতনে কমেছে লেনদেন

  • ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪